শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. তোফাজ্জল হোসেনের বিরুদ্ধে নামমাত্র প্রকল্প দেখিয়ে সরকারের ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগ গঠিত তদন্ত কমিটি দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে। কমিটি ২০২২ সালের ২১ নভেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, বরমী ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে আটটি ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। যেসব রাস্তায় প্রকল্প দেখানো হয়েছে তা আগে থেকেই পাকা। এছাড়াও যেটুকু কাজ হয়েছে তা শুধু লোক দেখানো। বাস্তবে তদন্ত কমিটি দৃশ্যমান কোনো ধরনের মিল খুঁজে পায়নি। এছাড়াও একই রাস্তায় চারটি প্রকল্পও দেখানো হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা করেননি চেয়ারম্যান তোফাজ্জল। ইউপি সদস্যদের সঙ্গে চেয়ারম্যান কোনো ধরনের পরামর্শ ও রেজুলেশন ছাড়াই প্রকল্প দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেন। প্রকল্পের কাজ শেষ করার আগে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনেরও প্রমাণ মিলেছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর চেয়ারম্যান কর্তৃক তড়িঘড়ি করে মাটি ভরাটের প্রমাণও পাওয়া গেছে। এ ঘটনার সঙ্গে পরিষদের তৎকালীন সচিব নজরুল ইসলাম ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বরমী ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ সরাসরি জড়িত। প্রকল্পের যেসব স্থানে কাজ দেখিয়ে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সাতখামাইর পাকা রাস্তা থেকে দাইবাড়ি টেক অভিমুখে রাস্তায় কার্যাদেশ অনুযায়ী কোনোরূপ কাজ করা হয়নি। সাতখামাইর বাজার থেকে রেললাইনের পাশদিয়ে ডালেশহর অভিমুখে রাস্তায় ইটবালি দিয়ে সংস্কারের কথা থাকলেও কোনো কাজ হয়নি। দরগারচালা বাজার থেকে ডালেশহর অভিমুখে রাস্তায় কোনো কাজ হয়নি। এছাড়াও বাকি প্রকল্পগুলোতেও দৃশ্যমান কোনো কাজ হয়নি বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। বরমী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সচিব নজরুল ইসলাম বলেন, চেয়ারম্যান তার সরলতার সুযোগ নিয়েছেন। তিনি এসব বিষয়ে কিছুই অবহিত নন। তিনি বর্তমানে কালিয়াকৈর উপজেলার আটাবহ ইউনিয়নের সচিব হিসেবে কর্মরত। গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান জানান, গঠিত তদন্ত কমিটি ইতিমধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ই পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (ইউনিয়ন পরিষদ অধিশাখা) মোহাম্মদ ফজলে আজিম জানান, চেয়ারম্যানের দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে তদন্ত কমিটি। তিনি বিশেষ কাজে মন্ত্রণালয়ের বাইরে অবস্থান করায় পরবর্তী ব্যবস্থা সম্পর্কে তাৎক্ষণিক বিস্তারিত জানাতে অপারগ।