খুলনার মজিদ মেমোরিয়াল সিটি কলেজের পিঠা উৎসব কলেজ প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র আলহাজ্ব তালুকদার আব্দুল খালেক এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেএমপি’র মান্যবর পুলিশ কমিশনার মোঃ মোজাম্মেল হক, বিপিএম (বার), পিপিএম-সেবা। প্রধান অতিথি’র বক্তৃতায় এ সময়ে খুলনা সিটি মেয়র বলেন, গ্রাম বাংলার সেই ঐতিহ্য পিঠা উৎসব আজ হারাতে বসেছে। খুলনার মজিদ মেমোরিয়াল সিটি কলেজের এই পিঠা উৎসবের আয়োজকদের তিনি তার বক্তব্যে প্রাণঢালা অভিনন্দন জানাই। উক্ত মজিদ মেমোরিয়াল সিটি কলেজের পিঠা উৎসবে বিশেষ অতিথি’র বক্তব্যে খুলনার পুলিশ কমিশনার মোঃ মোজাম্মেল হক বলেন, আগেকার দিনে বাংলা সনের অগ্রহায়ণ মাসের শেষে বাঙালির ঘরে ঘরে নতুন ধান উঠলে নবান্নের পিঠা উৎসব শুরু হত। তখন আমাদের মা-বোনেরা, নানী-দাদীরা মিলে আত্মীয় স্বজনদের নিয়ে বাহারি হরেক রকমের পিঠা-পুলি তৈরি করতো। বর্তমান সময়ে বাঙ্গালির শতবর্ষ প্রাচীন পিঠা-পুলি তৈরির সেই ঐতিহ্য যখন বর্তমান প্রজন্ম ভুলতে বসেছে তখনি খুলনা ঐতিহ্যবাহী সরকারি মজিদ মেমোরিয়াল সিটি কলেজের কর্তৃপক্ষের পিঠা উৎসবের আয়োজন সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। পিঠা উৎসবের এই চমৎকার আয়োজন করার জন্য সরকারি মজিদ মেমোরিয়াল সিটি কলেজের অধ্যক্ষ মহোদয়সহ সকল আয়োজকদের প্রত্যেককে অভিনন্দন জানান খুলনার মান্যবর পুলিশ কমিশনার মোঃ মোজাম্মেল হক। তিনি আরোও বলেন, আজ এই কলেজ প্রাঙ্গণে প্রাণের মেলা জমে উঠেছে। সেই মেলায় অংশ নিয়েছে আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা। ক্ষণিক বিনোদনের মাধ্যমে মানুষে মানুষে গড়ে ওঠা সম্পর্কের আজ বড় প্রয়োজন। বর্তমান প্রজন্ম আজ পিঠা পুলির পরিবর্তে নামিদামি রেস্টুরেন্টর ও ফাস্টফুডে আসক্ত হয়ে হৃদরোগসহ বিভিন্ন ধরণের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে। আমাদের মা-বোনেরা, নানী-দাদীরা মিলে পিঠা পুলির তৈরি সময় সেগুলোতে তাদের যে স্নেহের পরশ লুকিয়ে থাকতো ফাস্টফুডের দোকানগুলিতে তার বড্ড অভাব এখন। বাঙ্গালির আবহমান সংস্কৃতির অংশ পিঠা উৎসব থেকে আজ আমাদের সন্তানেরা বঞ্চিত হচ্ছে। এজন্য আমাদের সন্তানদেরকে বাঙ্গালি সংস্কৃতিকে ধারণ করে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সকল ধরণের শ্রেণী বৈষম্যমুক্ত, সাম্যবাদী, উন্নত-সমৃদ্ধ, নিরাপদ, মাদক মুক্ত এবং জঙ্গি-সন্ত্রাসমুক্ত একটি জাতি গঠন করার প্রত্যশা ব্যক্ত করে উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে তিনি। উক্ত পিঠা মেলা উৎসবে এ সময়ে এ সময়ে কেএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (এএন্ডও) সরদার রকিবুল ইসলাম, বিপিএম-সেবা, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক এন্ড প্রটোকল) মোছাঃ তাসলিমা খাতুন, সরকারি মজিদ মেমোরিয়াল সিটি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর শেখ মোঃ বদিউজ্জামান, বিশেষ পুলিশ সুপার (সিটিএসবি) অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত রাশিদা বেগম, পিপিএম-সেবা, ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ তাজুল ইসলামসহ কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন শ্রেণী পেশার শত শত নগরবাসী উক্ত পিঠা উৎসবে এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন।