দিন যাচ্ছে আর সক্রিয় হয়ে উঠছে টেকনাফের মানবপাচারের দালাল চক্রগুলো। প্রশাসনের নজরদারির পরেও থামানো যাচ্ছে না রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ। প্রতিদিন ক্যাম্প থেকে অনেক রোহিঙ্গা মিয়ানমারের স্বজনদের কাছে যাচ্ছে। আবার কিছুদিন থাকার পর আত্মীয়-স্বজন নিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, হ্নীলা ইউনিয়নের ওয়াব্রাংয়ের আব্দুল কাদেরের পুত্র মোঃ রফিকের মাধ্যমে রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে বাহির হয়ে নৌকায় ওঠে মিয়ানমারে স্বজনদের কাছে যাওয়ার আসা করে। আবার তারা নৌকাভর্তি রোহিঙ্গা নিয়ে বাংলাদেশ অনুপ্রবেশ করতেছে। সম্প্রতি সময়ে তিনটি নৌকা করে ২১ জন রোহিঙ্গা নিয়ে গেছে নৌকার মাঝি ওয়াব্রাংয়ের সৈয়দ নুরের ছেলে সেলিম তার নিজস্ব নৌকা করে মিয়ানমারের আসা যাওয়ার করে বলে জানান স্থানীয়রা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক যুবক বলেন, ১২ জুন রোহিঙ্গা বোঝাই যে নৌকাটি ডুবে গেছে সেটি তাদের মাঝে টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা হয়। এক পর্যায়ে নৌকাটি ডুবে যায়। প্রতিনিয়ত রাতের অন্ধকারে রফিকের সিন্ডিকেটরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ছেড়ে নৌকায় ওঠে। রফিকের সিন্ডিকেটরা মানবপাচার কাজ থেকে শুরু করে ইয়াবা কারবারিরা ও চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান।
রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশে নেতৃত্ব দিচ্ছে হ্নীলার মৃত মোহাম্মদ হোসেনের পুত্র আব্দুল্লাহ, ইসমাইলের ছেলে আলী জোহার, নুরুল আলম, ওয়াব্রাংয়ের মুহাম্মদ নুর, আবছার, হ্নীলা রংগীখালী ৭নং ওয়ার্ডের লামার পাড়ার সব্বির আহমদের পুত্র জামাল হোসাইন, নুর আহমদের পুত্র সরওয়ার কামাল, মৃত ইসমাইল হাজ্বীর পুত্র মোঃ ইলিয়াস, মোঃ কালা মিয়ার পুত্র বেলাল উদ্দিন। এরা বিভিন্ন সময়ে বিজিবির সোর্স পরিচয় দিয়ে এলাকার মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে রোহিঙ্গা পাচার করে।
তাদের নেতৃত্বে ৭টি নৌকা মিয়ানমারে গিয়ে শত শত রোহিঙ্গা বাংলাদেশের টেকনাফে অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছে। এই সিন্ডেকেটগুলোর দেখাদেখি আরও টেকনাফে প্রতিদিন সক্রিয় হচ্ছে নতুন নতুন দালাল চক্র।
এব্যাপারে জানতে চাইলে হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী বলেন, রোহিঙ্গারা ফের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে লোকালয়ে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে এবং এদিক-সেদিক চলে যাচ্ছে। কিছু অসাধু দালাল চক্রের মাধ্যমে এরা মিয়ানমারের আসা যাওয়া করছে।
এ বিষয়ে টেকনাফ মডেল থানার ওসি মো. হাফিজুর রহমান জানান, নাফ নদী থেকে কাল থেকে এই পর্যন্ত ৫জন রোহিঙ্গার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে তারা কি মিয়ানমারে যাচ্ছিল, নাকি সেদেশ থেকে আসছিল বিষয়টি পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে আমরা এদের সাথে জড়িত দালাল চক্রের বিষয়ে নিয়ে কাজ করছি। নৌকাতে কতজন রোহিঙ্গা ছিল সেটি খতিয়ে দেখছি আর কোন দালালের মাধ্যমে এরা নৌকায় ওঠেছে তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।