রবিউল ইসলাম, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব সবাই যখন ঈদের খুশি ভাগাভাগিতে ব্যস্ত, পেশাগত কারণে দায়িত্বের বোঝা মাথায় নিয়ে কিছু মানুষ থাকে উৎসব-আনন্দের ঊর্ধ্বে। কর্মস্থলে থেকে তাদের দায়িত্ব পালন করতে হয় ঈদের দিনও। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) নিয়োজিত আনসার কর্মীদেরও ঈদ আনন্দ কাটে পরিবারের বাইরে এই বিশ্ববিদ্যালয় কর্মস্থলেই।
গান, গল্প, আড্ডায় চারিদিক কোলাহলের সাথে দিন কেটে যেত। শিক্ষার্থীদের হাসি আনন্দ ভাগাভাগির সঙ্গী, সবার কাছে পরিচিত প্রিয় মুখ কারো মামা, কারো আঙ্কেল কারোবা ভাই। সকাল থেকেই শিক্ষার্থীদের ভীড় জমতে শুরু করত এই প্রাঙ্গণে, সকাল থেকে দুপুরের প্রখর রোদ, দুপুর গড়িয়ে বিকাল, বিকাল পেরিয়ে সন্ধ্যা-রাতের মতই পালাক্রমে ভাগাভাগি কর চলত তাদের দায়িত্ব। সদা কোলাহলপূর্ণই থাকত ববির ৫০একরের প্রাঙ্গণ কিন্তু হটাৎ চারিদিক কোলাহল শূন্য নিরব হতে শুরু করেছে। এখন আর তাড়া নেই গেইট খোলার আসছে না একের পর এক জলপাই রঙের বাসগুলো, নিরব ভাবেই কাটছে দিন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১০হাজার মানুষের নিরাপত্তার দায়িত্ব তাদের। সর্বক্ষণ দায়িত্ব পালন করে চলছেন তারা। ঈদে ক্যাম্পাস শূন্য হতে শুরু করলে তাদের দায়িত্ব আরো বেড়ে যায়। নিভৃতে কাজ করে যাচ্ছেন তারা। শিক্ষক শিক্ষার্থী পরিচিতজনদের একে একে হাসিমুখে বিদায় দিচ্ছেন। পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব সবাই যখন ঈদের খুশি ভাগাভাগিতে ক্যাম্পাস ত্যাগে ব্যস্ত তখনই স্বপ্নের ক্যাম্পাসটাকে আগলে রাখার জন্য বদ্ধপরিকর তারা। পরিবারের বাইরে কর্মস্থলেই এমভাবেই ঈদ কাটাবেন তারা।
আনসার সদস্য বাকি বিল্লার সাথে কথা হলে বলেন, “পরিবারেকে ছেড়ে বাইরে ঈদ করতে কষ্ট লাগে তারপরও আমাদের দায়িত্ব তো পালন করতে হবে। আমার ছোট ছোট দু’টো সন্তান রয়েছে তাদের জন্য খারাপ লাগে। সব মিলিয়ে আমাদের কাজের মধ্যই আনন্দ খুঁজে নিয়েছি, এই ক্যাম্পাসই এখন আমাদের দ্বিতীয় পরিবার হয়ে উঠেছে।”
আরেক নিরাপত্তা কর্মী আজিজুর বলেন, এইখানে এটা আমার প্রথম ঈদ, মন চাই বাড়িতে গিয়ে মায়ের সাথে ঈদ করতে। মায় কইছিলো বাড়ি যাবার জন্য কিন্তু মাকে মোবাইলে বলছি এবার আমার ছুটি নেই ঈদে আসা হবে না। বলছিলেন, ছুটি না থাকলে যাওয়া যায় না ঝামেলা হয়”
উল্লেখ্য, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ২২ জন আনসার কর্মী নিরাপত্তার দায়িত্বে কাজ করেন। এর মধ্য প্রতিমাসে মাসিক ছুটির অংশ হিসাবে চারজন ছুটি পান। ঈদেও চারজন ছুটি পাবেন।