চট্টগ্রামে বেসরকারি স্কুলে বরাবরের মতো এবারও ভর্তি বাণিজ্য শুরু হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা উপেক্ষা করে বিভিন্ন স্কুলে কয়েক গুণ বেশি ভর্তি ফি আদায় করা হচ্ছে। অভিযোগ পাওয়া গেছে, বেসরকারি স্কুলের পাশাপাশি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বেপজাসহ বিভিন্ন স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক পরিচালিত স্কুলেও ভর্তি, পুনঃভর্তি এবং টিউশন ফি দ্বিগুণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ক্রেতা-ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) সূত্রে অভিযোগ পাওয়া গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৩ হাজার টাকা ভর্তি ফি নেওয়ার কথা থাকলেও চট্টগ্রামের বাংলাদেশ মহিলা সমিতি উচ্চ বিদ্যালয়ে ১১ হাজার টাকা প্রদান করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণেও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মানা হচ্ছে না। মন্ত্রণালয় কর্তৃক বিজ্ঞান বিভাগের জন্য সর্বোচ্চ ২ হাজার ১৪০ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ পরিচালিত সিডিএ পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ ৪ হাজার ৫৩০ টাকা পরিশোধের নির্দেশ প্রদান করেছে। এ দুটি প্রতিষ্ঠানসহ অতিরিক্ত অর্থ আদায়কারী সব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে ভর্তি বাণিজ্য বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে ভুক্তভোগী অভিভাবকরা বলেন, করোনা পরিস্থিতি ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে মানুষ এমনিতেই সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে এসএসসিতে ফরম পূরণে দ্বিগুণের বেশি ফিস এবং বিভিন্ন খাত দেখিয়ে নানা ধরনের ফিস দিতে গিয়ে নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোর নাভিশ্বাস উঠেছে। এ ব্যাপারে জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের আরো তৎপর হওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি বাণিজ্য বন্ধে শিক্ষা প্রশাসনের কঠোর কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের তাগিদ দিয়েছে ক্রেতা-ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রামের নেতৃবৃন্দ। গতকাল ক্যাবের এক বিবৃতিতে বলা হয়, বৈশ্বিক করোনা মহামারি-উত্তর অর্থনৈতিক মন্দায় সাধারণ মানুষ যখন জীবন-জীবিকা নিয়ে কঠিন বাস্তবতার সম্মুখীন তখন ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন শহরে নামীদামী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন ও নীতিমালা উপেক্ষা করে ভর্তি ও পুনঃভর্তির নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নিয়মবহির্ভূতভাবে স্কুলে ভর্তির সময় পুনঃভর্তি, উন্নয়ন ফিস, ডিজিটাল ফিস, টিসি গ্রহণের সময় পুরো বছরের ফিস আদায়, নতুন সেশনে ভর্তি ইত্যাদির নামে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
নবচেতনা /এমএআর