ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় এই প্রথম বিষমুক্ত সবজি চাষ শুরু করা হয়েছে। উপজেলার চর মাদ্রাজ ইউনিয়নে ১ শ’ একর জমিতে ৫’শত কৃষক কৃষি বিভাগের ‘পরিবেশ বান্ধব কৌশলের মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদন প্রকল্প’র আওতায় জৈব বালাইনাশক পদ্ধতিতে সবজি চাষ করছেন।
ফুলকপি, বাঁধা কপি, শিম, কড়লা, টমেটো, লাউ, মিষ্টি কুমোর, বরবটি, বেগুনসহ বিভিন্ন ধরণের শীতকালীন সবজির চাষে ভালো ফলন এসেছে। ইতোমধ্যে কৃষকরা তাদের ক্ষেতের ফলন বাজারে বিক্রি শুরু করেছেন। ভালো দাম পেয়ে খুশি তারা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, সাধারণত কৃষকরা সবজি চাষে রোগ-বালাই ও পোকা-মাকড় দমনে বিভিন্ন কীটনাশক ব্যবহার করে থাকে। সবজিতে এসব কীটনাশকের প্রভাব ১০ থেকে ১৫ দিন পর্যন্ত থাকে। এ সময়ের মধ্যে এসব সবজি মানুষ খেলে এর ক্ষতিকর প্রভাব মানব দেহে বিস্তার করার আশংকা থেকে যায়। অনেক কৃষক না বুঝেই এ সময়ের মধ্যে সবজি বাজারে বিক্রি করে। তাই এসব ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে এ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
ওই ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল বারেক, ওমর ফারুক ও মো.আকতার জানান, তারা আগে কীটনাশক দিয়ে সবজির চাষ করতেন। কিন্তু এবছরই কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় ২ একর জমিতে ফুল কপি, বাঁধা কপি, কড়লা, টমেটো ও বরবটি চাষ করেছেন। এতে তাদের খরচ হয়েছে প্রায় ১ লাখ টাকা। প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে এবার সবজি চাষ করায় ক্ষেতে রোগ ও পোকা-মাকড়ের আক্রোমণ খুবই কম দেখা দিয়েছে। যার ফলে তারা লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।
অপর কৃষক মো.ইউসুফ ও বেল্লাল হোসেন জানান, আমাদের এ সবজি বিষ মুক্ত হওয়ায় ক্রেতাদের কাছে চাহিদা অনেক বেশি। বাজারে অন্য সবজির চেয়ে এটির দামও আমরা ভালো পেয়ে থাকি। এছাড়াও এ সবজি ক্রয় করতে পাইকাররা সরাসরি ক্ষেতে চলে আসে। ভালো দাম দিয়ে ক্রয় করে দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠান তারা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.ওমর ফারুক জানান, চলতি বছরের অক্টোবর মাসে এ কার্যক্রম চালু করা হয়। জৈব বালাইনাশক পক্রিয়ায় সবজির কোন পাশর্প্রতিক্রিয়া থাকেনা। এটি সম্পূর্ণ একটি অর্গানিক পদ্ধতি। বিভিন্ন গাছের নির্যাস দিয়ে এ পব্দতি ব্যবহার করা হয়। এতে পরিবেশের কোন ক্ষতি হয়না। আমরা কৃষকদের বিভিন্ন কারিগরি প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন সহযোগিতা করছি।
তিনি আরও বলেন, নির্ধারিত জমি থেকে চলতি মৌসুমে প্রায় ৬’শ মেট্রিকটন সবজি উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ প্রকল্পে মোট ২০টি প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। বর্তমানে শীতকালীন সবজি চাষ হলেও পর্যায়ক্রমে অন্যান্য সবজি এ পক্রিয়ায় চাষ করা হবে। পরবর্তীতে সমগ্র উপজেলাকে বিষমুক্ত সবজি চাষে আদর্শ হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।