চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিভিন্ন উপজেলার উপকূলীয় বেড়িবাঁধ ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাছাড়া বাঁধের ভাঙন ঠেকাতে বসানো কংক্রিটের ব্লক সরে গিয়ে বেড়িবাঁধের তিনটি স্থানে ১ হাজার ৮০০ মিটার বাঁধ ভেঙে গেছে।বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে প্রতিদিন জোয়ারের লোনাপানি উপকূলীয় এলাকায় ঢুকে পড়ছে।
এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে স্থানীয়রা।পাশাপাশি জোয়ারের সময় সাগরের পানির আঘাতে প্রতিনিয়ত ভেঙে পড়ছে বেড়িবাঁধের মাটি। চলতি শুষ্ক মৌসুমে ভাঙা বেড়িবাঁধ মেরামত করা না হলে বর্ষা মৌসুমে পুরো বেড়িবাঁধ ভেঙে বিলীন হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান,সীতাকুণ্ডের সাগর উপকূলীয় এলাকায় মোট ২৬ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। প্রায় এক যুগ আগে অব্যাহত ভাঙনের ফলে বিলীন হয়েছে এ বাঁধের বিভিন্ন অংশ।
ভেঙে যাওয়া বাঁধের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ছিল বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের আকিলপুর, সোনাইছড়ির ঘোড়ামরা, কুমিরার আলেকদিয়ার সাগর উপকূলীয় বেড়িবাঁধ।
বাঁধের ভেঙে যাওয়া অংশ দিয়ে প্রতিনিয়ত জোয়ারের পানি ঢুকে প্লাবিত হতো উপকূলীয় এলাকার বাড়িঘর। লবণাক্ত পানি ঢোকার কারণে চাষাবাদ বন্ধ হয়ে অনাবাদি অবস্থায় পড়ে ছিল হাজার হাজার একর জমি।
বাঁধ সংস্কারের দাবিতে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে মানববন্ধন, সভা-সমাবেশসহ নানা ধরনের কর্মসূচি পালন করেন বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শওকত আলী জাহাঙ্গীর। তাঁদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালে আকিলপুরের ক্ষতিগ্রস্ত দুই কিলোমিটার বেড়িবাঁধ পানি উন্নয়ন বোর্ড পুনর্নির্মাণ করে। কিন্তু অবহেলিত রয়ে যায় সোনাইছড়ি ইউনিয়নের উত্তর ঘোড়ামরা ও দক্ষিণ ঘোড়ামরা সিকদার খাল ও কুমিরা আলেকদিয়া বেড়িবাঁধের ভাঙা অংশ।
স্থানীয়রা আরও জানান,ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসের প্রভাবে পুনরায় নির্মাণ করা আকিলপুর বেড়িবাঁধের ১ হাজার ২০০ মিটার অংশে কংক্রিটের ব্লক সরে যাওয়ার পাশাপাশি মাটি সরে ভেঙে গেছে পুরো অংশ। পাশাপাশি ভেঙে গেছে উত্তর ঘোড়ামরা, দক্ষিণ ঘোড়ামরা এবং সিকদার খাল এলাকার অন্তত ৬০০ মিটার বেড়িবাঁধ।
এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সিকদার খাল এলাকার একটি স্লুইসগেট।সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শাহাদাত হোসেন বলেন,আমি তিনটি বেড়িবাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ ঘুরে দেখেছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
এ ছাড়া ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পাউবোকে বলা হয়েছে।পাউবোর সহকারী প্রকৌশলী এস এম তারেক বলেন,আমরা বেড়িবাঁধের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণের পর তা প্রতিবেদন আকারে প্রধান কার্যালয়ে পাঠিয়েছি।বরাদ্দ পেলে দ্রুত সংস্কারকাজ শুরু করা হবে।