গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থাকবে কিনা তা নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। আসন্ন ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। বুধবার (২২ মার্চ) এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপনের মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেন তারা।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০৫ অনুযায়ী একাডেমিক কাউনন্সিল ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের সর্বোচ্চ কৰ্তৃপক্ষ। গত ১৫ মার্চ ২০২৩ এ বিশেষ একাডেমিক কাউন্সিল সভায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এককভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। জাতীয় সংসদ কর্তৃক প্রণীত এই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সময়ক্ষেপণ না করে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তির প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে আহবান জানান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. একেএম লুৎফর রহমান বলেন, আমরা চাই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়য়ের আইন মেনে চলতে। তবে এর লঙ্ঘন হলে এর দ্বায়ভার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা নেবে না।
তিনি আরো বলেন, গুচ্ছ ভর্তি পদ্ধতি ভর্তিচ্ছুদের হয়রানি বন্ধের উদ্দ্যেশে করা হলেও আদতে হয়রানি বহুগুণ বেড়ে যায়। এছাড়া ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস এর মতো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে গুচ্ছের আওতায় আনতে না পারার কারণে ভর্তিচ্ছুদের হয়রানি বন্ধের উদ্দ্যোগ অকার্যকর। রাজধানীতে অবস্থানের কারণে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় গত দুবছর আগেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরেই ভর্তিচ্ছুদের পছন্দের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে স্থান করে নিয়েছিল। কিন্তু গুচ্ছের মত একটি অদূরদর্শী প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্তির ফলে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান অবনমন করা হয়েছে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একই দিনে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার কারণে ভর্তিচ্ছুদের আলাদা করে কোন ভোগান্তি ছিল না। এখন দুইবার ঢাকায় আসতে হচ্ছে। কাজেই ভোগান্তি লাঘব হয়নি। গভীর চিন্তা-ভাবনা ও প্রয়োজনীয় গবেষণা ব্যতীত, বলপূর্বক চাপিয়ে দেয়া এ পদ্ধতিতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সমন্বিতভাবে পরীক্ষা নিতে গিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বকীয়তা বিসর্জন, বিলম্বে পরীক্ষা গ্রহণের কারণে সেশনজট সৃষ্টি, শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমার পরিবর্তে আরও বৃদ্ধি, আর্থিক স্বচ্ছতার অভাব, অপেক্ষাকৃত দুর্বল মেধার শিক্ষার্থী প্রাপ্তি ইত্যাদি বহুবিধ সমস্যার কারণে সামগ্রিকভাবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুণগতমান ও সুনাম ব্যাপকভাবে ক্ষুণ্ন হচ্ছে।