প্রথম যৌবনে (১৭-২৭ বছর বয়সে) সবথেকে মারাত্মক হল প্রেমে পড়া- হোক সেটা বালিকার প্রেম, মাদকের প্রেম, বাইকের প্রেম বা রাজনীতির প্রেম। প্রেমাসক্তি যদি পরিমিত হয় তবে ভয়ের খুব বেশি কারন নাই বরং সেটা অনেকটাই উপকারী, এতে করে জীবনে অনেক অমূল্য অভিজ্ঞতা অর্জন করা যায়। তবে এই প্রেম যদি হয় অদম্য, দুর্দান্ত, মরিয়া ও অন্ধ প্রকৃতির তাহলে সর্বনাশ অনিবার্য। যেমন বালিকার জন্য অন্ধ প্রেম থেকে মাদক বা পাড়ার কিশোর গ্যাং এ জড়িয়ে পড়া; বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে বেশ কয়েকজনকে দেখেছি শুধু গাঁজার প্রেমে পড়ার কারনে ৩ বছর ১ম বর্ষে থেকে অবশেষে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিদায় নিতে বাধ্য হয়েছে। আর বাইক বা ড্রাইভিং এর প্রেমে পড়ে আমাদের খুব কাছের মানুষের মৃত্যুর সাক্ষী কমবেশি আমরা সকলেই। এবার আসা যাক রাজনীতির প্রতি অন্ধপ্রেম কেমন হতে পারে?
আজকাল ফেসবুকের কল্যাণে প্রায়ই দেখি আমার অনেক সাবেক ছাত্র যারা এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয়, হল, অনুষদ এমনকি বিভাগের কমিটিতে পদ পেয়ে সেটি ফলাও করে ফেসবুকে শেয়ার দিয়ে জানান দিচ্ছে যে সে কতটুকু সফল এতটুকু বয়সেই। অনেক জুনিয়র চেলা আবার বুকেট নিয়ে হাজির ভাইয়ের কাছে, অভিনন্দন জানিয়ে ছবি তোলা ও ভাইকে ট্যাগ করে ফেবু পোষ্ট। আমার আজকের এই লেখা মূলত তোমাদের নিয়েই।
অনেকেই ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় মুচকি হাসি দিয়ে আমাকে বলে যে স্যার যাই বলেন না কেন, আওয়ামীলীগ আরেক টার্ম ক্ষমতায় আসবেই, নেত্রী সেভাবেই সেটআপ দিয়ে রাখছে। তোমাদের কাছে আমার আজকে কয়েকটি প্রশ্নের জবাব চাওয়ার আছে, তবে আমাকে লিখিত আকারে জবাব না দিলেও চলবে; শুধু নিজেকে নিজের জবাব গুলো দিও। আমি তর্কের খাতিরে ধরেই নিচ্ছি যে তোমার নেত্রী আরও ১ টার্ম নয়, ২-৩ টার্ম বিনা বাধায় ক্ষমতায় থাকবে। তারপর প্রকৃতির নিয়মেই একদিন ক্ষমতা থেকে বাদ পড়বেই। এই পর্যন্ত যারা একমত তারা আগে বাড়ো। তারপর…
১/ হঠাৎ কোন একদিন আওয়ামীলীগের কোন এক সমাবেশে যোগ দিতে যেয়ে তোমার বাবা (যেহেতু তুমি ছাত্রলীগের একনিষ্ঠ কর্মী তাই ধরে নিলাম তোমার বাবাও আওয়ামীলীগের সাথে যুক্ত) বিরোধী পক্ষের নৃশংস আক্রমণে রাস্তাতেই মারা গেল। বিরোধী পক্ষের কর্মীরা তবুও ক্ষান্ত হয়নি, তোমার বাবার মৃত লাশের উপরে চড়ে তারা নাচতে ও পৈশাচিক আনন্দ করতে শুরু করল (লগি বৈঠা কায়দা আর কি) আর এই দৃশ্য তুমি টিভির সামনে বসে দেখছ তোমার বাসার বাকি সদস্যদের সাথে নিয়ে। তোমার মনে তেমন কোন খারাপ লাগার অনুভূতি তৈরি হয়নি, কারন মানুষকে তো একদিন মরতেই হবে তাই আওয়ামীলীগ করে প্রান দেওয়া তো আলবৎ পুন্যের কাজ। ঐ ঘটনায় তুমি কারো কাছে কোন বিচার চাওনা।
২/ তোমার যেই ভাই তোমার মত অতটা মেধাবী না বলে খুব ছোট খাটো একটা জব করে, হঠাৎ তখনকার ক্ষমতাসীন ছাত্র সংঘটনের কয়েকজন কর্মী তোমার ভাইকে দিনে দুপুরে রাস্তায় চাপাতি দিয়ে ক্রমাগত কোপাচ্ছে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেবার জন্য আর তোমার ভাই প্রানভয়ে দৌড়ে পালিয়ে বাঁচার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে (বিশ্বজিৎ কায়দায়), অবশেষে তোমার ভাই মারা গেল আর এই পুরো বিষয়টা তুমি টিভিতে লাইভ দেখছো। তুমি বেশ একটু মুচকি হাসি দিলে যে যাইহোক ক্ষমতাসীনরা তোমাদের দেখানো কৌশল ই অনুসরন করেছে, তাদের নিজেদের কোন কৌশল নেই। তুমি বা তোমার পরিবারের কেউ এই ঘটনায় মামলা করনি কারন আওয়ামীলীগ কখনও বিরোধীদের কাছে বিচার চেয়ে ছোট হতে পারেনা। তবে পুলিশ একটা ফরমায়েশি মামলা করেছে তোমার ভাইকে হত্যার ঘটনায়, যদিও তুমি টিভিতে খুব স্পষ্ট ভাবেই দেখেছো ঐ হামলাকারীদের তবে আদালত বলছে যে এই হত্যা মামলায় কোন সলিড সাক্ষী বা প্রমান নেই।
৩/ তোমার ছোট ভাই যে তোমার থেকে ৭/৮ বছরের ছোট সেও এতদিনে বুয়েট বা ঢাবিতে ভর্তি হয়েছে, রাজনীতিতে তার তেমন কোন আগ্রহ নেই তবে সে দেশকে নিয়ে বেশ ভাবে। একদিন পাকিস্থানের কোন এক অন্যায্য কাজের সমালোচনা করে ফেবুতে ২-৪ লাইন লিখল, কয়েকদিন পর এই লেখার কারনে হলের বড় ভাইরা ওকে রুমে ডেকে নিয়ে সারারাত ধরে পিটিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলল (যে বর্তমানে তোমার খুব আদরের আর খুনসুটির মানুষ, যার জন্য চকলেট বা আইস্ক্রিম না নিয়ে তুমি বাসায় ফেরনা)। পরের দিন তুমি আর তোমার বাবা মিলে বেশ খোশ মেজাজেই মর্গের গেট থেকে ওর ছিন্নভিন্ন লাশটা বুঝে নিলে, কারন তুমি বেশ ভালভাবেই জানো যে রাজনীতি করলে ওরম একটু আধটু করেই থাকে ছেলেপেলেরা আর এসব কিছু সমর্থন করেই তুমিও একসময় ছাত্রলীগের রাজনীতি করেছ, বেশ টাকা পয়সা কামিয়েছ, ছাত্রী হলেও তোমার বেশ কিছু ঘনিস্ট কর্মী ছিল যারা তোমাকে খুব ভালভাবেই মেইন টেইন করত।
৪/ তোমার বড়বোন, স্বামী আর ৪ বাচ্চা নিয়ে যার বেশ সুখের সংসার; তুমি তার বাড়িতে গেলে সে পোলাও, দেশী মুরগী আর বড় রুই মাছ রান্না করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে আর এই সময়টুকু তুমি ৪ ভাগিনা- ভাগিনির সাথে আদর আর দুষ্টুমি করে সময় কাটাও। তো তখনকার সরকারের আমলে এক ফরমায়েশি নির্বাচনে তোমার সেই বোন নৌকা মার্কায় ভোট দেবার কারনে তাকে কিছু সরকার সমর্থকরা মিলে গণ ধর্ষণ করল এবং/ অথবা তোমার ছোট বোন যাকে অল্প কিছুদিন আগেই বেশ ভাল ছেলে (বিসিএস ক্যাডার) দেখে বিয়ে দিয়েছ, সে তার স্বামীর সাথে ঘুরতে যেয়ে সরকারী ছাত্র সংগঠনের কিছু নেতা কর্মীদের কাছে গণ ধর্ষণের স্বীকার হল, ঐ নেতা কর্মীরা ইয়াবা আসক্ত থাকায় তোমার ছোট বোনের অবস্থা আসঙ্কাজনক, বাচতেও পারে নাও পারে। এটা তোমার কাছে খুব স্বাভাবিক কারন এটাই এই সমাজের নিয়ম আর ভাল মন্দ সব মিলিয়েই তো মানুষের জীবন।
৫/ তুমি যেহেতু আওয়ামীলীগের একজন তুখোড়, ত্যাগি ও ডাকসাইটে নেতা হয়ে উঠেছ এতদিনে আর সরকার কোনভাবেই তোমার সাথে পেরে না উঠে তোমাকে গুম করে আয়নাঘরে বন্দি করে রাখল (অথবা পাকিস্তানে বর্ডার পুশ করলো, এখন তুমি পাকিস্তানের জেলে বন্দি), দিনের পর দিন, মাসের পর মাস বছরের পর বছর তুমি সেখানে বন্দি। তোমার পরিবারে কেউই জানেনা যে তুমি বেঁচে আছো না মারা গেছো, বেঁচে থাকলে কোথায় আর কিভাবে আছো? তুমি গুম হওয়ার সময় তোমার বউ প্রেগন্যান্ট ছিল, সেই বাচ্চা এখন স্কুলে যায়- বাবাকে দেখার তার ভীষণ আকুতি, বিভিন্ন সভা সমাবেশে সে তোমার জন্য কান্না করে ভাসিয়ে ফেলে, তার কান্না দেখে উপস্থিত অনেকেই ফুপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকে। আর এদিকে অন্ধকারে থাকতে থাকতে তুমি দৃষ্টি শক্তি অনেকটা হারিয়ে ফেলেছো, বড় সেই এগজস্ট ফ্যানের শব্দে তোমার শ্রবণ শক্তিও অনেক কমে গেছে, পুষ্টিহীন খাবারের কারনে তুমি এখন অনেক দুর্বল, রোগা, আর মলিন হয়ে গেছ। দীর্ঘ ৮-১০ বছর এভাবে থাকতে থাকতে তুমি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছ তবে এখনো তোমার বোধ শক্তি বা স্মৃতি শক্তি কিছুটা আছে। তুমি আয়নাঘরে বসে বসে ভাবো যে এইটুকু জেল জুলুম না সহ্য করলে কি হবে? আমরা স্বাধীনতার পক্ষের একমাত্র শক্তি; স্বাধীনতা বিরোধী, একাত্তরের পরাজিত শক্তি ঐ জামাত-শিবির-বিএনপির চক্রান্ত তোমাকে দমিয়ে রাখতে পারবেনা, তোমার মনোবল হারালে চলবেনা। এর মধ্যে একদিন সকালে তোমাকে আয়নাঘরের প্রক্ষালন কক্ষে নেওয়া হলে তুমি হঠাৎ দেখতে পাও যে তোমার আদর্শের লড়াকু সেই সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি যে একসময় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর লোকদের ভয়ে চৌকির নিচে লুকিয়ে ছিল সে হাই কমোডের উপর বসে আছে।
উপরের ৫ টি ঘটনায় আমি তোমার সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া ও মনের অবস্থা কল্পনা করার চেষ্টা করেছি মাত্র। আমার ঐসব কল্পনার সাথে তুমি যদি সহমত হও তাহলে তোমাকে স্যালুট বস, তোমার কাছে অনেক কিছু শেখার আছে। তোমরা কেউই আমাকে উত্তর জানাতে বাধ্য নও তবে তোমার উত্তর যদি হ্যাঁ হয় আর তুমি সেটা আমাকে জানাও তবে প্রতিটি হ্যাঁ উত্তরের জন্য নীলক্ষেতে ১ বেলা পেট চুক্তি কাচ্চি সাথে ১ লিটার বোরহানির প্রতিশ্রুতি থাকল। দশবার শাসনেও যে কাজ হয়না, একবার আদর করে বুঝিয়ে বললে নাকি তার থেকেও ভাল কাজ হয়, একজন শিক্ষক হিসেবে আমি দ্বিতীয়টিই করলাম, ভাল মন্দ মতামত তোমাদের কাছে।
(বিঃ দ্রঃ হলিউড বা বলিউডের কোন মুভি স্ক্রিপ্ট রাইটার যদি এই গল্পটা হাতে পেত তাহলে তারা খুব ভাল একটা মুভি করে ফেলত। যেমন ধরো টাইম ট্র্যাভেল মুভি; যেখানে ১০ই ডিসেম্বর, ২০২২ তুমি আগ্নেয় অস্ত্র/চাপাতি/ হাতুরি/ বা ক্রিকেট স্ট্যাম্প নিয়ে একটা সিগারেট টানতে টানতে জিয়া হলের গেট (ঢাবি) দিয়ে বের হচ্ছো আর তোমার কর্মীদের খুব ভাল ভাবে তালিম দিচ্ছ যে- কোন পরিস্থিতিতেই পাকিস্তানের চরদের হাতে ক্ষমতা দেওয়া যাবেনা, (তখন স্ক্রিন ফ্রিজ করে তোমার পরিচয় দেখানো হবে টাইপিং এর খটখট শব্দে) আজ ওদের যেকোনো মুল্যে প্রতিহত করতেই হবে, বিকল্প নাই প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতেই হবে। তারপর প্রবল আক্রমণে ১০ই ডিসেম্বরের সভা যদিও তোমরা পণ্ড করেছিলে কিন্তু প্রকৃতির নিয়মে একদিন তোমার দল ক্ষমতাচ্যুত হয় ও পালাক্রমে উপরের ৫ টি ঘটনাসহ আরও অনেক কিছু ঘটে যায় তোমার সাথে, তুমি বুড়ো অবস্থায় আয়নাঘরে সেই প্রক্ষালন কক্ষে সেই বড় ভাইয়ের মুখোমুখি, ঠিক তখনই তুমি আবার সেই হল গেটের সামনে সেই কর্মীদের সাথে নিজেকে আবিস্কার কর ১০ই ডিসেম্বর, ২০২২ প্রত্যুষ। তুমি বুঝে উঠতে পারনা বিষয়টা, আসলে হচ্ছে কি? তোমার তালিম দেবার গতি বেশটা ধীর হয়ে আসে আর তুমি ভাবনায় মশগুল হয়ে যাও যে এতক্ষন ঠিক কি হল আর কিভাবে হল? বিষয়টি লক্ষ্য করে তোমার ঘনিষ্ঠ এক কর্মী তোমার কাঁধে হাত রেখে বলে যে ভাই তোমার কি হইছে, তোমার শরীর ঠিক আছে তো? তুমি আমতা আমতা করে জবাব দাও যে, ও তেমন কিছু না। এর মধ্যেই তোমার হাতের সিগারেটের আগুনে তোমার আঙ্গুলে ছেঁকা লাগলে তুমি বুঝতে পারো যে তুমি টাইম ট্র্যাভেলে ছিলে এতক্ষণ, আর ভবিষ্যতে যেয়ে তুমি সবকিছু দেখে এসেছ কিন্তু তুমি জানোনা যে এটা কিভাবে সম্ভব হল? যেহেতু তুমি ভবিষ্যৎ দেখে এসেছ যে তোমার সাথে ঠিক কি কি হতে পারে, তাই তুমি তোমার সিদ্ধান্ত পালটে ফেলো। এরপর তোমাকে দেখানো হবে সমাবেশ থেকে বেশ দূরে একটা পাঁচিলের উপর বসে আছো বিরোধী নেতাদের কথা শুনবে বলে, সমাবেশ শুরু হতে এখনো ৫ মিনিট বাকী, তখনই মুভির ফ্ল্যাশ ব্যাকে দেখানো হবে এক যুবক এলিয়েন ও এক যুবতী নারীর (যে আমাদের পৃথিবীর মানুষ) প্রেমের দৃশ্য। সেই যুবতী নারী একসময় প্রেগন্যান্ট হয়ে পড়লে পৃথিবী ও এলিয়েন পাড়ায় এই অসম প্রেমের কথা জানাজানি হয়ে যায় আর এলিয়েনরা সেই যুবক এলিয়েনকে ধরে নিয়ে যায় ও হত্যা করে। এদিকে এক দূর সম্পর্কের খালার বাড়িতে সেই যুবতী বাচ্চা প্রসব করে তারপর মারা যায় কারন বাচ্চাটি মানুষের ছিলনা, আর এই বিষয়টি সেই যুবতী আগে থেকেই জানত। মারা যাবার সময় যুবতী তার বাচ্চার দায়িত্ব সেই খালার হাতে দিয়ে যায়। আর তখনই মুভির দৃশ্য আবার বর্তমানে চলে আসে, এবং দেখানো হয় একটা সাদা মেঘের জটলা তোমাকে ঘিরে ধরে ফিসফিস করে বলতে থাকে যে তুমিই সেই বাচ্চা আর তোমার বাবা একজন এলিয়েন হওয়ার কারনে তুমি ২৩ বছর বয়স থেকে টাইম ট্র্যাভেল করার ক্ষমতা অর্জন করবে আর এই ক্ষমতা তুমি সবসময় মানুষের কল্যাণে ব্যবহার করবে। সেই মেঘের জটলা আসলে তোমার মা বাবা দুজনের আত্মা ছিল আর তুমি আজ (১০ই ডিসেম্বর, ২০২২) ২৩ বছরে পা দিয়েছ। এরপর আবারও একটা সিগারেট ধরিয়ে তুমি সমাবেশের নেতাদের বক্তৃতা শুনতে শুরু করলে আর তাদের কথাগুল তোমার কাছে যৌক্তিক মনে হতে থাকে। তুমি যেহেতু ক্ষমতাসীন ছাত্রলীগের ভ্যানগার্ড ছিলে আর সেদিন তোমার ভাবনা পরিবর্তন করে নিস্ক্রিয় হয়ে পর তাই বিরোধীদের সেই সমাবেশ সফল হয় ও সেখান থেকেই এই সরকারের পতনধ্বনি বেজে ওঠে ও দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। বছর কয়েক পর একদিন কোন এক টকশো তে সাংবাদিকরা তোমাকে জিজ্ঞেস করে যে কেন সেদিন তুমি নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছিলে? জবাবে তুমি বল যে রাজনীতিতে কিছু কথা না হয় গোপনই থাক। এরপর ধীরে ধীরে তুমি তরুণ প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয় হতে আরম্ভ কর এবং একসময় তুমি দেশের প্রেসিডেন্ট হও। যেহেতু তুমি টাইম ট্র্যাভেলের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ দেখতে পাও, তাই তুমি একের পর এক যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিতে থাকো যার ফলে তোমার দেশ এখন সভ্যতা, সক্ষমতা আর উন্নয়নের সব সূচকেই পৃথিবীকে নেতৃত্ব দিচ্ছে, পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ছে। হ্যাঁ, তুমিই হচ্ছো আজ ইউনাইটেড স্টেটস অব বাংলার সবথেকে সফল প্রেসিডেন্ট! আর আমার কল্পনায় মুভির সেই স্ক্রিপ্ট রাইটারের নাম হল রবার্ট এ্যান্টোনিও হাঁদারাম ইকবাল ব্যুশো)।
লেখক : প্রভাষক, হাবিপ্রবি
(বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের অধ্যায়নরত)