ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের জনবল সংকটের কারণে স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে উপজেলার দুই লক্ষাধিক মানুষ। উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের আউটডোর ও ইনডোর সেবার জন্য ১০ কি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র ১১৪ টি পদের বিপরীতে ৫২ টি পদে পদায়নকৃত কর্মকর্তা কর্মচারী থাকলেও অনেকে বিভিন্ন ছুটি বা কর্মস্থলে নিয়মিত না থাকার কারনে রুটিন মাফিক কাজ দেখিয়ে অফিস সচল রাখার বাহিরে তেমন স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করা যাচ্ছে না। উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারের মোট ১০ টি পদের বিপরীতে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ৩ জন, গুরুত্বপূর্ণ ফার্মাসিস্টের ১০ টি পদ থাকলেও উপজেলাতে কোন ফার্মাসিস্ট কর্মরত নেই, পরিবার কল্যাণ পরিদর্শীকার ১০ টি পদের বিপরীতে কর্মরত রয়েছে মাত্র ৪ জন, পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শকের ১০ টি পদের মধ্যে ৯ জন কর্মরত রয়েছে, পরিবার কল্যাণ সহকারী মোট ৪১ পদের বিপরীতে কর্মরত রয়েছে ২৮ জন, এমএলএসএস ১০ টি পদের বিপরীতে মাত্র ১ জন কর্মরত রয়েছে। এছাড়াও আয়া ১০টি পদের মধ্যে ৪ জন কর্মরত রয়েছে, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা সহকারী ৩ টি পদের মধ্যে ৩ টিতে কর্মরত রয়েছে। উপজেলায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ ১০ টি কেন্দ্রের মধ্যে ৫ টি কেন্দ্রে জনবল থাকলেও বাকি ৪ টি সেন্টার কর্মকর্তা, কর্মচারীর সংখ্যা শূন্য। শূন্য সেন্টার গুলো হলো চান্দুরা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ইছাপুরা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র, বিষ্ণপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র, সিংগারবিল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও হরষপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র। যা বিভিন্ন সেন্টারে কর্মরতদের দ্বারা অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রদানের মাধ্যমে সেবা প্রদান হয়। যার কারনে যে ৫ টি স্বাস্থ্য কেন্দ্র জনবল রয়েছে সে সেন্টার গুলোতে নিয়মিত স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে স্থানীয় এলাকাবাসী। জনবল সংকট ও অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করার সুযোগে অনেক কর্মকর্তা, কর্মচারী কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকা সহ জেলা ও উপজেলা অফিসে কাজে আছে অজুহাতে কর্মস্থলে না যাওয়ার কারনে স্বাস্থ্যসেবার ভোগান্তি প্রকট আকার ধারণ করেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা উপ-পরিচালক মোস্তফা কামাল জানান, ১১তম থেকে ২০ তম গ্রেডের কর্মকর্তা-কর্মচারী গত ২৩ সালে একটা নিয়োগের মাধ্যমে কিছু সংকট নিরসনের চেষ্টা করেছি। ২৪ সালের মে -জুন মাসের দিকে আরেকটা নিয়োগ হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু দেশের পরিস্থিতির জন্য নিয়োগ কার্যক্রমটি সম্পন্ন হয়নি। তাছাড়া পরিবার কল্যাণ পরিদর্শীকা পদে একটি পদে নিয়োগ নিয়ে কোর্টে মামলা থাকায় এটাও আটকিয়ে রয়েছে। এই বছর আবার দুই জন কর্মকর্তার হঠাৎ মৃত্যুতে আরো সংকট বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই যতজন জনবল রয়েছে ততজনকে দিয়েই কাজ চালিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি। সঠিক সময় অফিস না করা বা বিভিন্ন অজুহাতে দায়িত্ব ফাঁকিবাজি করার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি আরো জানান, আমরা চেষ্টা করছি সবাই যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করার জন্য তদারকি করতে। তার পরেও কিছু বিছিন্ন ঘটনা ঘটতে পারে। আমরা আরো সক্রিয় ভাবে নজরদারি বৃদ্ধি করব।