জেলার আদিতমারী উপজেলার দেওডোবা তারকানাথ সরকার উচ্চ বিদ্যালয়ে জাল সার্টিফিকেটে নিয়োগ বাতিল, রাতের আঁধারে গঠিত ম্যানেজিং কমিটি গঠনের অভিযোগ উঠেছে। এদিকে ওই কমিটি ভেঙ্গে নতুন কমিটি গঠনসহ বিদ্যালয়ের নানা অনিয়মের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বিদ্যালয়ের অভিভাবক ও এলাকাবাসী। এছাড়াও সম্প্রতি আদিতমারী উপজেলা প্রেসক্লাবে ওই সংবাদ সম্মেলন করে বিচার দাবী করেছেন তারা। অভিযোগ সুত্রে জানাগেছে, ১৯৯০ সালে বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে যোগ দেন আব্দুল হান্নান। তখন তার সার্টিফিকেট ছিলো এসএসসি দ্বিতীয়, এইচএসসি তৃতীয় এবং স্নাতক তৃতীয় বিভাগ। কিন্তু দীর্ঘ ৩৩বছর সহকারী শিক্ষক পদে চাকরি করে স্বপ্নজাগে প্রধান শিক্ষক হওয়ার। ২০২৪ সালে এসে তিনি এইচএসসি ও স্নাতক দ্বিতীয় বিভাগ জাল সার্টিফিকেট তৈরি করে জালিয়াতির মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ নেন। এজন্য তিনি রাতের আঁধারে ম্যানেজিং কমিটি গঠন করে মাজেদুল ইসলাম নামে এক সহকারী শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বানিয়ে প্রধান শিক্ষক পদ বাগিয়ে নেন। এছাড়া তিনি প্রধান শিক্ষকের চেয়ারে বসেই আয়া, পরিচ্ছন্ন কর্মী, অফিস সহকারী ও নিরাপত্তা কর্মী পদে ৪জনকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেন এবং স্কুল ফান্ডে থাকা ১লাখ ৮৬হাজার টাকা উত্তোলন করে পকেটস্থ করেন। ওই বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধান শিক্ষক প্রতাপ চন্দ্র বলেন, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সহ সভাপতি হান্নান মিয়া, উপজেলা আওয়ামিলীগের সদস্য শিক্ষক মাজেদুল ইসলাম ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার জাকির হোসেন যোগসাজশে ইউনিয়ন আওয়ামিলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইউপি সদস্য আসাদুজ্জামানকে একাধিক বার বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচিত করে। তিনি সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে বিদ্যালয়ে শুরু হয় নানা অনিয়ম। এদিকে দীর্ঘ প্রায় এক যুগ বিদ্যালয়ে নৈশ প্রহরী পদে স্বেচ্ছায় শ্রম দেওয়া সুমন মিয়া নামে এক ভুক্তভোগী গত ৭ জুলাই অভিযুক্ত শিক্ষক আব্দুল হান্নানের নামে স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম ও জাল সার্টিফিকেটে প্রধান শিক্ষক হওয়ার ব্যাপারে আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। পরে অভিযোগ আমলে নিয়ে ইউএনও নূর -ই – আলম সিদ্দিকী উপজেলা মৎস কর্মকর্তাকে আহ্বায়ক করে ৩সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। এছাড়া বিদ্যালয়ের অভিযুক্ত শিক্ষক আব্দুল হান্নানসহ সদ্য নিয়োপ্রাপ্ত আরো ৪জন কর্মচারীর বেতন বন্ধ করে দেওয়া হয়। এদিকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। কিন্তু উপজেলা নির্বাহী অফিসার অধিকতর তদন্তের কথা বলে ৩মাস পেরিয়ে গেলেও কোন পদক্ষেপ নেন নি। তবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর -ই – আলম সিদ্দিকী বলেন, দেওডোবা তারকানাথ সরকার উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আব্দুল হান্নানের বিরুদ্ধে অভিযোগের ব্যাপারে গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দিয়েছে। বিদ্যালয়ের ওই শিক্ষকসহ সদ্য নিয়োপ্রাপ্ত আরো ৪জন কর্মচারীর বেতন বন্ধ রয়েছে। বিষয়টির অধিকতর তদন্ত চলছে। অপরাধ প্রমাণিত হলে বিধি মতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।