গাজীপুর মহানগরীর দক্ষিণ সালনার উত্তর মোল্লাপাড়া এলাকায় মায়ের হাত, পা এবং চোখ-মুখ বেঁধে কলেজ পড়ুয়া ছেলেকে হত্যা করে ডাকাতির ঘটনার ১২দিন পরে ৫জনকে গ্রেপ্তার করেছে জিএমপি’র গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। গত ২২ মার্চ বুধবার বিকেলে ঢাকার খিলক্ষেত ৩নং রোড থেকে একজন এবং ২৪ মার্চ শুক্রবার গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় থেকে অপর চার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার পোড়াবাড়ী গ্রামের আব্দুল ছালামের ছেলে আবু তাহের (২৯), গাজীপুর মহানগরীর দক্ষিণ সালনা মোল্লাপাড়া এলাকার মৃত সামরুদ্দিনের ছেলে মফিজউদ্দিন ওরফে মফু (৩৭), উত্তর সালনা পালোয়ান পাড়া এলাকার নুরুল ইসলাম পালোয়ানের ছেলে খোকন মিয়া, দক্ষিণ সালনা মিয়াপাড়া এলাকার হাবিবুল্লাহর ছেলে আজিজুল হাকিম (২৮) এবং দক্ষিণ সালনা মোল্লাপাড়া মৃত আব্দুল হাকিমের ছেলে আব্দুল মালেক (৩২)। গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে ডাকাতির ১০ হাজার টাকাসহ ঘটনাস্থল ওই বাড়ীর পাশ^বর্তী ধানক্ষেত থেকে গ্রীল কাটার উদ্ধার করা হয়। তাদের মধ্যে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তারকৃত আবু তাহের গত ২৩মার্চ বৃহস্পতিবার গাজীপুর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। অন্যান্যদের ২৪মার্চ শুক্রবার গাজীপুর আদালতে পাঠানো হয়। শনিবার বেলা সাড়ে ১১ টায় ডিবি কার্যালয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিসি) ইব্রাহিম খান জানান, গত ১২ মার্চ দিনগত রাত ৩টার দিকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন সদর থানার দক্ষিণ সালনার উত্তর মোল্লাপাড়া এলাকার মেহজাবিন আক্তারের বাড়িতে ৬/৭ জনের একদল ডাকাতদল দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দ্বিতলভবনের জানালার গ্রীল কেটে ঘরে প্রবেশ করে। এসময় গৃহকত্রী মেহজাবিন আক্তার তার শয়ন কক্ষে এবং ছেলে মাহিউস সুনান চৌধুরী ও তার মেয়ে উম্মে ওয়ারা তাদের শয়ন কক্ষে ঘুমিয়ে ছিলেন। পরে ডাকাতরা অস্ত্রের ভয়-ভীতি দেখিয়ে মা মেহজাবিনের হাত, পা এবং চোখ-মুখ বেঁধে রেখে ছেলে মাহিউস সুনান চৌধুরীর শয়ন কক্ষে প্রবেশ করে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে নগদ ২৫ হাজার টাকাসহ মোট আনুমানিক ৬ লাখ ৭৫ হাজার ৫০০শ টাকা মূল্যের স্বর্ণালংকার লুট করে ভোররাত সাড়ে ৪ দিকে ছাদে উঠে জানালার গ্রীল বেয়ে নিচে নেমে পালিয়ে যায়। এক পর্যায়ে গৃহকত্রী মেহজাবিন আক্তার ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের ডাক-চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসে। সংবাদ পেয়ে গাজীপুর মেট্রেপলিটন সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে সার্বিক বিষয়ে তদন্ত শুরু করে। এ ঘটনায় নিহত কলেজ ছাত্র মাহিউস সুনান চৌধুরীর মা মেহজাবিন আক্তার (৫০) থানায় অজ্ঞাত ৬/৭ জনকে আসামীকরে একটি খুনসহ ডাকাতি মামলা দায়ের করেন। পরে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে যাচাই-বাছাই শেষে সন্ধিগ্ধ আসামী হিসেবে তাহেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে তার সহযোগীদের নাম প্রকাশ করে। পরে তার দেয়া তথ্যমতে ঘটনায় জড়িত অপর চার আসামীকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে ডাকাতি ও ডাকাতির প্র¯‘তির দুইটি মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।