হিন্দু সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব শ্রীশ্রী শ্যামাপূজা গতকাল রোববার অনুষ্ঠিত হয়েছে। কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে সাধারণত শ্যামাপূজা বা কালীপূজা উদযাপন করা হয়।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ও মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির নেতারা দেশবাসীকে শ্যামাপূজার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির, রমনা মন্দির, রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠ, সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দির, সবুজবাগের শ্রীশ্রী বরদেশ্বরী কালীমাতা মন্দির, পুরান ঢাকার রাধাগোবিন্দ জিউ ঠাকুর মন্দির, পোস্তাগোলা মহাশ্মশান, তাঁতীবাজার, শাখারী বাজার, বাংলাবাজার, ও উত্তরাসহ দেশের বিভিন্ন মণ্ডপ ও মন্দিরে শ্যামাপূজা হয়।
হিন্দু পুরাণ মতে, কালী দেবী দুর্গারই একটি শক্তি। সংস্কৃত ভাষার ‘কাল’ শব্দ থেকে কালী নামের উৎপত্তি। কালীপূজা হচ্ছে শক্তির পূজা। জগতের সব অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে শুভশক্তি। কালী দেবী তার ভক্তদের কাছে শ্যামা, আদ্য মা, তারা মা, চামুণ্ডি, ভদ্রকালী, দেবী মহামায়াসহ বিভিন্ন নামে পরিচিত।
কালীপূজায় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বাড়িতে ও শ্মশানে প্রদীপ প্রজ্বালন করে স্বর্গীয় পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনদের স্মরণ করেন। এটিকে বলা হয় দীপাবলি। দুর্গাপূজার মতো কালীপূজাতেও গৃহে বা মণ্ডপে মৃন্মময়ী প্রতিমা তৈরি করে পূজা করা হয়। মন্দিরে বা গৃহে প্রতিষ্ঠিত প্রস্তরময়ী বা ধাতুপ্রতিমাতেও কালীপূজা করা হয়। মধ্যরাতে তান্ত্রিক পদ্ধতিতে মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে পূজা হয়। তবে গৃহস্থ বাড়িতে সাধারণত অতান্ত্রিক ব্রাহ্মণমতে আদ্যাশক্তি কালীর রূপে কালীর পূজা হয়। তবে লোকবিশ্বাস হলো কালী শ্মশানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী। এই কারণে বিভিন্ন অঞ্চলে শ্মশানে মহাধুমধামে শ্মশানকালী পূজা হয়।
গতকাল বিভিন্ন পূজামণ্ডপ ঘুরে দেখা যায় উত্তরায় ইষ্টি কুটুমে আয়োজিত কালী পূজায় ছিল ভক্তদের উপচে পরা ভিড়। স্থায়ী কোন পূজামণ্ডপ না থাকায় উত্তরা সার্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটি অস্থায়ী ভাবে উত্তরার আজিমপুরে ইষ্টিকুটুমে তারা কালী পূজার আয়োজন করে। মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির পশ্চিম থানা শাখার সভাপতি প্রকৌশলী হরিপদ রায়, সাধারণ সম্পাদক সন্দীপ কুমার রুদ্র, বিশেষ উপদেষ্টা মৌসুমী চট্টোপাধ্যায় এবং উত্তরা সার্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটি আহবায়ক দীলিপ কাজুরী তারা সকলেই দেশবাসীকে শ্যামা পূজার শুভেচ্ছা জানান। পাশাপাশি উত্তরায় একটি স্থায়ী পূজামণ্ডপের জন্য জায়গা বরাদ্দসহ পূজামণ্ডপ স্থাপনের ব্যবস্থা করে উত্তরায় বসবাসরত লাখ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা উদযাপনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা দ্রুত গ্রহনে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।