আলকুশি একটি গুল্ম জাতীয় গাছ। সংস্কৃত নাম আত্মগুপ্তা। বৈজ্ঞানিক নাম গঁপঁহধ ঢ়ৎঁৎরবহং। ইংরেজি নাম ভেলভেট বিন। চট্টগ্রাম অঞ্চল মানুষের নিকট বানরের শলা বা বানরের হুলা নামে পরিচিত।এই ঔষধী সম্পুর্ণ গাছটি। এই লতা গাছটি আগে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেলেও বর্তমানে গাছটি বিলুপ্তী পথে।চট্টগ্রামে হাটহাজারীতে আলকুশী লতা গাছটি বিভিন্ন পথে প্রান্তরে দেখা মিললেও বিশেষ করে উপজেলার ধলই, মির্জারপুর,ফরহাদাবাদ পৌরসদর,চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পাহাড়ী এলাকা বেশী দেখা যায়।এই গাছটি বিষ বৃক্ষ নামে মানুষের নিকট পরিচিত বলে এ গাছটি পুড়িয়ে বা কেটে ফেলে দেয়। বর্তমানে আলকুশী গাছ অধিকাংশ মানুষ এই গাছটির সাথে পরিচিত নয়। এটি শিম পরিবারের একটি উদ্ভিদ। ফল অনেকটা শিমের মতো, ৪ থেকে ৬ টা বীজ থাকে। শুকনো ১০০টি বীজের ওজন হচ্ছে ৫৫-৮৫ গ্রাম। বীজগুলো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র লোম দ্বারা আবৃত থাকে যা সহজেই পৃথক হয়ে যায়। এগুলি ত্বকের সংস্পর্শে এলে প্রচণ্ড চুলকানি সৃষ্টি করে। বানরের সঙ্গে এদের সম্পর্ক হল, যখন আলকুশি ফল পুষ্ট হতে থাকে তখন চুল্কানির ভয়ে বানরের দল ঐ এলাকা ছেড়ে চলে যায়, কারণ এর হুল বাতাসেও ছড়িয়ে পড়ে। বানরেরা ফিরে আসে যখন মাটিতে ফল পড়ে যায়। সেগুলো তারা খায় বিশেষ দৈহিক কারণে। আলকুশি সাধারণত বর্ষজীবী লতা, কখনো কখনো বহুবর্ষজীবী হতে পারে। প্রতি এক বছরে ১৫ মিটারের মতো লম্বা হয়। লতা ও পাতা শিমগাছের মতো।ফুল ঈষৎ বেগুনি, কোনো কোনো প্রজাতি সাদা কিংবা গোলাপি রঙের। শুঁটি ২ থেকে ৩ ইঞ্চি লম্বা, একটু বাঁকা। ফল লম্বাটে, মাথার দিকে বাঁকানো, রোমশ ও ধূসর রঙের। গায়ে লাগলে ফুলে ওঠে ও চুলকায়। সারা বছরই পর্যায়ক্রমে ফুল ও ফল পাওয়া যায়। বিভিন্ন বনৌষধি গ্রন্থে এ গাছের অসংখ্য কার্যকর ব্যবহারের কথা উল্লেখ করেছেন। গাছের স্বাদুরস বায়ু ও ক্ষয়নাশক, রক্তদোষ ও ব্রণনাশক। বীজ ভেঙে মাশকলাইয়ের সঙ্গে শরবত বানিয়ে খেলে শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তাছাড়া গাছের বীজ, শাক ও মূল বাত, জ্বর এবং কৃমি প্রতিরোধে কার্যকর। বিছার কামড়ে বীজগুঁড়া লাগালে কাজ হয়। এই বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষিবিদ আল মামুন সিকদার জানান,আলকুশি গাছ বহুরোগের ঔষধে গুনাগুন সমৃদ্ধ। কেউ বিড়াল কামছি বা বিড়াল চিমটি নামে অঞ্চল ভেদে বিভিন্ন নামে বলা হয়। তবে এটা বিচ্ছুটি বা দয়ার গুরা নামে পরিচিত। এটি শিম জাতীয় লতা গাছ,অন্য গাছে বেয়ে উঠে। এই গাছটি নষ্ট বা ধংস করা নয়।তাই এই গাছটি বাঁচিয়ে রাখা আপনার আমার সবার দায়িত্ব।