খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর দপ্তরের মান্যবর পুলিশ কমিশনার মোঃ মোজাম্মেল হক, বিপিএম (বার), পিপিএম-সেবা মহোদয় গতকাল দুপুরে গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে এক প্রেস ব্রিফিং এর মাধ্যমে জানান। কেএমপি’র অধীনস্থ খালিশপুর থানা পুলিশের একটি চৌকস বাহিনীর অভিযানে ১টি কাটা রাইফেল, ১টি ম্যাগজিন ও ৪ রাউন্ড রাইফেলের গুলি, ২টি চাপাতি, ১টি ছুরি এবং ২৫০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধারসহ ১জন অস্ত্রধারী শীর্ষ সস্ত্রাসীকে গ্রেফতার হয়। কেএমপি’র পুলিশ কমিশনার মহোদয় এ সময়ে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রেসবিফ্রিংয়ে বলেন, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ সবসময় অপরাধ দমন, আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ এবং নগরবাসীর সেবায় সর্বদা তৎপর রয়েছে। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ অস্ত্রধারী শীর্ষ সন্ত্রাসী, জঙ্গি ও নাশকতাকারি, মাদক ব্যবসায়ী, ভূমিদস্যু, সাজাপ্রাপ্ত,পরোয়ানাভুক্ত আসামীসহ বিভিন্ন মামলার আসামীদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান এখনো অব্যাহত রেখেছে। তিনি আরোও বলেন, গত পহেলা আগস্ট থেকে ইতোমধ্যেই ১৭ টি আগ্নেয়াস্ত্র, ১২৮ রাউন্ড গুলি, ২৫টি চোরাই মোটরসাইকেল, ককটেল, গান পাউডার, চোরাই স্বর্ণালঙ্কারসহ বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৯ ডিসেম্বর হতে চলমান বিশেষ অভিযানের কারণে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ ২টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ৬১ রাউন্ড গুলি উদ্ধারে সক্ষম হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে চলমান বিশেষ অভিযানে ২৭ ডিসেম্বর গতকাল খালিশপুর থানা পুলিশের একটি চৌকস টীম কর্তৃক মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযান পরিচালনাকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে খালিশপুর থানাধীন নিউজ প্রিন্ট গেট এর বিপরীত পাশে মের্সাস আর.এম ট্রের্ডাসের পিছনের জনৈক আলামিনের বাড়ির নিচ তলায় আসামীর ভাড়া বাড়ির কক্ষ হতে শীর্ষ অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী গুটি আব্বাস ওরফে সাগর (২২), পিতা-এসকেন্দার শেখ, থানা নাজিরপুর, জেলা-পিরোজপুরকে অস্ত্র, ম্যাগাজিন, গুলি, চাপাতি গাঁজাসহ এ/পি সাং-৩৩ ইস্ট ব্লক বিআইডিসি রোড, থানা- খালিশপুর, জেলা- খুলনাকে গ্রেফতার হয়। গ্রেফতারকৃত আসামী গুটি আব্বাস ওরফে সাগর এর দেখানো মতে তার খাটের নিচ হতে বিশেষ ভাবে রক্ষিত আসামী উক্ত অস্ত্র, ম্যাকজিন, গুলি, চাপাতি, গাঁজাসহ নিজ হাতে উক্ত অবৈধ দ্রব্য গুলি বের করে দেয়। এ সংক্রান্ত ব্যাপারের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পৃথক -পৃথক ২টি মামলা সংশ্লিষ্ট থানায় রুজু করা হয়েছে। উল্লেখ্য উক্ত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গ্রেফতারকৃত আসামিকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সে জানায় তার কাছে আরোও কিছু অবৈধ অস্ত্র রয়েছে। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী অভিযান পরিচালনা করা হয়। তখন আসামীর দেখানো মতে খালিশপুর থানাধীন নিউজপ্রিন্ট মিলের ভিতর পুকুর পাড় সংলগ্ন পরিত্যক্ত কো-অপারেটিভ স্টোরের পশ্চিম দিকের প্রথম কক্ষ হতে ১টি কাটা রাইফেল, ৪ রাউন্ড রাইফেলের গুলি, ১টি ম্যাগজিন প্লাস্টিকের সুতা দিয়ে নীল রংয়ের ছেড়া পলিথিন দ্বারা জড়ানো অবস্থায় উদ্ধারপূর্বক নিরপেক্ষ সাক্ষীদের উপস্থিতিতে জব্দ করা হয়। অস্ত্রটি আসামী নিজ হাতে ঘটনাস্থল থেকে সাক্ষীদের উপস্থিতিতে বের করে দেয়। এ সংক্রান্তে খালিশপুর থানায় অস্ত্র আইনে আরোও একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামী সম্পর্কে পরবর্তীতে খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, তার পিতা খুলনা নিউজ প্রিন্ট মিলের লেবারের কাজ করতো। তার স্থায়ী নিবাস পিরোজপুর জেলায় হলেও খুলনার খালিশপুরে তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা। আসামী ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত এবং তার সুনিদিষ্ট কোন পেশা নেই। মূলত একমাত্র পেশাই হল সে মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসের পাশাপাশি বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডের সাথে দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনার সাথে জড়িত ছিল। সিডিএমএস পর্যালোচনা করে গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে খালিশপুর থানায় বিভিন্ন অপরাধের একাধিক মামলার সন্ধান পাওয়া যায়। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ মোজাম্মেল হকের উক্ত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন কেএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (এএন্ডও) সরদার রকিবুল ইসলাম, বিপিএম-সেবা, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক এন্ড প্রটোকল) মোছাঃ তাসলিমা খাতুন, ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (উত্তর) অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত মোল্লা জাহাঙ্গীর হোসেনসহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার গণমাধ্যমকর্মী পুলিশ অফিসার ও ফোর্সবৃন্দ এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন।