যমুনা নদীর ওপর দেশের দীর্ঘতম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর কাজ শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে। এ কাজের স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও চুলচেরা ব্যয় বিশ্লেষণে ৫০ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। আগামী জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি পর্যায়ে সেতুটি চালু করা হবে। তবে এটি চালু হলেও ট্রেনের পূর্ণগতি ফিরতে সময় লাগবে আরও দু’মাস। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু প্রকল্পের পরিচালক আল ফাত্তাহ মাসউদুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, সেতুটির কাজ শেষ হলেও আনুষ্ঠানিকভাবে এটির উদ্বোধন করা হবে জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে। উদ্বোধনের নানান প্রক্রিয়াও চলছে। সেতুটি নির্মাণে প্রাক্কলিত ব্যয়ের থেকে ৫০ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। প্রকল্প পরিচালক আরও জানান, সেতুটির সবচেয়ে বড় সুবিধা হবে সময় সাশ্রয়। যমুনা নদীতে বর্তমান সেতুটি বিপজ্জনক হওয়ায় একটি ট্রেন পার হতে প্রায় ৩০ মিনিট সময় লাগে। আমরা যদি এই সেতুর ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চালাই, তাহলে মাত্র ৫ মিনিটে যমুনা পার হওয়া যাবে। এতে প্রতিদিন ৩৮টি ট্রেন চলাচল করতে পারবে। বঙ্গবন্ধু রেলসেতুর নির্মাণ কাজ শেষ, সাশ্রয় ৫০ কোটি টাকা সেতুর অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতু নির্মাণ প্রকল্প ডব্লিউডি-১ এর মেরিন ইঞ্জিনিয়ার মাহবুব আলম বলেন, ‘সেতুটির কাজ এরিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। তবে ভারত থেকে প্রযুক্তিপণ্য আমদানিতে একটু জটিলতার কারণে সেতুর দুই পাশের স্টেশনে শুরু থেকে কম্পিউটার ভিত্তিক স্বয়ংক্রিয় সংকেত ব্যবস্থা বা কম্পিউটার বেইজড ইন্টারলিঙ্ক সিস্টেম (সিবিআইএস) চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে জানুয়ারিতে সেতুটি চালু হলেও পূর্ণগতি অর্থাৎ ১২০ কিলোমিটার বেগ পাওয়া যাবে না। চালু হওয়ার ঠিক দুই মাসের মধ্যে সেতুর দুপাশে সিবিআইএস সংযুক্ত করা সম্ভব হবে বলে তিনি জানান।’ প্রকল্প সূত্র জানায়, ২০২০ সালের আগস্ট মাসে ৯ হাজার ৭৩৪ দশমিক ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। পরবর্তীতে এ ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ হাজার ৭৮০ দশমিক ৯৬ কোটি টাকা। যার ১২ হাজার ১৪৯ দশমিক ২ কোটি টাকা জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ঋণ হিসেবে দিয়েছে। এ প্রকল্পের মূল নির্ধারিত সময় ছিল জুলাই ২০১৬ থেকে ডিসেম্বর ২০২৩। কিন্তু প্রথম সংশোধনে এ সময়সীমা ডিসেম্বর ২০২৫ এ স্থানান্তরিত করা হয়। এর আগে ২০১৬ সালের ৬ ডিসেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়।