খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা স্কুলের আয়োজনে রবিবার ৫ দিনব্যাপী ৭ম বার্ষিক শিল্পকর্ম প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়। সকাল ১১টায় চারুকলা স্কুলের আঙিনায় এ প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন। এ সময়ে তিনি বলেন, শিল্পকর্মের সাথে মনের খোরাক ওৎপ্রোতভাবে জড়িত রয়েছে এবং শিল্পকর্মের মাধ্যমে মনের নান্দনিকতা প্রস্ফুটিত হয়। প্রতিটি মানুষের মধ্যে শিল্পীসত্ত্বা লুকায়িত রয়েছে। চারুকলা শিক্ষার্থীদের শিল্পীসত্ত্বা বিকশিত করার জন্য বার্ষিক শিল্পকর্ম প্রদর্শনী আয়োজন করা হচ্ছে এটি একটি অনন্য প্রয়াস বলে আমি মনে করি। নিজেকে বিকশিত করার জন্য যথোপযুক্ত পরিবেশসহ শিক্ষার্থীদের বিকশিত করতে চারুকলার শিক্ষকরা নিবেদিত হয়ে যেভাবে কাজ করে যাচ্ছে সে কারণের ফলেই আজ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দেশ-বিদেশে সুনাম ও খ্যাতি অর্জন করে চলেছে। তিনি আরও বলেন, চারুকলার বিকাশে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সবসময় পাশে থাকবে। চারুকলা স্কুলের জন্য আলাদা একটি ভবন তৈরির বিষয়টি মাস্টারপ্ল্যানে অন্তর্ভুক্ত করার প্রচেষ্টা চলছে। এরই পাশাপাশি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট ও একাডেমিক ভবনের সমস্যা সমাধানেও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। উপাচার্য আরও বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আজ শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্র প্রসারিত হচ্ছে এবং দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার সাথে রিসার্চ কোলাবরেশন ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের এক্সচেঞ্জ হচ্ছে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলতে শিক্ষকরা অগ্রণী ভূমিকা রাখছেন এবং নিজেদের মধ্যে সুস্থ প্রতিযোগিতা তৈরি হচ্ছে। এটি অত্যন্ত ভাল একটি দিক। তিনি শিল্পকর্ম প্রদর্শনীর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বিকশিত করার এ উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। চারুকলা স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. নিহার রঞ্জন সিংহ এর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর অমিত রায় চৌধুরী এবং রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস। এ সময় আরও বক্তৃতা করেন ভাস্কর্য ডিসিপ্লিনের প্রধান মোঃ আমিনুল ইসলাম এবং ড্রইং এন্ড পেইন্টিং ডিসিপ্লিন প্রধান রকিব হাসান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন প্রিন্টমেকিং ডিসিপ্লিনের সহযোগী অধ্যাপক বেবী সুলতানা, শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বক্তৃতা করেন ভাস্কর্য ডিসিপ্লিনের মধুরিমা সাহা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ড্রইং এন্ড পেইন্টি ডিসিপ্লিনের সহকারী অধ্যাপক মোঃ খায়রুল হাসান ও ভাস্কর্য ডিসিপ্লিনের সহকারী অধ্যাপক মনতোষ মন্ডল। উল্লেখ্য অনুষ্ঠানে চারুকলা স্কুলভুক্ত তিন ডিসিপ্লিন থেকে তিনজন শিক্ষার্থীকে ‘শিল্পী শশিভূষণ পাল গ্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করা হয়। অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা হলেন- ড্রইং এন্ড পেইন্টিং ডিসিপ্লিনের মোঃ সাইফুল্লাহ আবির, প্রিন্টমেকিং ডিসিপ্লিনের মোঃ সাইমুম ইসলাম রাফি এবং ভাস্কর্য ডিসিপ্লিনের স্বাধীন মন্ডল। এছাড়া বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে আরও ৪৩ জন কৃতি শিক্ষার্থীকে তাদের শিল্পকর্মের জন্য সম্মাননা প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শিল্পী শশিভূষণ পাল আর্ট গ্যালারিতে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন এবং ফিতা কেটে এ প্রদর্শনীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পরে তিনি প্রদর্শনীতে স্থান পাওয়া শিল্পকর্মগুলো ঘুরে ঘুরে দেখেন। এসময় চারুকলা স্কুলভুক্ত ডিসিপ্লিনসমূহের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন।