চরফ্যাশনে অনাবাদি জমিতে দেশীয় প্রজাতির তরমুজ চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন কলেজ পড়ুয়া তিন শিক্ষার্থী। লেখা পাড়ার পাশাপাশি উপজেলার ওসমানগঞ্জ ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড তিন বন্ধু মিলে ১শ ৬৫ শতাংশ জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন। নিজেরদের উদ্দ্যেগে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয় করে তরমুজ চাষ করে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা আয়ের স্বপ্ন দেখছেন তারা। সরেজমিনে গিয়ে জানাযায়, খেত পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন তানজিল, স্বাধীন ও ফাহিম নামের তিন শিক্ষার্থী। ভোলা সরকারী কলেজ ও কবি নজরুল ইসলাম কলেজে পড়ুয়া তিন শিক্ষার্থী ‘কারো যেন এক ইঞ্চি জায়গাও খালি না থাকে’ সে কথায় উদ্বুদ্ধ হয়ে কৃষিক্ষেত্রে মনোনিবেশে করতে নিজেদের প্রচেষ্টায় ওসমানগঞ্জ ইউনিয়নের অনাবাদি ১শ ৬৫ শতাংশ জমিতে দেশীয় প্রজাতির তরমুজ চাষের উদ্যোগ নেন। নিজেদের প্রচেষ্টায় ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ব্যয় করে বাম্পার ফলন পেয়েছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এসব ফলনের বাজার মূল্য দাড়াবে সাড়ে ৩ লাখ থেকে ৪ লাখ টাকা। এক একটি তরমুজ প্রায় ১২-১৪ কেজি ওজন হয়েছে। পড়াশোনার পাশাপাশি তরমুজ চাষ করে চমক লাগিয়েছে তিন শিক্ষার্থীরা। স্থানীয়রা জানান, তাদের এই সাফল্যে দেখে এলাকার অনেক যুবকই আগামীতে তরমুজ চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন এবং তারা বলছেন আমাদের পার্শ্ববর্তী এই তিন কলেজ শিক্ষার্থী যেভাবে নতুন হয়েও তরমুজ চাষে চমক দেখিয়েছেন আশাবাদী তরমুজ চাষ করে আগামীতে আমরাও ভালো কিছু করতে পারবো। হাচান নামের এক যুবক বলেন,এই প্রথমবারের মতো তিন (বন্ধু) কলেজ শিক্ষার্থী আমাদের এলাকায় তরমুজ চাষ করছেন, তাদের খেতে ভালো ফলনও হয়েছে। সামনের দিনে আমরাও তরমুজের চাষ করবো । হেলাল নামের একজন চাষী বলেন, আমি আজকে কয়েক বছর তরমুজসহ নানা ফসল চাষ করে থাকি। তিনজন কলেজ শিক্ষার্থী খুবই পরিশ্রমী। তাদের এই পরিশ্রমে ফল সরূপ তাদের খেতে ভালো তরমুজের ফলনও হয়েছে।তাদের এ তরমুজ ক্ষেত দেখতে মানুষ ভিড় করছেন। কেউ কেউ ক্ষেত থেকে টাটকা তরমুজও কিনছেন। সব মিলিয়ে যেন একটা উৎসবের আমেজ। ওসমানগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী মৎস্যলীগের সভাপতি জানান, আমাদের এলাকার বেশির ভাগ মানুষই কৃষি কাজের উপরে নির্ভরশীল এই তিন শিক্ষার্থী লেখা পড়ার পাশাপাশি যে কৃষি কাজে উদ্বুদ্ধ হবেন এবং চাষাবাদ করবেন আমরা তা কল্পনাও করি নাই। লেখাপাড়ার পাশাপাশি তরমুজ চাষ করে শিক্ষার্থীরা সাফল্য অর্জন করেছেন। শিক্ষার্থী মমিনুল ইসলাম তানজিল, কিশোর মাহামুদ স্বাধীন ও ফয়েজুল ফাহিম জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলছেন, ‘কারো যেন এক ইঞ্চি জায়গাও খালি না থাকে’ সে কথায় উদ্বুদ্ধ হয়ে কৃষিক্ষেত্রে মনোনিবেশ করতে তারা তিন বন্ধু মিলে লেখাপাড়ার পাশাপাশি তরমুজ চাষ করার সিদ্ধান্ত নেন। ভালো বীজ সংগ্রহ করে চাষ আবাধ শুরু করে প্রথমে পোঁকাড় আক্রমনে কিছুটা হোঁচট খেতে হয়েছে তাদের। পরে তিনবন্ধু মিলে নিবির পারচর্যা করে পর্যায়ক্রমে তারা বাম্পার ফলন পেয়েছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভালো বাজার মূল্য পাবেন বলে তারা আশাবাদী। চরফ্যাশন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ওমর ফারুক জানান, এই প্রথম বারের মতো শিক্ষার্থীরা চাষ আবাদে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। লেখাপড়ার পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা চাষ আবাদে উদ্বুদ্ধ হলে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে তাদের সার্বিক সহযোগিতা দেয়া হবে।