বগুড়ায় কয়েকদিন ধরে বৃষ্টিপাত হচ্ছে এতে ছাতা মেরামতের কারিগরদের কদর বেড়েছে। বৃষ্টির জন্য মানুষ স্বাভাবিক কাজ করতে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। স্কুল কলেজ ও কোচিং এ যেতেও বৃষ্টির মধ্যে ছাতার প্রয়োজন হয়। যাদের ছাতা নষ্ট হয়ে আছে তারাই নিয়ে আসছেন কারিগরদের কাছে। অতি রৌদ্রময় আবহাওয়া কিংবা বৃষ্টি উভয়ই প্রয়োজন হয় ছাতার। এজন্য মৌসুমী কারিগররাও পথের ধারে বসে পড়ে। বগুড়ায় এই ঐতিহ্যের পেশা ধরে রেখেছে অনেকেই এখনো, আবার অনেক এই পেশা বদল করে যুক্ত হয়েছে অন্য পেশায়, আগের মতো বেশি কাজ নেই বলে। আবার অনেকেই সপ্তাহে একদিন বিভিন্ন উপজেলার হাট-বাজার সহ শহরের রাস্তার পাশে বসে কাজ করে ছাতার কারিগররা। বগুড়ায় গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির কারণে ছাতা কারিগরদের ব্যস্ততা বেড়েছে কয়েকগুণ। মঙ্গলবার ১ অক্টোবর বগুড়া শহরের কাঁঠালতলা ফুটপাতে বসে থাকা ছাতার কারিগর জহুরুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি জানান, এই পেশার সাথে ৪২ বছর ধরে যুক্ত আছে তিনি নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে, এখন বৃষ্টি হচ্ছে বলে মোটামুটি কাজ হচ্ছে। বৃষ্টির দিনে ছাতা মেরামতের কাজ একটু বেশি হয়। তবে অন্য সময় তেমন একটা কাজ থাকে না। বর্তমানে প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়ে যাওয়ায় ছাতার কাপড়, হাতল, স্প্রিং প্রভূতি জিনিসপত্র কিনতে হচ্ছে চড়া দামে। সরবরাহ রয়েছে অনেক কম। তারপরেও প্রতিদিন ২২থেকে ২৬টি ছাতা মেরামত করে ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করা যায় বলে জানান তিনি। ছাতাপট্রির গলিতে বসে থাকা ছাতার কারিগর মনির হোসেন,লয়া মিয়া,খোরশেদ আলম জানান,এখন কিছু কাজ আছে। তবে অন্য সময় বসেই থাকতে হয়।বৃষ্টি হলে ছাতা মেরামতের মোটামুটি কাজকর্ম হয়। তবে বছরের অন্য দিনগুলোতে সেরকম কাজ হয় না। এ সময়টাতে কাজের চাপ বেড়ে যায় বহুগুণ। বছরের অন্যান মৌসুমে তেমন কোন কাজ থাকেনা। শুধু মাত্র বর্ষার অপেক্ষায় থাকে। বর্ষা এলেই বাড়ি থেকে যন্ত্রপাতি নিয়ে বেড়িয়ে পরে ছাতা মেরামতের জন্য। আর বর্ষা এলেই কাজ বেড়ে যায় কারিগরদের। পাশেই কয়েকটি পুরোনো ছাতা হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন মিলন হোসেন নামে এক ব্যক্তি,একসঙ্গে এতোগুলো পুরান ছাতার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বৃষ্টির দিনে ছাতা ঠিক না থাকলে নিজেদের স্বাভাবিক কাজ করতে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। এছাড়া ছেলে মেয়েদের স্কুল-কলেজ ও কোচিংয়ে যেতেও বৃষ্টির মধ্যে ছাতার প্রয়োজন হয়। বাসায় কয়েকটি ছাতা নষ্ট হয়ে পড়ে ছিল, আজ সময় পেলাম তাই এগুলো মেরামত করতে নিয়ে এসেছি। শহরের নাটাইপাড়া থেকে ছাতা মেরামত করতে আসা আব্দুর রহিম বলেন, একটি ভালো ছাতা ক্রয় করতে ২৫০-৫০০ টাকা প্রয়োজন। এর চেয়ে পুরোনো ছাতাটি মেরামত করে নিলেই চলে। এখনকার যে ছাতা, সবে মাত্র দুইমাস হল ছাতাটা কিনেছি, এখনই মেরামত করতে আসা লাগল। ছাতা মেরামত করাতে আসা সরকারি শাহ্ সুলতান কলেজের শিক্ষার্থী রবিউল ইসলাম বলেন, চারটি ছাতা নষ্ট হয়ে ঘরে পড়েছিল। বৃষ্টির সময় ছাতার দরকার হয়। তাই ঠিক করতে এসেছি।