শিক্ষক কর্মচারিদের বেতন বোনাস না দেওয়া, নিয়োগ বানিজ্য, শিক্ষার্থীদের মানসিক নির্যাতন, আধিপত্র বিস্তারের অভিযোগে সহ নানা অভিযোগ উঠেছে মেহেরপুর কবি নজরুল শিক্ষামঞ্জিল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সানজিদা ইসলামের বিরুদ্ধে। এসকল অনিয়মের অভিযোগে শিক্ষক শিক্ষার্থীরা ফুসে উঠেছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষাথীরা অভিযোগ, ২০১৮ সালে প্রধান শিক্ষক সানজিদা ইসলাম জনপ্রশাসন মন্ত্রীর হাত ধরে ২০ লক্ষ টাকা উৎকচ দিয়ে যোগদান করে। তিনি যোগ দানের পর চারজন কর্মচারিকে বিনা কারনে বাদ দেন। পরে নিজের প্রভাব খাটিয়ে জন প্রতি ৬/ ৭ লক্ষ টাকা নিয়ে ঐ পদে লোক নিয়োগ দেন। এছাড়া একাধিক জনের কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার নামে টাকা নিয়েছেন। বিদ্যালয়ের ১শ১৭ বিঘা আবাদি জমি, পুকুর,লিচু বাগান ও শিক্ষার্থীদের বেতন থেকে সর্বমোট ২২ লক্ষ টাকা আয় হলেও বিদ্যালয়ের কর্মচারি শিক্ষকদের মাসিক ৫৬ হাজার টাকা বেতন জুটছেনা। ১২ মাসের বেতন ও ৪ টা ঈদ বোনাস না পেয়ে মানবতর জীবন যাপন করছে শিক্ষক কর্মচারিরা। বিদ্যালরে নবনির্মিত ভবন , সিমানা প্রাচির নির্মানের জন্য ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে তিনি দুটি এসি নিজের জন্য দামী চেয়ার সহ বিভিন্ন উপঢকন দিতে বাধ্য করেছেন। বিদ্যালয়ের দরিদ্র শিক্ষার্থিরা বিনা বেতন ও আর্ধ বেতনের পড়ার সুযোগ পাচ্ছেনা। কম্পিউটার ল্যাব, সাইন্স ল্যাব শিক্ষর্থীদের ব্যবহার করতে না দিয়ে অন্য প্রতিষ্ঠানকে ভাড়া দিয়েছেন। বিদ্যালয়ের ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর ও নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধনের নামে ৬ লক্ষ টাকা খরচ করেছেন তিনি। এসকল বিষয়ের প্রতিবাদ করলে বিদ্যালয়ে পুলিশ নিয়ে এসে শিক্ষক শিক্ষার্থিদের পুলিশি হয়রানি করান তিনি। বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর শিক্ষার্থী শুভ মোহাম্মদ জানান, আমাদের সাইন্স ল্যাবের যন্ত্র পাতি আছে তা ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। আমাদের কোনদিন ঐ ল্যাবে ক্লাস করারও সুযোগ হয়নি। আইসিটি ল্যাব আমাদের ব্যবহার করতে না দিয়ে বাইরের প্রতিষ্ঠানকে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। অপর ছাত্র বলেন আমাদের নতুন ভোবন ফেলে রেখে পুরাত জনজির্ণ ভোবনে কা¬স করানো হয়। গরমে মাসা কামড় খেয়ে ওখানে ক্লাস করতে হচ্ছে। বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক সেলিনা পারভিন বলেন, প্রধান শিক্ষক তার প্রভাব খাটানোর জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রীকে চার বার বিদ্যালয়ে নিয়ে আসেন। এতে বিদ্যালয়ের ৬ লক্ষ টাকা ঘাটতি হয়। এর পর থেকে আমরা ১২ মাসের বেতন ও ৪ টি ঈদ বোনাস পাইনি। বিদ্যালয়ের ১শ ১৫ বিঘা জমির আয়ের টাকা তিনি একেক বার একেক একাউন্টে রেখে দিচ্ছেন, আমাদের টাকা দিচ্ছেনা।এছাড়া তিনি ভাউচার বিহীন টাকা তুলে টাকা আত্মসাতও করেছেন। চারজন কর্মচারি বাদ দিয়ে নতুন করে নিয়োগ দিয়ে প্রধান শিক্ষক ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী টাকা ভাগা ভাগি করে নিয়েছেন। বিদ্যালয়ের চাকুরি চ্যুত অফিস সহায়ক তৌফিকুজ্জামান বলেন, আমাকে চুরির অপবাদ দিয়ে বিদ্যালয় থেকে বের করে দিয়েছে। এ নিয়ে তিন যশোর বোর্ডে লিখিত অভিযোগ দিলে যশোর বোর্ড আরবিটিশনে আমার পক্ষে রায় দিয়ে স্কুলে যোগদানের অনুমতি দেয়। কিন্তু সেখানে আমাকে যোগ দান করতে না দিয়ে ৬ লক্ষ টাকা নিয়ে অন্যজনকে নিয়োগ দিয়েছে। প্রধান শিক্ষক সানজিদা ইসলাম বলেন. করোনাকালিন সময়ে স্কুলের আয় না হওয়ায় শিক্ষকদেরে বেতন দেওয়া সম্ভব হয়নি। নিয়গের বিষয়ে মন্ত্রী (জনপ্রশাসন মন্ত্রী) সভাপতি ছিলেন, উনি যা বলেছেন আমি তাই করেছি। মন্ত্রীর বাইরে আমার কোন কাজ করার ক্ষমতা ছিলো না। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্বাস উদ্দিন জানান, অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত হবে। তদন্তে যদি কেউ দোষি প্রমানিত হয় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।