খুলনা মহানগরীর প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত শহীদ হাদিস পার্কের শহীদ মিনারে রাতের প্রথম প্রহরে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে যথাযথ মর্যাদায় ভাষা শহীদদের প্রতি ফুলেল বিনম্র শ্রদ্ধা জানানো হয়। উক্ত দিবস উপলক্ষে রাতে শহীদ মিনারে খুলনা কেএমপি’র মান্যবর পুলিশ কমিশনার মোঃ মোজাম্মেল হক, বিপি এম ( বার) পিপিএম – সেবার নেতৃত্বে এ সময়ে আরও উপস্থিত ছিলেন কেএমপি’র উর্দ্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ। খুলনার পুলিশ কমিশনার এ সময়ে উপস্থিত সকলকে সালাম ও শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, ভাষা আন্দোলনের আমাদের হৃদয়ের সাথে ওৎপ্রোতভাবে ভাবে জড়িত রয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার এবং সার্বভৌমত্বের সঙ্গে যিনি ওৎপ্রোতো ভাবে জড়িত ছিলেন তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি ইতিহাসের মহানায়ক স্বাধীনতার স্থাপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭৫ সালে ১৫ই আগস্ট ঘাতকের বুলেটে শহীদ জাতির পিতাসহ তার পরিবারবর্গ এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ৩০ লক্ষ নর-নারী ২ লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রম এবং ১৯৫২ সালে মহান ভাষা আন্দোলনে যারা ভাষার অধিকার রক্ষায় জীবন দিয়েছিলেন সে সকল ভাষা শহীদদের আত্মার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করি। সর্বশেষে ১৯৪৭ সালে বাংলার মানুষকে দাবিয়ে রাখার জন্য একটি জাতির ঐতিহ্য ও ভাষা সাহিত্য-সংস্কৃতির ওপর আঘাত করা হয়েছিল। যেখানে পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান মিলে ৫৬ শতাংশ মানুষ কথা বলতো বাংলায় এবং ১০ শতাংশেরও নিচে কথা বলতো উর্দুতে। সেখানে বাংলাকে যে মর্যাদা দেওয়া উচিত কিন্তু সেই মর্যাদা দিতে তারা কুন্ঠাবোধ করেছিল। তাদের মুদ্রা, ডাক টিকিট সহ জাতীয় সংসদে তাদের যে ভাষা সেটি ইংরেজির পাশাপাশি ছিল উর্দু। অর্থাৎ একই চেতনায় যে একটি জাতিকে সকল দিক থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল। আমাদের ৯৮% মানুষের ভাষা ছিল বাংলা সেই ভাষাকে তারাও অপমানিত করেছি। ১৯৪৭ সালে তথাকথিত পাকিস্তানি দেশটি সৃষ্টির পর পরই শহীদ ইন্দ্রনাথকে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রথমেই হত্যা করা হয়েছিল। ১৯৪৮ সালে মার্চ মাসে রেসকোর্স ময়দানের বক্তব্যে উর্দুকে রাষ্ট্র ভাষার কথা বলেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যিনি সব সময় দুঃখী বাংলার মানুষকে মুক্তির স্বপ্ন দেখতেন তিনি হলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলনের দাবিতে পুলিশের গুলিতে শহীদ হয়েছিলেন রফিক, শফিক, সালাম, বরকত, জব্বার, শফিউল ও আউয়াল সহ নাম না জানা আরও অনেকেই যারা শহীদ হয়েছিলেন তাদের রক্ত কখনো বৃথা যায়নি। তাদের আত্মদানের পরেই বাঙালি জাতি স্বাধীনতার নিউক্লিয়াস হিসেবে একুশে ফেব্রুয়ারি উপহার পেয়েছে। এমতাবস্থায় আজকের এই দিনে সকল শহীদদের প্রতি জানাই বিনম্র শ্রদ্ধ। একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে পরবর্তীতে খুলনা কেএমপি’র কমিশনার মোঃ মোজাম্মেল হক বিপিএম (বার) পিপিএম- সেবা এর উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এ সময়ে কেএমপি’র উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।