ঝালকাঠি থানায় দায়ের হওয়া একটি গায়েবি মিথ্যা ছিনতাই ও চুরি মামলায় জামিন পেয়েছেন ঝালকাঠি ইকোপার্ক রক্ষা আন্দোলনের সদস্য সচিব উপজেলা ভাইসচেয়ারম্যান মঈন তালুকদারসহ আটজন। জামিনপ্রাপ্ত ৮ জনের মধ্যে ৪জন আওয়ামীলীগ ও দুইজন যুবলীগ নেতা, একজন সরকারি কর্মকর্তা এবং একজন সমাজকর্মী। ঝালকাঠির সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবুল কালাম আজাদ তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
গত ০৭ ফেব্রুয়ারি পৌরসভার মেয়র মোঃ লিয়াকত আলী তালুকদারের তৃতীয়পুত্র মোঃ শফিকুল ইসলাম টিটু বাদী হয়ে ঝালকাঠি থানায় দন্ডবিধির ১৪৩,৩৪১,৩২৩,৩০৭,৩৭৯ ও ৫০৬ ধারায় এ মামলাটি দায়ের করেছিলেন। মামলায় আসামী করা হয় ঝালকাঠি ইকোপার্ক রক্ষা ও নদী খাল বাচাঁও আন্দোলনের সদস্য সচিব, জেলা আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক উপজেলা ভাইসচেয়ারম্যান মঈন তালুকদার, জেলা আওয়ামীলীগের বন ও পরিবেশ সম্পাদক খসরু নোমান, শহর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন শাহীন ও সোয়েবুর মোর্শেদ সোহেল, রাজাপুর উপজেলা সদ্য অবসরপ্রাপ্ত যুব উন্নয়ন কর্মকর্র্তা ইকোপার্ক আন্দোলনের যুগ্নআহবায়ক মু. আল-আমিন বাকলাই, সমাজকর্মী আক্তার হোসেন, শহর যুবলীগ যুগ্নআহবায়ক কাজী মারুফ ইরান ও দৈনিক নবচেতনার ঝালকাঠি প্রতিনিধি বাদল হোসেনকে। মামলা দায়েরের এক সপ্তাহ পর গতকাল বুধবার সকল আসামীরা আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিন আবেদন করেন। তাদেঁর পক্ষে আদালতে জামিন শুনানী করেন ঝালকাঠি আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট বনি আমীন বাকলাই, এডভোকেট সনজিব কুমার বিশ্বাস এডভোকেট মনিরুল ইসলাম ভুইয়া, এডভোকেট শামীম আলম বাবু ও এডভোকেট আককাস সিকদার । শুনানী শেষে আদালত প্রত্যেককে একহাজার টাকা বন্ডে পুলিশ রিপোর্ট পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেন।
কথিত মামলায় শফিকুল ইসলাম টিটু অভিযোগ করেন, গত ০৭ ফেব্রুয়ারি বিকালে তিনি বরিশাল থেকে মোটরসাইকেলযোগে ঝালকাঠি আসার পথে পূর্বচাদকাঠি আলমগীর কমিশনারের বাড়ির সামনে তার গতিরোধ করে আসামীরা জানতে চায় “ কেন বরিশাল সাইবার ট্রাইব্যুনালে তাদের নামে মামলা করেছি ”। উল্লিখিত কথা বলেই আসামীরা আমার গলা চাপিয়া ধরিয়া হত্যার চেস্টা করে এবং ৩নং আসামী সোয়েবুর মোর্শেদ সোহেল টিটুর পকেট থেকে একলাখ পচিশ হাজার টাকা মূল্যের একটি আইফোন এবং ৪নং আসামী খসরু নোমান পকেটে থাকা দুইলাখ পচাত্তর হাজার টাকা জোড়পূর্বক নিয়া যায়।
ইকোপার্ক আন্দোলনের সদস্য সচিব মঈন তালুকদার অভিযোগ করেন, গত কয়েক মাস যাবৎ তাঁরা ঝালকাঠি ইকোপার্ক বাস্তবায়নের জন্য নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করে যাচ্ছেন। ঝালকাঠি পৌরসভার মেয়র ও তার পুত্র ঠিকাদার মনিরুল ইসলাম তালুকদার মিথ্যা কাগজপত্র দিয়ে আদালতে মামলা করে ইকোপার্কের ৮৮ একর জমির মালিকানার পক্ষে ডিক্রী হাসিল করে। অতিঅল্প সময়ে সরকারের ৮৮ একর জমির রায় তাদের পক্ষে নেয়ায় বিষয়টি নিয়ে ঝালকাঠির বিচার বিভাগ ও প্রশাসন নড়েচরে বসে। জেলা প্রশাসক ইকোপার্কের জমি রক্ষার জন্য ঝালকাঠির যুগ্মজেলা জজ ১ম আদালতে ডিক্রী রদের মামলা দায়ের করেন । একই সাথে আমি মঈন তালুকদারসহ অপর চারজন বাদী হয়ে জনস্বার্থে ডিক্রী রদের জন্য একটি মামলা দায়ের করি। ইকোপার্ক রক্ষার জন্য আদালতে মামলা এবং রাজপথে আন্দোলন করার কারনে পৌরসভার মেয়র এবং তাঁর পুত্ররা আমাদের নানা রকম ভয়ভিতী এবং সাইবার ট্রাইব্যুনালসহ থানায় মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছে। জেলা আওয়ামীলীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক খসরু নোমান বলেন, মামলা হয়রানী যতই হোক ইকোপার্ক বাস্তাবায়নের জন্য এবং আমাদের নামে মিথ্যা গায়েবি মামলা প্রত্যাহের দাবীতে আমরা নতুন আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করবো।