চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে বেড়েছে ডায়রিয়া রোগী, সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে শিশু ওয়ার্ডেও, ১ সপ্তাহে ভর্তি ৩৪৬ জন। আবহাওয়া জনিত কারণে আক্রান্ত হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে বেড়েছে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা। এর মধ্যে অধিকাংশই শিশু রোগী। চিকিৎসক ও নার্সরা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে শিশু ওয়ার্ডেও। গত ১ সপ্তাহে সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ও শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছে মোট ৩৪৬ জন রোগী। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছে ১৩২ জন রোগী, এদের মধ্যে অধিকাংশই হলো শিশু। এবং শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছে ২১৪ জন রোগী। শিশু ওয়ার্ডের অধিকাংশই ভর্তি হয়েছে ঠান্ডা, কাশি ও জ্বর জনিত সমস্যা নিয়ে। এছাড়া প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত হাসপাতালের বহিঃবিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছে প্রায় দুই শতাধিকেরও অধিক রোগী। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ড সুত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে অর্থাৎ ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টা পর্যন্ত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ১৩২ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এবং ছুটি পেয়েছেন ১০৪ জন রোগী। ৩০ তারিখ বিকাল ৫টা পর্যন্ত ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলো ৪০ জনের অধিক রোগী। এরমধ্যে অধিকাংশই ছিলো শিশু। এবং শিশু ওয়ার্ড সুত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে অর্থাৎ ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টা পর্যন্ত ২১৪ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এবং ছুটি পেয়েছেন ১৫৭ জন রোগী। ৩০ তারিখ বিকাল ৫টা পর্যন্ত শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলো ৯০ জনের অধিক রোগী। এরমধ্যে অধিকাংশই হলো ঠান্ডা, কাশি ও জ্বর জনিত সমস্যা নিয়ে। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে বৈদ্যনাথ পুরের ছবিনা খাতুন নামে এক শিশু রোগীর মা বলেন, আমার ৮ মাসের ছেলে গত তিন দিন আগে ঠান্ডা – কাশি জনিত সমস্যা নিয়ে শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করিয়েছি। রোগীর এতো চাপ যে এখানে থাকতেই সমস্যা হয়ে যাচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা এলাকার পপি খাতুন নামের আরেক শিশুর মা বলেন , গত দুদিন থেকে পাতলা মল আর বমি হচ্ছিল মেয়ের। গত পরশু সকালে হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি করে। হাসপাতাল থেকে খাওয়ার স্যালাইনসহ যাবতীয় ওষুধ দিলেও স্যালাইন সেট সাপ্লাই নেই বলে জানিয়ে দিলে বাইরে থেকে কিনে আনতে হচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার বলেন, হাসপাতালে কলেরা স্যালাইন সহ যাবতীয় ঔষধ সাপ্লাই আছে। তবে স্যালাইন সেট ও ভিসেট নেই , সেটা দুই একদিনের মধ্যেই চলে আসবে। তিনি আরে বলেন, ইদানিং ফুড পয়জনিং এর কারণে এবং বর্তমানে ঠান্ডা গরমের জন্য (আবহাওয়া পরিবর্তন) শিশুরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এর মধ্যে ঠান্ডা জ্বর জনিত সমস্যার রোগী এবং ডায়রিয়ার রোগী বেশি। কোন মতেই বাসি খাবার খাওয়া যাবেনা। যতটা সম্ভব বাইরের খাবার এড়িয়ে চলা ভাল৷ শিশুদের প্রতি বেশি যত্ন নিতে হবে। বাসি খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে, রাস্তার ধারের অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার প্রতি মানুষের সচেতনতা না বাড়লে ডায়রিয়া মোকাবিলা করা কঠিন হয়ে যাবে। এছাড়া গরমে অনেকের মাঝে পানিশূন্যতাও তৈরি হয়ে থাকে। এজন্য প্রয়োজন গরমে বেশি বেশি বিশুদ্ধ পানি পান করা, ফলমূলের শরবত পান করতে হবে। শিশুদের উন্নত মানের সুজি খাওয়াতে হবে। খিচুড়ি খাওয়ানোর ক্ষেত্রেও সতর্ক হতে হবে। বাচ্চাদের বুকের দুধ খাওয়ানো চালিয়ে যেতে হবে। এবং যতটুকু সম্ভব বাচ্চাদের কে সতর্ক রাখতে হবে।