সাতক্ষীর জেলার সদর উপজেলার বল্লী মোঃ মুজিবুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ. কে. এম আজহারুজ্জামান মুকুলের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীকে বেদড়ক মারপিটের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা খবরাখবর নেন। গত বৃহস্পতিবার স্কুল চলাকালিন সময়ে এ ঘটনা ঘটে।মারপিটের শিকার শিক্ষার্থী হলেন, সাতক্ষীরা সদরের ভাটপাড়া গ্রামের আজহারুল ইসলামের ছেলে তনয় হোসেন (১৪)। সে বল্লী মাধ্যমিক মুজিবুর রহমান বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। শিক্ষার্থীর বাবা আজহারুল ইসলাম জানান, খুব তুচ্ছ একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে স্কুল চলাকালীন সময়ে তার ছেলেকে সবার সামনে বেদড়ক মারপিট করে বেত ভেঙ্গে ফেলেন প্রধান শিক্ষক মুকুল। পরবর্তীতে তার সহপাঠীরা মিলে স্কুলে প্রতিবাদ করেন। স্কুল থেকে ছেলেকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। তিনি আরও জানান, তুচ্ছ ঘটনা দিয়ে বেদড়ক মারপিটের ঘটনাটি তাৎক্ষণিকভাবে সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা মাধ্যমিক কর্মকর্তা সহ সংশ্লিষ্ট কয়েকটি দপ্তরে জানানো হয়। অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে ফোন করে বিষয়টি জানার চেষ্টা করেন। এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আজহারুজ্জান মুকুল জানান, বিদ্যালযয়ের অষ্টম শ্রেণীর পড়ুয়া এক ছাত্রীকে কেন্দ্র করে বিষয়টি সূত্রপাত হয়। বিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বজায়ের স্বার্থে শিক্ষার্থীকে উত্তম মাধ্যম দেওয়া হয়। এঘটনাটি মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেনেছেন, তাদেরকে আমি বিষয়টি বুঝিয়ে বলেছি। তাছাড়া ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা এই প্রতিষ্ঠানের ছাত্রী ছিলেন তার সঙ্গে বিষয়টি মিটিয়ে নিয়েছি। সাতক্ষীরা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নারায়ণ চন্দ্র জানান, অষ্টম শ্রেণীর একটি মেয়েকে কেন্দ্র করে ঘটনাটি ঘটে। বিষয়টি জানামাত্র প্রধান শিক্ষককে ফোন করা হয়। একই সাথে বিদ্যায়ের সভাপতি সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার অবহিত করা হয়। শুনেছি ভুক্তভোগীর পরিবার প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে বিষয়টি মিটিয়ে নিয়েছেন।সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শোয়াইব আহমাদ জানান, এ বিষয়ে অভিভাবকরা মিটমাট করে নিয়েছেন শুনেছি। তবে শিক্ষার্থীর বাবা-মাকে বলা হয়েছে লিখিত অভিযোগ দিতে, অভিযোগ দিলে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।এদিকে, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আদরুজ্জামান মুকুলের বিরুদ্ধে সরকারি পাঠ্যপুস্তক বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। গত রোববার (১৭ নভেম্বর) বল্লী মুজিবুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের লাইব্রেরী থেকে চলতি বছর সহ পূর্ববর্তী বছরের সরকারি পাঠ্যপুস্তক বিক্রি করা হয়। এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের লাইব্রেরিয়ান রেবেকা সুলতানা জানান, বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মচারী একত্রে পাঠ্যপুস্তক বিক্রি করেছেন। পূর্ববর্তী বছরের পুরাতন বইসহ বেশ কিছু বই বিক্রি করা হয়। নতুন শিক্ষা বর্ষের বই বিক্রি হয়েছে কিনা সে বিষয়টা জানা নেই। সমস্ত বই বস্তায় করে ক্রেতারা নিয়ে গিয়েছেন। এ বিষয়টি নিয়ে প্রধান শিক্ষকের মোবাইল ফোনে কথা বললে তিনি বলেন আমি দুই-তিনটি করে আঘাত করেছি কিন্তু আপনারা যেটি শুনেছেন, বিষয়টি তেমন নয়। তার মোবাইলের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আজারুজ্জামান মুকুল; এব্যাপারে জেলা শিক্ষা অফিসার নারায়ণ চন্দ্র বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানান।