উপকূলের জন্য হোক একটি দিন, কণ্ঠে বাজুক প্রান্তজনের কথা’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে ভোলার চরফ্যাশনে পালন করা হয়েছে উপকূল দিবস। রবিবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে চরফ্যাশন প্রেসক্লাবের আয়োজনে আলোচনা সভা, র্যালি ও দোয়া মোনাজাতের মধ্য দিয়ে এ দিবসটি পালন করা হয়েছে। প্রেসক্লাবের সভাপতি অধ্যক্ষ আবুল হাসেম মহাজনের সভাপতিত্ব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, ভোলা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিন আখন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম ভিপি, পৌর মেয়র মো. মোরশেদ। এছাড়া চরফ্যাশন প্রেসক্লাবের সকল সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভায় সংসদ সদস্য জ্যাকব বলেন, ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর রাতে ঘূর্ণিঝড় ‘হেরিকেন’ আঘাত হেনেছিলো ভোলাসহ দেশের উপকূলীয় জেলাগুলোতে। সর্বোচ্চ ২৫০ কিলোমিটার বেগে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড়ের বাতাসের তোড়ের সঙ্গে ৩০ ফুট উচ্চতায় বঙ্গোপসাগরের জলোচ্ছ্বাস ভাসিয়ে নেয় সব কিছুই। সেসময়ে সরকারি হিসেবে উপকূলের ৫ লাখ মানুষের প্রাণহাণী বলা হলেও সংখ্যাটা ছিলো দ্বিগুন; ১০ লাখ। সেই ভয়াবহ স্মৃতি নিয়ে আজো বেঁচে আছেন অনেকে। স্বজন হারানো সেই বিভীষিকাময় দিনটি মনে পড়তেই আঁতকে উঠছেন কেউ কেউ। উত্তাল মেঘনা নদী আর তার শাখা-প্রশাখাগুলো রূপান্তরিত হয়েছিল লাশের মিছিলে। ঝড়ের আঘাতে লণ্ড-ভণ্ড হয়েছিলো পুরো ভোলা। নদীতে এত মরদেহ ছিল যে মহকুমা প্রশাসন মাছ ধরায় পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা জারি করে। প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মনির আহমেদ শুভ্র বলেন, আজকের বর্তমান, আগামীতে ইতিহাস। ইতিহাস যুগযুগ ধরে তথা অনন্তকাল ধরে মানুষ লালন করে থাকে। আমরা জানি, মানুষ ইতিহাস থেকেই শিক্ষা নেয়, অভিজ্ঞতা অর্জন করে। আর বিশেষ কোনো ‘দিবস’ যার মাধ্যমে প্রতি বছর আগের ইতিহাসকে স্মরণ করে। তেমনি একটি দিবস ‘উপকূল দিবস’। যে দিবসের জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম করেও আজও স্বীকৃতি পাওয়া যায়নি। তিনি অনতিবিলম্বে এই দিনটিকে সরকারিভাবে ‘উপকূল দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করার জোর দাবি জানান।