সিরাজগঞ্জের তাড়াশে যত্রতত্র পুকুুর খননে প্রায় ছয় বছর যাবত জলাবদ্ধতায় তিন থেকে চার ফসলি জমি বছরে সাত আট মাস পানিতে ডুবে থাকে। এ কারণে না হয় ধান না হয় সরিষা। শুধু মাত্র বোরো মৌসুমে একটি ফসলের আবাদ হয়। তাও পানি নামতে দেরি হওয়ায় নাবী আবাদের কারণে ফলনও ভাল হয় না। আর বর্তমানে যত্রতত্র পুকুর খননে এ এলাকার সাড়ে তিন হাজার বিঘা জমিতে সৃষ্ট ভয়াবহ জলাবদ্ধতার নিরসন না হলে কৃষক পরিবারগুলোতে ভাত জুটবে না এমনটি জানান, তাড়াশ সদর ইউনিয়ন এলাকার মাধবপুর গ্রামের মোঃ জাকির হোসেন বিএসসি। স্থানীয় কৃষক সোরহাব হোসেন জানান, পূর্ব তাড়াশের মাধবপুর মথুরাপুর, বিদি মাগুড়া, শ্রী কৃষ্ণপুর, সান্তানসহ পাঁচ- ছয়টি গ্রামের আশে পাশের এ জমিগুলোর মাটি ছিল খুবই উর্Ÿর। এ জন্য এ সকল জমিতে সরিষা, গম, আলু, ধান, পাটসহ বছরে তিন থেকে চারটি ফসল ঘরে তুলতেন এ এলাকার শত শত কৃষক। এতে করে তাদের সংসারে অন্তত ডালভাতের অভাব ছিল না। অথচ অতি উর্Ÿর এ সকল ফসলি জমিতে ধানের চেয়ে মাছ চাষে অধিক লাভ হয় এ ধরনের লোভে প্রায় আট দশ বছর পূর্বে কিছু কৃষক অবৈধভাবে জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে এ অঞ্চলে পুকুর খনন শুরু করেন। আর এরই মধ্যে এ পাঁচ- ছয়টি গ্রাম এলাকায় তিন ফসলি জমিতে খনন করা পুকুরের সংখ্যা প্রায় দুইশ’ ছাড়িয়ে গেছে। দখল করা হয়েছে পানি প্রবাহের খাল বা খাড়ি। এতে আবাদি জমি কমার সাথে সাথে খাদ্য শস্যের উৎপাদনও কমছে। পাশাপাশি বর্তমানে যত্রতত্র পুকুর খননে এ এলাকার কমপক্ষে পানি প্রবাহের জন্য সরকারি অর্থায়নে করা ১০ থেকে ১২ টি ব্রিজ কালর্ভাটের মুখ বন্ধ হয়ে গেছে। যে কারণে ফসলি জমির পানি বের হতে না পেরে স্থায়ীভাবে প্রায় সাড়ে তিন হাজার বিঘা জমিতে সৃষ্টি হয়েছে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা। যার মাসুল দিচ্ছেন এ অঞ্চলের নিরীহ খেঁটে খাওয়া কৃষকেরা। তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আবব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, শস্যভান্ডার খ্যাত তাড়াশ উপজেলায় পুকুর খনন করার কারণে শস্য উৎপাদন চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। পুকুর খনন বন্ধ না করলে ওই এলাকায় কিছুই করা সম্ভব না। আর জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা চেষ্টাও করেছি। কিন্তু খনন করা পুকুরগুলোর পাড় কেউ কাটতে রাজি নন।