ঘুর্ণিঝড় মোকাবিলার জন্য কক্সবাজারের টেকনাফে নির্মাণ করা বেড়িবাঁধের ব্লক সড়ে যাচ্ছে। উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীরদ্বীপ উপকূলীয় এলাকায় তীব্র বাতাস সেই সাথে সাগরের পানির ধাক্কায় বেড়িবাঁধের সি ব্লক ধ্বসে পড়ে পানিতে চলে যাচ্ছে। এতে চরম ঝুঁকির মধ্যে আছেন এই অঞ্চলের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সরকারি কর্মকর্তা বলেন, এই বেড়িবাঁধের গাম্পিং ব্লক দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দেয়নি। তাতে জোয়ারের পানির ধাক্কায় বেড়িবাঁধের ব্লক সরে যাচ্ছে। গাম্পিং ব্লক দিলে পানির ধাক্কা গাম্পিং ব্লকে লাগলে ব্লক ধসে পড়ে না। তাই গাম্পিং ব্লক ছাড়া বিকল্প পথ নেই।
শাহপরীরদ্বীপ মাঝের পাড়ার শাব্বির আহমদ বলেন, ঘুর্ণিঝড় মোরার সময় বাঁধ ভেঙে ঘর-বাড়িতে পানি উঠে গাছপালা নষ্ট হয়ে গেছে। এখন সাগরের পানি যেভাবে বেড়িবাঁধে ধাক্কা দিচ্ছে তা নিয়ে আমরা বেশ ভয়ে দিন কাটাচ্ছি। বার বার বেড়িবাঁধ হয়। কিন্তু তা বর্ষাকালে ভেঙ্গে যায়। এই বেড়িবাঁধ মজবুত করে করা হোক। যদি এবার যদি পানি ঢোকে তাহলে কোথায় যাব?
শাহপরীরদ্বীপ ৭ নং ওয়ার্ডের মেম্বার নুরুল আমিন বলেন, এখন বর্তমান বেড়িবাঁধের ৩টি পয়েন্ট খুব ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। যেকোন সময় ভেঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কা। আমি বার বার বেড়িবাঁধের ঠিকাদারকে বলার পরেও তারা কাজ করছে না।
শাহপরীরদ্বীপ ৯ নং ওয়ার্ডের মেম্বার ফজলুল হক বলেন, শাহপরীরদ্বীপ দক্ষিণ পাড়া আজ দেখলাম যে ভাবে ভাঙ্গা শুরু করেছে। এ ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধের কারণে প্রতিনিয়ত দুর্যোগের সম্মুখীন হতে হয়। সরকারি মহল থেকে বার বার আশ্বাস প্রদান করলেও তা বাস্তবায়ন করতে দেখা যায় না।
সাবরাং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর হোসেন বলেন, একটু বৃষ্টি কমলে যে ভেঙ্গে যাওয়া বেড়িবাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্ট আছে। তা ঠিক করে দেওয়া জন্য বলা হয়েছে। ইয়াস ঝড়ের জন্য আমাদের পরিষদে কিছুটা প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পারভেজ চৌধুরী বলেন, ইয়াস ঝড়ের জন্য আমাদের সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে শাহপরীরদ্বীপ বেড়িবাঁধ ভেঙে ধ্বসে পড়া জায়গাগুলোতে কাজ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তবে বার বার ঘুর্ণিঝড়ে বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সরকারের অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করেন শাহপরীরদ্বীপের মানুষ। কয়েক বছর আগে ঘুর্ণিঝড় ‘মোরা’ ঝড়ের পরে উপকূলের মানুষের যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয় সেগুলো কাটিয়ে উঠতে পারেনি। তার উপর আবার বড় ধরণের প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসার পূর্বাভাস শোনা যাচ্ছে। যদি এ ইয়াস নামের ঝড় এলাকা দিয়ে বয়ে যায় তাহলে উপকূলের মানুষের চরম দুর্ভোগ নেমে আসবে।