ফরিদপুরের সালথায় দুই ভাইয়ের বিরোধকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় সংঘর্ষে নারীসহ অন্তত ৩০ ব্যক্তি আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে অন্তত ১৫ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষের সময় কয়েকটি বাড়িতে হামলা চালিয়ে ১০টি বসতঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। বুধবার (৫ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের মিরের গট্টি ও দোহার গট্টি গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। স্থানীয় এলাকবাসী জানায়, পারিবারিক বিরোধ নিয়ে গত রবিবার (২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় পাটপাশা গট্টি গ্রামের মো. ইসহাক মাতুব্বরের ছেলে ইমারত মাতুব্বরের সাথে তার ভাই ইকরাম মাতুব্বরের কথা কাটাকাটি হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিবাদমান দুটি পক্ষের মাতব্বররা ইন্ধন দিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এ সময় ইমারতের সমর্থক লাবলু মাতুব্বর ও ইকরামের সমর্থক ওহিদ খানকে কুপিয়ে জখম করা হয়। আহতরা এখনো হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এ সময় দুটি বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। বুধবার বিকেলে ওই সংঘর্ষের ঘটনায় বালিয়া গট্টি গট্টি বাজারে সন্ত্রাসবিরোধী মানববন্ধনের আয়োজন করে ইমারতের সমর্থকরা। ওই মানববন্ধনে যাওয়ার সময় ইমারতের পক্ষের লোকজনকে ধাওয়া দেয় ইকরামের সমর্থকরা। পরে পুলিশ প্রহরায় কয়েক মিনিট মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করেন তারা। তবে ইকরাম মাতুব্বর বলেন, আমাদের দুই ভাইয়ের বিরোধকে পুজি করে স্থানীয় সন্ত্রাসী জাহিদ মাতুব্বর ও তার লোকজন মানববন্ধনের আয়োজন করেন। ওই মানববন্ধন যাওয়ার সময় উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আপত্তিকর স্লোগান দিলে তাদের ধাওয়া দেয় প্রতিপক্ষ। এদিকে এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই সন্ধ্যায় হাসিব খান নামে এক যুবককে কুপিয়ে আহত করে জাহিদ মাতুব্বরের সমর্থকরা। পরে এ নিয়ে দোহার গট্টি গ্রামে দুই পক্ষের মধ্যে ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষ শুরু হয়। একই সময় একই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাশ্ববর্তী মিরের গট্টি গ্রামেও দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। উভয়স্থানেই দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষচলাকালে মিরের গট্টি গ্রামের মকবুল মাতুব্বরের ৪টি, ফুনাফ সরদারের ২টি, তোরাপ মাতুব্বরের ২টি, ইনসুর মাতুব্বরের ১টি ও দিদার মাতুব্বরের ১টি বসতঘর ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় নারীসহ অন্তত ৩০ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে রাজিয়া বেগম, ফিরোজ মাতুব্বর, হাবিব মাতুব্বর, সেলিম মাতুব্বর, মঙ্গল খান, মঙ্গল শেখ, হাসিব খান, মোস্তফা শেখসহ ১৫ জনকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয় গ্রাম্যদল নেতা মো. জাহিদ মাতুব্বর বলেন, মানববন্ধনে যাওয়ার সময় আমাদের প্রায় ৪০০ লোককে দুই পাশ দিয়ে ঘিরে ধাওয়া দেয় প্রতিপক্ষের লোকজন। এ ছাড়া আমার ৭-৮ জন লোককে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়েছে। পরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। হাসিবকে কোপানোর বিষয় আমি কিছুই জানি না। সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শেখ সাদিক গনমাধ্যমকে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শর্টগানের ৮ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও দটি সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে পরিবেশ শান্ত করে। উভয় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।