প্রায় তিন বছর আগে এমন শীতেই শোনা গিয়েছে করোনা ভাইরাসের খবর। চিনের উহান শহরে প্রথম শোনা গিয়েছিল অজানা জ্বরে মৃত্যুর কথা। রাতারাতি লকডাউন করে দেওয়া হয় সারা শহর। ক্রমে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে গোটা বিশ্বে। সংক্রমণের শীর্ষে পৌঁছে যায় আমেরিকা-সহ ইতালি, ব্রাজিলের মতো দেশ। সেই তালিকায় ছিল বাংলাদেশ । শুরু থেকেই চিনে জারি করা হয় ‘জিরো কোভিড’ নীতি। এই তিন বছরে করোনার গ্রাফ কখনও ঊর্ধ্বমুখী আবার কখনও নিম্নমুখী হয়েছে। এ বছর আবার চলতি মাসের শুরু থেকে হঠাৎ করে বাড়তে শুরু করে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। নতুন করে চোখ রাঙাচ্ছে ওমিক্রন বিএফ.৭।
এ বছরের শেষে অতিমারি পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। কিন্তু করোনাভাইরাস কখনওই একেবারে নিঃশেষ হবে না। সুতরাং, এই ভাইরাস নিয়ে সঙ্গে নিয়েই বাঁচতে হবে। করোনার শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত অনেকগুলো ভ্যারিয়েন্টের খোঁজ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে খোঁজ পাওয়া গেছে ওমিক্রন বিএফ.৭। এটি ওমিক্রনের বিএ.৫-এর একটি সাব-ভ্যারিয়েন্ট।
চিনে ইতিমধ্যেই খোঁজ মিলেছে এই বিএফ.৭-এর। চিন প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, চিনে নতুন করে ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ এই ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়েছেন। সবথেকে বেশি আক্রান্তের খোঁজ মিলছে গুয়াংজ়াউ প্রদেশ ও চংকিং প্রদেশ থেকে। বেজিংয়ে দৈনিক ৪ হাজারেরও বেশি আক্রান্তের খোঁজ মিলছে। আমাদের পাশ্ববর্তী দেশ ভারতেও চারজন রোগীর খোঁজ মিলেছে। দেশের ৯০ শতাংশেরও বেশি মানুষ টিকার দুটো ডোজ় নিয়েছেন। কিন্তু মাত্র ২৭ শতাংশ মানুষ তৃতীয় ডোজ় নিয়েছেন। করোনা সংক্রমণ এড়ানোর জন্য তৃতীয় ডোজ়ের উপর জোর দিচ্ছে কেন্দ্র।
বিএফ.৭-এ সংক্রমিত একজন রোগী একসঙ্গে ১৮-২০ জনের মধ্যে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। ভারতে যদি এই ভাইরাসে মানুষ আক্রান্ত হতে শুরু করে তাহলে এটি দ্বিতীয় ও তৃতীয় ঢেউয়ের থেকে বড় আকার ধারণ করবে। যদিও, এই উপজাতির মারণ ক্ষমতা কম। ভারতেও চারজন রোগীই এখন সুস্থ। কিন্তু তবু চিন্তা রয়ে যাচ্ছে। তাই মাস্ক পরার ও ভিড় জায়গা এড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরা।
আর করোনার এই ভ্যারিয়েন্ট খুব কম সময়ের মধ্যে একজন সুস্থ মানুষকে আক্রান্ত করে এবং অনেক বেশি সংখ্যক মানুষকে সংক্রমিত করতে পারবে। এটার উপসর্গ সম্পর্কে যা জানা গেছে; তা অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টের মতোই।
এখনও এটার ভয়াবহতা সম্পর্কে জানা যায়নি, তবে ভয়ানক বিষয় হচ্ছে টিকা না নেওয়া ব্যক্তির মধ্যে অনেক ভয়াবহ প্রভাব পড়ে। যাদের অন্যান্য রোগ আছে, অন্তঃসত্ত্বা তাদের মধ্যে এটি মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। এর মধ্যে ভারতেও এই ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে।
> উপসর্গ সমূহ
গলা ব্যাথা, হাঁচি, সর্দি, নাক বন্ধ, কফ ছাড়া কাশি -মাথাব্যথা, কফ সহ কাশি কথা বলতে অসুবিধা,শারীরিক ক্লান্তি ইত্যাদি দেখা যাচ্ছে বিএফ.৭-এ আক্রান্তদের মধ্যে। এছাড়াও গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল উপসর্গ যেমন বমি এবং ডায়ারিয়াও দেখা যাচ্ছে রোগীদের মধ্যে।তাই এই উপসর্গগুলো দেখা দিলেই সতর্ক হোন।
> বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কারিগরি পরামর্শক কমিটির নিম্নলিখিত সুপারিশগুলো নেয়া হয়েছে:-
ওমিক্রনের নতুন ধরন অত্যন্ত সংক্রামক। সম্প্রতি চীন, ভারতসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নতুন ধরনের করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। জেনেটিক সিকুয়েন্স পরীক্ষার মাধ্যমে জানা গেছে, এসব দেশে ওমিক্রন ধরনের বিএফ.৭ সাব-ভ্যারিয়েন্টের কারণে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিবেশী দেশগুলোয় সংক্রমণ বাড়লে বাংলাদেশেও সেই সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে।
কমিটির পরামর্শে বলা হয়, গত ২৪ ডিসেম্বর রাতে কোভিড-১৯ জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লার সভাপতিত্বে চলমান কোভিড সংক্রমণ নিয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় নিম্নলিখিত সুপারিশগুলো দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
১. কোভিড ১৯ এর বৈশ্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে টেকনিক্যাল কমিটি সব সময় পর্যালোচনা করছে এবং তাদের মতামত ও পরামর্শ সরকারের কাছে তুলে ধরছে।
২. ফ্রন্ট লাইনার, ১৮ বছর ও তদুর্ধ্ব কোমরবিড রোগে (একাধিক রোগে আক্রান্ত) আক্রান্ত এবং ৬০ বছর ঊর্ধ্ব সবাইকে দ্বিতীয় বুস্টার ডোজ/ ৪র্থ ডোজের টিকার চলমান ক্যাম্পেইনের আওয়াত আনার ব্যাপারে সব প্রকার জনসংযোগ, প্রচার প্রচারণা জোরদার করার ব্যবস্থা করতে হবে।
৩. ফাইজার তাদের ৯ মাস মেয়াদি ভ্যাক্সিনের মেয়াদ ১২ মাস এবং ১২ মাস ভ্যাক্সিনের মেয়াদ ১৫ মাস বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপন দিয়েছে, যা দেশে বিদ্যমান সব নিয়ম মেনে দেওয়া হচ্ছে বলে কমিটি মনে করে।
৪. আশঙ্কাজনক ব্যক্তি এবং কোমরবিড রোগে আক্রান্ত সবাইকে কোভিড ১৯ এর সব স্বাস্থ্যবিধি যেমন মাস্ক পরা, হ্যান্ড স্যানিটাইজ করা ইত্যাদি অবশ্যই মেনে চলতে হবে।
৫. পোর্ট অব এন্ট্রিগুলোতে বিশেষ করে চীন, জাপান, কোরিয়া, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে আগত যাত্রীদের মধ্যে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গ থাকলে স্ক্রিনিংয়ের আওতায় আনতে হবে।
৬. দেশের সব কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল ও অন্যান্য হাসপাতালগুলোকে কোভিডের চিকিৎসা দেওয়ার ব্যাপারে রেডি রাখতে অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া প্রয়োজন।
> হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতিকে বাংলাদেশের প্রতিটি মহামারীর রোগ সমূহে দায়িত্ব দেয়া উচিত:-অতীতের মহামারী যে বাবে হোমিওপ্যাথিতে প্রতিরোধ সম্ভব হয়েছে সেই বর্তমান করোনা ওমিক্রন বিএফ.৭ ও প্রতিরোধ সম্ভবঃ- বেশ কিছুদিন ধরে করোনা সংক্রমণের হার নিম্নমুখী থাকলেও হঠাৎ করে তা বাড়তে শুরু করেছে। বর্তমান সময়ে সবচেয়ে মহাসংকটের নাম ওমিক্রন বিএফ.৭
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা পদ্ধতি। ইতোমধ্যে ইতালি, স্পেন, কিউবা ও ভারতসহ বিভিন্ন দেশে হোমিও চিকিৎসার মাধ্যমে অতি দ্রুততার সঙ্গে বহু করোনা রোগী সম্পূর্ণরূপে আরোগ্য লাভ করেছেন গত ২০২০ সালে বাংলাদেশে হোমিওপ্যাথিক ওষুধ প্রয়োগ করে এমনি একটি আশানুরূপ নজির স্থাপিত হয়েছে পুরান, ঢাকার স্বামীবাগে অবস্থিত ইসকন মন্দিরে। মাত্র ৭ দিনের হোমিও ওষুধ প্রয়োগ করে সুস্থ হয়েছেন ইসকন মন্দিরের পুরোহিতসহ ৩৫ জন করোনা রোগী।এ মন্দিরের করোনা রোগীদের সুস্থ হওয়ার পেছনে হোমিওপ্যাথির সাফল্যটি যদি আমরা পরীক্ষামূলক হিসেবেও গ্রহণ করি, তাহলে পরবর্তীতে দেখা যায় ঢাকার রাজারবাগ সেন্ট্রাল পুলিশ হসপিটালের করোনা ওয়ার্ডের ৪২ জন রোগী শুধুমাত্র হোমিওপ্যাথিক ওষুধ সেবনের মাধ্যমে পুরোপুরি আরোগ্য লাভ করেছেন মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই। যা সম্পূর্ণ কার্যকর চিকিৎসা পদ্ধতি রূপেই প্রতীয়মান হয়েছে। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে করোনার লক্ষণ উপসর্গ নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে অনেকেই স্বল্প খরচে হোমিও ওষুধ সেবনের মাধ্যমে পুরোপুরি আরোগ্য লাভ করেছেন। করোনা সংক্রমণের ফলে রোগীর যেসকল লক্ষণ উপসর্গ ও নিদানিক বৈকল্য দেখা দেয় তার প্রাথমিক পর্যায়ে কিছু লাক্ষণিক হোমিও চিকিৎসাই যথেষ্ট হয়।বাংলাদেশের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকগণ ইতোমধ্যেই সাফল্যের স্বাক্ষর রেখেছেন। ফল স্বরূপ আমরা দেখতে পাই বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা বিশেষ করে পুলিশ বিভাগ হোমিও সেবা গ্রহণ করছেন এবং সুস্থও হচ্ছেন।করোনা সংক্রমণের শুধুমাত্র প্রাথমিক পর্যায়েই নয় বরং একেবারে চরম পর্যায়ে রোগীর জীবন সংকটাপন্ন অবস্থায়ও হোমিও চিকিৎসার সক্ষমতা রয়েছে। যেহেতু করোনা সংক্রমণের কোন পর্যায়ের চিকিৎসাই প্রচলিত চিকিৎসা ব্যবস্থায় কোন সুনির্দিষ্ট ওষুধ বা চিকিৎসা নির্ণায়িত হয়নি, এমতাবস্থায় এসব রোগীর চিকিৎসায় লক্ষণ ভিত্তিক হোমিও ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে রোগীর জীবন রক্ষা করার পাশাপাশি রোগীর স্বাস্থ্য পুনর্বাসনে সহায়তা করা যেতে পারে।করোনা মোকাবেলায় হোমিও চিকিৎসকগণ লক্ষণ সদৃশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ওষুধের কথা উল্লেখ করেছেন। যেমন- যুগে যুগে মহামারিতে হোমিও চিকিৎসার সাফল্যগাঁথা রয়েছে বিশ্বময়। ১৭৯৯ সালে জার্মানিতে স্কারলেট ফিভার মহামারিতে হোমিও চিকিৎসা করে ড. হ্যানিম্যান সফলতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। ১৮১৩ সালে টাইফাস ফিভার মহামারিতে হোমিও চিকিৎসায় মৃত্যুর হার ছিল ১.১১ শতাংশ, যেখানে অন্যান্য চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর হার ছিল ৩০ শতাংশ। এছাড়া ১৮৩১ সালে অস্ট্রিয়ার কলেরা মহামারি, ১৮৪৯ সালে সিনসিনাটির কলেরা মহামারি, ১৮৫৪ সালের লন্ডনের কলেরা মহামারি, ১৮৬২-১৮৬৪ পর্যন্ত নিউইয়র্ক ডিপথেরিয়া, ১৯১৮ সালে স্প্যানিশ ফ্লু, ২০১৮-২০১৯ সালে বাংলাদেশে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়াসহ আরও অনেক মহামারিতে হোমিও চিকিৎসার উল্লেখযোগ্য সফলতা রয়েছে।এত এত সফলতার পরেও প্রচার প্রসার ও সুযোগ সুবিধা কম থাকার দরুন সেভাবে হোমিও চিকিৎসা সেবা পরিচালনা করা ব্যাপকভাবে সম্ভব হয় না বা হচ্ছেও না।মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যদি এ বিষয়ে সুদৃষ্টি জ্ঞাপন করেন তাহলে হোমিও চিকিৎসার মাধ্যমে এ করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলা করা সম্ভবপর হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ পূর্বক সুদৃঢ়চিত্তে বলতে চাই, যদি সেন্ট্রাল পুলিশ হসপিটালের ন্যায় প্রতিটি হসপিটালে হোমিওপ্যাথিক করোনা ইউনিট চালু করা হয়, তাহলে এ সংকটময় পরিস্থিতি সফলতার সঙ্গে মোকাবেলা করা আরও অনেক সহজতর হবে।
> পরামর্শঃ-
* মাঝে মাঝে সাবান-পানি বা স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধোয়া।
* হাত না ধুয়ে মুখ, চোখ ও নাক স্পর্শ না করা।
* হাঁচি কাশি দেওয়ার সময় মুখ ঢেকে রাখা।
* ঠাণ্ডা বা ফ্লু আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে না মেশা।
* মাংস ও ডিম খুব ভালোভাবে রান্না করা।
* বন্য জীবজন্তু কিংবা গৃহপালিত পশুকে খালি হাতে স্পর্শ না করা।
ভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় যেকোনো খবরের জন্য একটি দারুণ প্রতীকী ছবি হচ্ছে মাস্ক বা মুখোশ পরা কোন মানুষের মুখচ্ছবি,বিশ্বে বহু দেশেই সংক্রমণ ঠেকানোর একটি জনপ্রিয় ব্যবস্থাহচ্ছে মাস্ক ব্যবহার। বিশেষ করে চীনে, যেখান থেকে শুরু হয়েছে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা, সেখানেও মানুষ বায়ুর দূষণের হাত থেকে বাঁচতে হরহামেশা নাক আর মুখ ঢাকা মুখোশ পরে ঘুরে বেড়ায়।করোনাভাইরাস থেকে নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন,অবশ্য বায়ুবাহিত ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে এই মাস্ক কতটা কার্যকর সে ব্যাপারে যথেষ্টই সংশয়ে আছেন ভাইরাস বিশেষজ্ঞরা, যাদেরকে বলা হয় ভাইরোলজিস্ট।
> হোমিও সমাধানঃ-হোমিওপ্যাথি হলো একটি লক্ষণভিত্তিক প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতি। ডা. স্যামুয়েল হানেমান এই চিকিৎসা পদ্ধতির প্রবর্তক। তিনি ১৭৯৬ খ্রিস্টাব্দে এই চিকিৎসা পদ্ধতির প্রবর্তন করেন এবং ১৮০৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে তিনি সফলতার সঙ্গে এই চিকিৎসাকার্য পরিচালনা করেন।আমরা জানি, করোনা ভাইরাস একটি ভাইরাস-ঘটিত সংক্রমণ। কাজেই প্রচলিত চিকিৎসাব্যবস্থা এর আরোগ্যকারী চিকিৎসা প্রদানে অক্ষম। তারা ম্যানেজমেন্ট, স্বাস্থ্যবিধি, কোয়ারেনটাইন ইত্যাদি উপায়গুলোর পূর্ণ সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যাপারটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে চেষ্টা করবে। তাদের সে সক্ষমতাও আছে এবং হয়তো সে আন্তরিকতাও আছে। কিন্তু তাদের আরোগ্যকারী চিকিৎসা দিতে না পারার জন্য নিজেদের মধ্যে থাকা অন্তর্নিহিত দুর্বলতা থাকাটা অবধারিত। আর সাধারণ মানুষের প্যানিক হওয়াটা যে স্বাভাবিক – সেটা তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না আর হোমিওপ্যাথি হলো রোগ নয় রোগীকে চিকিৎসা করা হয়,এই জন্য এক জন অভিজ্ঞ হোমিও চিকিৎসক রোগীর রোগের পুরা লক্ষন নির্বাচন করতে পারলে, করোনা
ওমিক্রন বিএফ.৭ ভাইরাস হোমিওপ্যাথির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। ওমিক্রন বিএফ.৭ অনুরূপ লক্ষণে হোমওপ্যাথি ঔষধ, একোনাইট ন্যাপ,ইনফ্লুয়েঞ্জিনাম, আর্সনিক এ্যালবাম, বেলাডোনা, ব্রাইয়োনিয়া, জেলসিমিয়াম, ড্রসেরা, কার্বোভেজ, সহ আরো অনেক ঔষধ রোগীর রোগের লক্ষণের উপর আসতে পারে। তাই ঔষধ নিজে নিজে ব্যবহার না করে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।পরিশেষে বলতে চাই, যাঁদের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা দুর্বল, তাঁদের সতর্ক থাকতে হবে। ওমিক্রনে বিএফ.৭-এ আক্রান্ত হলে শরীরে কোন-কোন উপসর্গ প্রকাশ পায়, সেই সম্পর্কেও ওয়াকিবহাল থাকা দরকার। তবে যারা ঝুঁকিপূর্ণ মানুষ তাদেরকে আহ্বান জানাবো তারা যেন দ্বিতীয় বুস্টার অর্থাৎ চতুর্থ ডোজ নিয়ে নেন। বিশেষ করে সম্মুখ সারির ব্যক্তিদের চতুর্থ ডোজের টিকা নিয়ে নিতে হবে। যারা কোমরবিডিটির মধ্যে আছেন, তাদের অবশ্যই সুরক্ষা সামগ্রী যেমন মাস্ক, স্যানিটাইজার ব্যবহার, নিরাপদ দূরত্ব মেনে চলতে হবে। শীতের এই মৌসুমে ঘোরাঘুরি, উৎসব, অনুষ্ঠান বেড়ে যায়। কিন্তু যেকোনো রকম জনসমাগম, উৎসব, অনুষ্ঠান, ভিড় এড়িয়ে চলুন। উৎসব অনুষ্ঠান করতেই হলে সীমিত পরিসরে অল্পসংখ্যক মানুষকে নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
লেখক : চিকিৎসক ও কলাম লেখক
প্রতিষ্ঠাতা, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি
ইমেইল, drmazed96@gmail.com