বিদ্যুৎ খাতে ব্যয় কমাতে নবায়নযোগ্য জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগে সিরাজগঞ্জে সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ পুরোদমে চলছে। প্রকল্পের প্রথম এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ ইতোমধ্যেই ৮০ ভাগ শেষ হয়েছে। আগামী জুনে সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে বলে আশা করছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। এই বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হবে। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাড়ে পতিত চরের জমিতে সারিবদ্ধ ও সুউচ্চ পিলারের ওপর বসানো হচ্ছে সোলার প্যানেল। প্যানেলের নিচের জমি সম্পূর্ণ কৃষিবান্ধব। জমিতে মৌসুমী ফসলের আবাদ করা যাবে। সোলার পার্ক প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার সয়দাবাদ ইউনিয়নে যমুনা নদীর তীরে ২১৪ একর জমিতে বসানো হয়েছে ২৭ হাজার পিলার। পিলারের ওপর বসানো হচ্ছে শক্তিশালী সোলার প্যানেল। ৮ কোটি ৭৭ লাখ ডলার ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তায়ন করছে বাংলাদেশ-চায়না রিনিউয়েবল এনার্জি কোম্পানি। এখান থেকে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে ৬৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। নতুন এই প্রকল্প জেলায় শিল্প কারখানা স্থাপনের পথ সুগম করবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৭ দশমিক ৭১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (চুক্তিকালীন ডলারের বিনিময় হার ১০৫ টাকা হিসাবে প্রায় ৯২১ কোটি টাকা)। যৌথ অর্থায়নে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির ৫০ শতাংশ মালিকানায় রয়েছে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি। অর্ধেক মালিকানা চীনের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশনের (সিএমসি)। বাংলাদেশি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লাম এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামিম তালুকদার লাবু জানান, দিন-রাত শ্রমিকরা কাজ করছেন। প্রকল্পের ৮০ শতাংশ কাজও শেষ। উঁচু পিলারের ওপর সোলার প্যানেল বসানোর কারণে নিচে বিভিন্ন মৌসুমী শাকসবজি চাষ করা যাবে। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে আবার ফসলের চাষাবাদ করা যাবে। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী মাসের শেষে এখান থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। বাংলাদেশ-চায়না রিনিউয়েবল এনার্জি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এম খোরশেদুল আলম বলেন, সিরাজগঞ্জ ছাড়াও পাবনা ও কুড়িগ্রামসহ কয়েকটি জেলায় সোলার পার্ক স্থাপনের মাধ্যমে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ চলছে। সিরাজগঞ্জ-২ (সদর-কামারখন্দ) আসনের সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরি জানান, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে, এই অঞ্চলের শিল্প কারখানার কাজের গতি বৃদ্ধির পাশাপাশি সমৃদ্ধ হবে স্থানীয় অর্থনীতি। সেই সঙ্গে যমুনায় জেগে ওঠা বিস্তৃীর্ণ চরে আরও নতুন সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।