পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের আসন্ন বাংলাদেশ সফর নিঃসন্দেহে দীর্ঘস্থায়ী দ্বিপাক্ষিক অংশীদারিত্বকে দৃঢ় করবে।
গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় ঢাকায় সৌদি দূতাবাস আয়োজিত সৌদি আরবের ৯৪তম জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তৌহিদ হোসেন বলেন, আমরা অধীর আগ্রহে যুবরাজের সফরের অপেক্ষা করছি। তার সফরের মাধ্যমে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা দুই দেশের মধ্যে গভীর বন্ধনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, ১৯৭৫ সালে আনুষ্ঠানিক ভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পর থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অংশীদারিত্বের বিকাশ ঘটেছে। দুই দেশ আগামী বছর কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা একটি কৌশলগত অংশীদারিত্ব গঠনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বে সৌদি অর্থনীতিকে বৈচিত্র্যময় এবং টেকসই করার লক্ষ্যে একটি রূপান্তরমূলক পরিকল্পনা সৌদি আরবের ভিশন-২০৩০ এর প্রশংসা করেন তৌহিদ।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা টেকসই অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের জন্য তার অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা ভাগ করে এই উচ্চাভিলাষী রূপকল্পে অবদান রাখতে বাংলাদেশের আকাঙ্খার কথা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশি আধা-দক্ষ ও অদক্ষ প্রায় ৩০ লাখ শ্রমিক নিয়োগের জন্য সৌদি আরবের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, এসব শ্রমিক উভয় দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জোর দিয়ে বলেন, সৌদি আরব বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রায় একটি অবিচল অংশীদার। সৌদি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্ট (এসএফডি) বছরের পর বছর আমাদের বিভিন্ন অবকাঠামো প্রকল্পে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
তিনি আরও আলোকপাত করেছেন, সৌদি বিনিয়োগকারীদের রসদ, অবকাঠামো এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি মতো খাতে ক্রমবর্ধমান আগ্রহের কারণে দুই দেশের মধ্যে দ্বিমুখী বাণিজ্য সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।
উপদেষ্টা পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল পরিচালনায় রেড সি গেটওয়ে টার্মিনালের সাম্প্রতিক বিনিয়োগ উদ্যোগের উদাহরণ হিসেবে বাংলাদেশের লজিস্টিক্যাল সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সৌদি আরবের প্রতিশ্রুতির ওপর জোর দেন।
তিনি সৌদি কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের সুযোগ খুঁজে বের করার জন্য আমন্ত্রণ জানান। এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে অবকাঠামো, বিদ্যুৎ, পর্যটন এবং সেবা খাতের প্রতি উল্লেখযোগ্য সম্ভাবনার প্রস্তাব দেন।
তৌহিদ আরও উল্লেখ করেছেন, উভয় দেশই বিশেষ করে শ্রম অভিবাসন, বিনিয়োগ, অবকাঠামো, শিক্ষা, কৃষি এবং পরিবেশে সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করেছে।
তিনি বলেন, ‘আগামীর দিকে তাকিয়ে আমরা আমাদের সম্পর্কের ক্রমবর্ধমান গুরুত্বকে প্রতিফলিত করে যৌথ কমিশনকে মন্ত্রী পর্যায়ে উন্নীত করার পরিকল্পনা করছি।’ এই পদক্ষেপটি নতুন সুযোগ উদঘাটিত করবে এবং বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সহযোগিতা বাড়ানোসহ আন্তর্জাতিক ফোরামে একে অপরকে সমর্থন দেবে।
বাংলাদেশে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ঈসা ইউসুফ ঈসা আল দুহাইলান অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন।
সূত্র : বাসস।