জাতীয় নিরাপদ সড়ত দিবস ২০২৪ উপলক্ষে মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা ও সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে আলোকপাত করার নিমিত্তে মঙ্গলবার নিরাপদ সড়ক চাই(নিসচা) এর উদ্যোগে ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সড়ক দুর্ঘটনামুক্ত বাংলাদেশ গড়তে ‘সড়ক নিরাপত্তা আইন’ নামে নতুন একটি আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন, নিসচার চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ২০১৮ সালে শিক্ষার্থী আন্দোলনের ফলে তৎকালীন সরকার ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ নামে একটি আইন পাস করলেও আইনটি আজও পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি এবং আইনটিতে সড়ক ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তার বিষয়টি উপেক্ষিত। আমরা বারবার সরকারকে অনুরোধ করেছিলাম আইনটির নামকরণ ‘সড়ক পরিবহন ও সড়ক নিরাপত্তা আইন’ করা হোক। দুঃখের বিষয় দুষ্টচক্রের চাপে শেষ পর্যন্ত নিরাপত্তা কথাটি রাখা হয়নি। ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, আমার সংগঠন আজ আপনাদের মাধ্যমে বর্তমান সরকারের কাছে ‘সড়ক নিরাপত্তা আইন’ নামে একটি নতুন আইন প্রণয়নের জোর দাবি জানাচ্ছি। যে আইনে মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। এছাড়া দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘রোড সেফটি ইউনিট’ গঠন করতে হবে। এতে করে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম শিক্ষা জীবন থেকে নিজেরদের জীবন এবং অন্যদের জীবন বাঁচানোর কৌশল রপ্ত করতে পারে। ‘রোড সেফটি অথরিটি’ গঠন করা আমাদের আরো একটি দাবি। সড়ক সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়ের সচিবদের সমন্বয়ে উচ্চ পর্যায়ের এই অথরিটি গঠন হবে যারা রোডক্রাশ মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে যা যা করণীয় তা বাস্তবায়ন করবে। আক্ষেপ করে নিসচার চেয়ারম্যান বলেন, সড়ককে নিরাপদ করার দায়িত্ব সরকারের। আমরা হলাম স্টেকহোল্ডার। অতীতে যখন যে সরকার দেশ পরিচালনা করেছে, স্বভাবতই সড়ক নিরাপত্তার দাবি দাওয়া নিয়ে তাদের কাছে যেতে হয়েছে, তার মানে এই নয় যে, আমি বা আমার সংগঠন সেই সরকারের অংশ। শুধু আমাদের আন্দোলনকে দমিয়ে রাখার জন্য একটি অশুভ চক্র সু-কৌশলে রাজনৈতিক ট্যাগ লাগিয়ে দিয়েছে। যখন যে সরকার ক্ষমতায় এসেছে আমাকে বানিয়েছে তার বিরোধী দলের লোক। অত্যন্ত পরিতাপের সাথে বলতে হচ্ছে, বর্তমান অর্ন্তর্বতী সরকারকেও কান ভারী করা হয়েছে এই বলে যে, আমি পতিত সরকারের লোক। দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে বলতে হচ্ছে, ৩১ বছর ধরে দেশের মানুষের কল্যাণে নিরলস কাজ করে যাওয়া সংগঠনটিকে সকল সরকারের কাছে অবহেলিত ও নিগৃহিত হতে হয়েছে। জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস-২০২৪ পালন উপলক্ষ্যে অক্টোবর মাসব্যাপী সংগঠনের পক্ষে কর্মসূচি ঘোষণা করেন ইলিয়াস কাঞ্চন। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, ফ্রি হেলমেট বিতরণ, সড়কে যানবাহনে চলাচলের জন্য করণীয় শীর্ষক সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সড়ক ব্যবহারে সচেতন করতে ‘শিক্ষার্থী’ সমাবেশ, যারা স্বেচ্ছাশ্রম দিতে চায় এমন সড়ক যোদ্ধাদের মাঝে সেফটি জ্যাকেট বিতরণ, মোটর শ্রমিকদের মাঝে সেফটি জ্যাকেট বিতরণ, রাস্তায় যানবাহন চলাচলে এবং পথচারী পারাপারে ‘স্পিড ব্রেকার’ ও ‘জেব্রা ক্রসিংয়ে রং করণ’, যানজট নিরসনে ট্রাফিক ক্যাম্পেইন, সড়ক নিরাপত্তা ইস্যুতে সংবাদ সম্মেলন, শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ প্রদান, সড়ক নিরাপত্তা সংক্রান্ত শিক্ষার্থী প্রশিক্ষণ কর্মশালা, শিক্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালা, অভিভাবক সমাবেশ, মা সমাবেশ, চালক প্রশিক্ষণ কর্মশালা, গোলটেবিল বৈঠক, র্যালি ও সমাবেশ, স্থানীয় প্রশাসনের সাথে মতবিনিময়, সড়কের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে জনসচেতনতামূলক সাইন বোর্ড স্থাপন, অবৈধ রেল ক্রসিংয়ে সতর্কতামূলক সাইন বোর্ড স্থাপন, মহীয়সী নারী মরহুমা জাহানারা কাঞ্চনের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া মাহফিলের আয়োজন।