লালমনিরহাটে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে কলেজ ছাত্রদের চোখ উৎপাটনকারী সেই আলমগীর হোসেনের জামিন বাতিল করে জেলে পাঠিয়েছেন আদালত। রোববার বিকালে লালমনিরহাট জেলা ও দায়রা জজ আবিদ আলী এ আদেশ দেন। আলগমীর হোসেন উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেযেছিলেন। কলেজছাত্রের চোখ উৎ’পাটনকারী আলমগীর হোসেন (৩০) পাটগ্রাম উপজেলার বাউড়া ইউনিয়নের নবীনগর গ্রামের সাদেক আলীর ছেলে। এক চোখ হারানো কলেজছাত্র আনিসুর রহমান (১৮) বলেন, ‘আমার একটি চোখ কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আমার অপর চোখটিও কেড়ে নেওয়ার হুমকি দিতো আলমগীর ও তার লোকজন।’ “আলমগীরের নেতৃত্বে গ্রামের একদল উশৃংখল জোরপূর্বক আমাদের জমি দখল করতে আসেন। তারা আমার বাবা-মাকে বেদম মার ডাং করে আহত করেন। আমি বাবা ওমাকে রক্ষার চেষ্টা করলে আলমগীর ও তার লোকজন আমাকে পিটিয়ে আহত করে ধারাল ছুরি আমার একটি চোখ উৎপাটন করেন। চোখ হারানো কলেজছাত্র আনিসুর রহমান পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা ইউনিয়নের নবীনগর গ্রামের মফিজুল ইসলাম ও আনজু আরা বেগমের ছেলে। তিনি পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা পুনম চাঁদ ভুতুরিয়া কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী। পুলিশ জানায়, ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর পাটগ্রাম উপজেলার নবীনগর গ্রামে জমি নিয়ে বিরোধের ঘটনায় কলেজ ছাত্রের চোখ উৎপাটনের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কলেজ ছাত্রের বাবা মফিজুল ইসলাম বাদী হয়ে ২০২৩ সালের ২১ নভেম্বর পাটগ্রাম থানায় ১০ জনের নাম উল্লেখ করে ১৫-১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ মামলায় পুলিশ চার্জশিট আদালতে দাখিল করেছে। কলেজছাত্রের বাবা মফিজুল ইসলাম বলেন, তিনি ২০১৩ সালে ৯ শতাংশ জমি কিনে তাতে ফসল চাষ করে আসছিলেন। প্রতিপক্ষরা হঠাৎ জমির মালিকানা দাবি করে জমি দখল করে নেয়। ’আমি আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে হয়তো জমি ফিরে পাব কিন্তু আমার ছেলের চোখ আর ফিরে পাব না! উচ্চ আদালত থেকে জামিনে থাকা আলমগীর হোসেন ও তার লোকজনের হুমকিতে আমরা দিশেহারা হয়ে পড়েছিলাম। বিজ্ঞ আদালত আলমগীরের জামিন বাতিল করে তাকে জেলে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়ায় আমরা স্বস্তি পেযেছি। এখন আর আমাদের কেউ হুমকি দিবে না। জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবি অ্যাডভোকেট মশিউর রহমান জানান, জেলা ও দায়রা জজ আবিদ আলী কলেজছাত্রের চোখ উৎপাটনকারী আসামী আলমগীরের জামিন বাতিল করে তাকে জেলে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। চোখ হারানো কলেজছাত্র ও পরিবার আদালত থেকে ন্যায় বিচার পাবেন।