বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) ফের অগ্নিকাণ্ডের মাধ্যমে সাপ অপসারণ ও আবর্জনা পোড়ানোর ঘটনা ঘটেছে। বুধবার ( ৫ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে বারোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলের সামনে আবর্জনার স্তুপে এই আগুন দেয়া হয়। তবে এতে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হলের সামনে পরিষ্কার করে রাখা ঘাস, ময়লার স্তুপে আগুন দেওয়া হয়েছে। এতে আবর্জনা স্তুপের আশেপাশের অনেকটা অংশজজুড়ে কাচা ঘাস একটি গাছ পুড়ে যায়। আগুন ক্রমশ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়তে থাকলে হলের দু’জন কর্মচারী একজন পানির পাইপ দিয়ে পানি দেওয়ার চেষ্টা করছিন, আরেকজন চটের বস্তা দিয়ে আগুনের গতি রোধের চেষ্টা করছিলেন।
বঙ্গবন্ধু হলের একাধিক শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, “দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে রুমগুলোতে ধোয়ার সৃষ্টি হয় পরে জানতে পারি হলের সামনে আগুন দেওয়া হয়েছে।”
উক্ত হলের ৪০০২ নাম্বার রুমের আবাসিক শিক্ষার্থী রুস্তম আলি বলেন, আমি ঘুমিয়ে ছিলাম ঘুম থেকে উঠে দেখি রুমে প্রচুর ধোঁয়া।
আগ্নিকাণ্ডের সম্পর্কে জানতে চাইলে, বঙ্গবন্ধু হলের সেকশন অফিসার হুমায়ন কবির বলেন, “অগ্নিকাণ্ড ঘটানো হয়েছে আবর্জনা পরিষ্কার ও ঐ আবর্জনা স্তুপের মধ্য সাপের আস্তানা রোধের জন্য। সামনে বর্ষাকাল সাপের উপদ্রব যেন বাড়তে না পারে সেজন্যই প্রধ্যাক্ষের অনুমতি নিয়েই আমাদের দুইজন কর্মচারীর তত্ত্বাবধানেই আগুন দেওয়া হয়েছে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের এ্যাকাউন্টিং বিভাগের ২০১৬- ১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শামীম আহসান বলেন,”আগুন লাগিয়ে পরিচ্ছন্ন কাজ করা প্রকৃতির সাথে পশুত্ব ছাড়া কিছু নয়। আমরা বারবারই দেখেছি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এভাবে বিভিন্ন সময় আগুন লাগিয়ে ক্যাম্পাস পরিচ্ছন্ন করে আসছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। পাশাপাশি বন ও পরিবেশের ক্ষতি করে কেন বারংবার এমন কাজ করা হচ্ছে আমরা তার সমীচীন কারণ জানতে চাই।”
বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোস্ট সহযোগী অধ্যাপক আরিফ হোসেন বলেন, “আগ্নিকাণ্ড ঘটানো হয়েছে ধোঁয়া আর তাপ দিয়ে আবর্জনা স্তুপের সাপ অপসারণের জন্য, শিক্ষার্থীদের সার্বিক কল্যানের জন্যই ঘটনাটি ঘটনো হয়েছে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায়ই কারনে অকারণে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পরিবেশের উপরে এর প্রভাব সম্পর্কে জানতে চাইলে, ববি উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সুব্রত কুমার দাশ বলেন, আগুন দিয়ে এমন আবর্জনা পোড়ালে এতে কার্বনডাইঅক্সাইড গ্যাস নির্গত হয়ে পরিবেশ দূষণ করে। কোনভাবেই আবর্জনা পুড়িয়ে বিনাশ না করে কম্পোস্ট প্রক্রিয়া করাই উত্তম৷ এইসমস্ত বিষয়ের সাথে সংশ্লিষ্টদের আরো সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত ।”