পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পাবিপ্রবি) থেকে শিবির সন্দেহে তিন শিক্ষার্থীকে ধরে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। পরে তাদেরকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করলে পুলিশ তাদের আটক দেখায়। আটককৃত শিক্ষার্থী তিনজন হলেন- লোক প্রশাসন বিভাগের গোলাম রহমান জয়, ইংরেজি বিভাগের আসাদুল ইসলাম এবং ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের আজিজুল হক।
জানা যায়, মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) রাত আনুমানিক বারোটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাশ থেকে ঐ তিন শিক্ষার্থীর কাছে শিবিরের বই পুস্তক পেয়ে সন্দেহ করে পুলিশকে জানায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। এরপর রাত একটার দিকে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের নামে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে শেষে পুলিশের কাছে তুলে দিয়েছে ছাত্রলীগ।
এ বিষয়ে পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, রাত ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কামাল হোসেন থানায় ফোন করে পুলিশে সহায়তা চান। তিনি জানান ক্যাম্পাসে শিবিরের কর্মী আটক হয়েছেন। তার ফোন পেয়ে আমরা সেখানে উপস্থিত হয়ে দেখতে পাই- তিন শিক্ষার্থী রক্তাক্ত অবস্থায় রয়েছেন। পরে আমরা তাদের সেখান থেকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসি। সেখানে তাদের চিকিৎসা চলছে। তদন্ত সাপেক্ষ তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
ছাত্রলীগ সূত্র জানায়, মঙ্গলবার রাতে আনুমানিক বারোটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাশে শিবিরের ১৫-২০ জন কর্মী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রবিরোধী গোপন মিটিং করছেন বলে খবর পান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। খবর পেয়ে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী ঘটনাস্থলে ছুটে যান। এ সময় শিবিরের ছেলেরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ঘটনাস্থল থেকে লোক প্রশাসন বিভাগের জয়, ইংরেজী বিভাগের আসাদ এবং ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের আজিজকে ধরে ফেলে ছাত্রলীগ কর্মীরা। এরপর তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে নিয়ে যাওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের সঙ্গে শিবিরের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। তাদের কাছ থেকে শিবিরের কিছু বই ও নথি পাওয়া যায়। পরে রাত একটার দিকে প্রশাসনের সহায়তায় ঐ তিন শিক্ষার্থীকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফরিদুল ইসলাম বাবু বলেন, যে ছেলেদের ধরা হয়েছে তারা শিবির কর্মী বলে স্বীকার করেছে। ওরা প্রশাসনের কাছে লিখিত দিয়েছে ওরা শিবির করে। আমরা প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টা, হল প্রভোস্ট সহ সবাইকে ফোন দেওয়ার পর প্রশাসনের সামনে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করি। পরে আমরা প্রশাসনের সহায়তায় তাদের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. কামাল হোসেন বলেন, ঘটনা শুনে ছাত্র উপদেষ্টা, হল প্রাধ্যক্ষ সহ কয়েকজন শিক্ষক আমরা ঘটনাস্থলে যাই। শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞাসাবাদ করার পর তারা শিবির বলে স্বীকার করে নেয়। এ সময় তাদের কাছে শিবিরের বই-নথিসহ বিভিন্ন কাগজপত্র পাই। আমরা তাদেরকে পুলিশে সোপর্দ করেছি। এখন পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।