বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, নির্বাচন যত দেরি হবে, ষড়যন্ত্র তত বাড়বে। সাবেক স্বৈরাচার দেশি-বিদেশি প্রভুদের সঙ্গে মিলে ষড়যন্ত্র করেই চলেছেন। গতকাল শনিবার দুপুরে স্থানীয় টাউন ফুটবল ময়দানে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সম্মেলন-২০২৪ এর উদ্বোধনী অধিবেশনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি। জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সম্মেলন উদ্বোধন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তারেক রহমান বলেন, বর্তমান সরকার যে সংস্কারের কথা বলছে সেই সংস্কার বিএনপিও চায়। বেশি সংস্কার করতে গিয়ে নির্বাচন করতে দেরি হলে ষড়যন্ত্রকারীরা সুযোগ নিতে পারে। শুধুমাত্র নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমেই সংস্কারের বাস্তবায়ন এবং একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে বিদ্যমান সমস্যা সমাধান সম্ভব বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। দীর্ঘ ১৪ বছর পর চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো। দ্বিবার্ষিক এ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান খান (বাবু)। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চ্যুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যের পর কাউন্সিলরদের গোপন ভোটে জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতারা নির্বাচিত হবেন। সর্বশেষ ২০১০ সালে জেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সম্মেলন উপলক্ষে গতকাল সকাল ৯টা থেকেই ডেলিগেট, কাউন্সিলর ও আমন্ত্রিত অতিথিরা আসতে থাকেন। সকাল ১০টার মধ্যে সম্মেলনস্থল টাউন ফুটবল ময়দান কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। বেলা পৌনে ১১টার দিকে জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন শেষে বেলুন উড়িয়ে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অন্য নেতারা মঞ্চে আসন গ্রহণের পর জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) পক্ষ থেকে দলীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। মঞ্চে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, নিতাই রায় চৌধুরী, ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, সহসাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আজিজুল বারী হেলাল, চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সদস্যসচিব শরীফুজ্জামান শরীফ, মেহেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি মাসুদ অরুণ ও সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন, কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সৈয়দ মেহেদী আহমেদ। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আওয়ামী লীগ কখনই গণতান্ত্রিক দল ছিল না। তারা ফ্যাসিবাদী দল। তাদের বডি কেমেস্ট্রিতে গণতন্ত্র নেই। পুরোটাই তারা ফ্যাসিবাদী। তিনি বলেন, চায়ের দোকানে বা রেস্টুরেন্টে দেখবেন টেবিল চাপড়ে যে সবচেয়ে জোর করে কথা বলছেন, কাউকে কথা বলতে দিচ্ছেন না, তিনিই হচ্ছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী। তাদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ এমনই। বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, গত ১৬ বছরে কোথাও কুপিয়ে, কোথাও গুলি করে হত্যা করে গুম করেছে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা। এছাড়া পুলিশকে ব্যবহার করেও হত্যা করা হয়েছে। গায়েবি মামলা দেয়া হয়েছে। পুলিশকে যেভাবে ব্যবহার করা হয়েছে, তা কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সম্ভব নয়। ‘জনরোষে পালিয়ে গেছে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ। তাই এখন এসব থেকে আল্লাহর রহমতে বেরিয়ে এসেছে বাংলাদেশ’, যোগ করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিভিন্ন সময় আন্দোলন-সংগ্রামে নিহত দলের নেতা-কর্মীদের স্মরণে মঞ্চে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ওয়াহেদুজ্জামান বুলা। সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ ছাত্র-জনতা, বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের প্রয়াত সদস্যদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া করা হয়। পরে সাংগঠনিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন জেলা বিএনপির সদস্য খন্দকার আবদুল জব্বার সোনা। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক এম এ তালহা, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শাহ জাহান খান, জাসাস চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সেলিমুল হাবীব সেলিম। জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রশিদ ঝন্টু। জেলা মৎস্যজীবী দলের সভাপতি কামরুজ্জামান বাবলু, জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী রউফুন নাহার, জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি এম জেনারেল ইসলাম, জেলা কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক তবারক আলী। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান খান বাবুর সভাপতিত্বে ও জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মো. শরীফুজ্জামান শরীফের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপির খুলনা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, বিএনপি খুলনা বিভাগের সহসাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল প্রমুখ।