অন্য জায়গার মতো টেকনাফ উপজেলায় ও মুক্তিযোদ্ধা বানানোর যেন হিড়িক পড়েছে। অভিযোগ পাওয়া গেছে, এ জন্য চলছে ২ লাখ টাকার লেনদেন। নেওয়া হচ্ছে ২ লাখ থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত। এমন কি যারা স্বাক্ষী হচ্ছেন তারাও নেমেছেন অর্থ বাণিজ্যে।
টেকনাফে কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা ৩০ জনের কোঠায় পৌঁছেছে বলে নিশ্চিত করেছেন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার জহির আহমদ । তিনি বলেন,২৬ জনের মুক্তিযোদ্ধার স্থলে শেষ গেজেটে নাম এসেছে ৭ জনের। আবেদন করেছিল ২৬ জন। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা
টেকনাফ প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মাওলানা সৈয়দ হোসেন বলেন,বাংলাদেশে জাতির সূর্য সন্তানরা হলেন বীর মুক্তিযাদ্ধারা। যারা নিজের জীবনের তোয়াক্কা না করে, পারিবার পরিজনদের আগুনের মুখে রেখে ১৯৭১ সালে গিয়েছিলেন রণাঙ্গানে। কখনো ভাবেননি পরবর্তী জীবনের বিনিময়ে কোনো কিছু পাবেন। তখন লক্ষ্য একটাই ছিল মাতৃভূমিকে শত্রুমুক্ত করা। তবে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করেছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য। সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের সদস্যদের দিকেও। আর এই সুযোগ নিতে মরিয়া এক শ্রেণিল অতিলোভী মানুষ।
টেকনাফে দুই একদি ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি অডিও রেকর্ড ভাইরাল হয়েছে। অডিও রেকর্ডের এক প্রান্তে আওয়ামীলীগের সাবেক সাংসদ মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক প্রয়াত অধ্যাপক মোহাম্মদ আলীর পুত্র তারেক মাহমুদ রনি আর অপর প্রান্তে টেকনাফ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার জহির আহম্মেদের কথোপকথন।
সেই আলাপ চারিতায় রনি তার প্রয়াত পিতার মুক্তিযোদ্ধা সনদের বিষয়ে জানতে চাইলে কমান্ডার জহির আহম্মেদ দুই লাখ টাকা এক ব্যক্তিকে দিলে সনদ মিলবে বলে দাবী করেন। এসময় কমান্ডার জহির আহম্মেদ দুই লাখ টাকা দিলে রনির মা তথা প্রয়াত সংসদ সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী ১০ লক্ষ টাকা ব্যাংক লোন পাবে বলেও জানান।
মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার জহির আহম্মেদ সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি যদি কোনো অমুক্তিযোদ্ধাকে অর্থের বিনিময়ে মুক্তিযোদ্ধা বানানোর চেষ্টা করি তাহলে প্রমাণ করুক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছেন সেটা তাদের ব্যাপার। আমি জানি না।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে অধ্যাপক মোহাম্মদ আলীর পুত্র রনি জানান,আজ কতিপয় অর্থলোলুপ অসাধু অমুক্তিযোদ্ধার কারণে ভুলুন্ঠিত হচ্ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সুনাম। টেকনাফ উপজেলায় এই চক্রটি অসৎ উপায়ে নিজের আখের গোছানোর মধ্য দিয়ে অমুক্তিযোদ্ধাদের মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
তার বাবার মুক্তিযোদ্ধা সনদ পেতে হলে হলে দিতে হবে,২ লক্ষ টাকা দাবী করেন টেকনাফ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার জহির আহম্মেদ। এছাড়াও রনির সাথে অপর এক টেকনাফের মুক্তিযোদ্ধার অডিও রেকর্ড হাতে এসেছে, সেখানে অপর প্রান্তের এক মুক্তিযোদ্ধা ২ লক্ষ টাকা দিয়ে সনদ পেয়েছেন বলে জানান।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ কামরুজ্জামান বলেন,বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনের বা বিধানের পরিপন্থী এমন বিষয় থাকলে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান তিনি।