প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা সিলেটে আঞ্চলিক ও জেলা নির্বাচন অফিসে সেবাগ্রহীতাদের ভোগান্তির শেষ নেই। এনআইডি কার্ডের নাম, বয়স, জন্মস্থান ও জন্ম তারিখ সংশোধন কোনোটাই মিলছে না সহজে। আঞ্চলিক ও জেলা নির্বাচন অফিসে ধরনা দিয়েও মাসের পর মাস ঘুরে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। জাতীয় পরিচয়পত্রের সংশোধনীর বিষয়ে ভুক্তভোগীরা বলছেন, জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনে ভোগান্তি কমছে না। জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা পেতে সীমাহীন বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। অফিসে আসলে দেখা যায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কক্ষ বন্ধ থাকে। ফলে ভুল সংশোধনে মাসের পর মাস ঘুরেও মিলছে না সমাধান। কর্তৃপক্ষের চাহিদামতো অন্যান্য কাগজপত্র দিলেও দেখবেন বলে চলে যায় মাসের পর মাস ফলে ভোগান্তি চরমে রূপ নিয়েছে। উপায় না পেয়ে এভাবেই বাধ্য হয়ে ঘুরছেন ভুক্তভোগীরা। জানা গেছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এখন ব্যবহার হচ্ছে জাতীয় পরিচয়পত্র। তবে প্রয়োজনীয় কাজে জটিলতা দেখা দিচ্ছে নিজের নাম, বাবা- মায়ের নাম, কিংবা ঠিকানা ভুল। আর এসব ক্ষেত্রে সিলেট আঞ্চলিক ও জেলা নির্বাচন অফিসে সংশোধন করতে এসে পড়তে হচ্ছে বিপাকে। সরেজমিনে কয়েকদিন ঘুরাঘুরি করে দেখা গেছে, আইডি কার্ডে তথ্য ভুল থাকায় তা সংশোধনের জন্য আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস এবং জেলা নির্বাচন অফিসগুলোতে দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়। কিন্তু প্রায় সময় সংশ্লিষ্ট জেলা ও আঞ্চলিক কর্মকর্তার কক্ষ বন্ধ থাকে। যার কারণে সেবা গ্রহিতারা সরাসরি কর্মকর্তার সাথে দেখাও করতে পারেন না। সিলেট আঞ্চলিক নিবার্চন অফিসে হবিগঞ্জের বাহুবল থেকে সেবা নিতে আসা হাফিজুর রহমান জানান, এনআইডি সংশোধনের আবেদন করেছিলাম ৪ মাস আগে এরপর থেকে এই অফিসেই এসেছি ৪ বার। আসার পর মেসেজ যাবে বলে জানালেও এখন কোন মেজেস পাইনি। অফিসে আসলেই কম্পিউটার অপারেটর জানান মেসেজ যাবে কিন্তু কোন সংশোধনের কোন আপডেট এখনো পাইনি তাই আজকেও এলাম, আজও একই কথা বলছেন। সিলেটের বিয়ানীবাজার থেকে সেবা নিতে আসা মো. আহাদ চৌধুরী জানান, একটি সরকারি সেবা নিতে গিয়ে দেখি এনআইডি তথ্যতে ভুল রয়েছে। পরে বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাচন অফিসে যাওয়ার পর তারা আবেদন করার জন্য বলেন। আমি আবেদন করি, করার পর থেকে অফিসে আসতে আসতে পায়ের জুতা ক্ষয় হয়ে যাচ্ছে তবুও আমার সংশোধনের কাজ হচ্ছে না। জেলা নির্বাচন অফিসে সেবা নিতে আসা লাকী আক্তার জানান, জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের জন্য দীর্ঘ দিন থেকে অফিসে আসলেও আমার ভুল তথ্য সংশোধন হচ্ছে না। অফিসে আসলে এষানকার কম্পিউটার অপারেটর বলেন মঙ্গলবার আসেন, ঐদিন ও আসলেও আমি কোন আপডেট পাইনি। পরে আবার রবিবার আসলাম, সেদিন আবারও বললেন মঙ্গলবারে আসতে। কথামতো সেদিন দুপুর ২টার দিকে আসলাম কিন্তু কর্মকর্তাকে পেলাম না। আজ সোমবার আসলাম এসেও কর্মকর্তার সাথেও কথা বলতে পারি নি। কান্নাভরা কন্ঠে তিনি বলেন, এটার সমাধান কিভাবে করব আমি বুঝতেছিনা। সিলেট আঞ্চলিক নিবার্চন অফিসে সুনামগঞ্জ থেকে আসা আব্দুল মতিন জানান, আমি সংশোধন আবেদন করে ১ বছর থেকে ঘুরছি। আমার আবেদন প্রথমে জেলা নিবার্চন অফিস সুনামগঞ্জে ছিল। সেখানে আজ হবে কাল হবে বলে ১ বছর পর তিনি জানান আমার আবেদন ‘গ’ ক্যাটাগরিতে সিলেট যেতে হবে। তারপর আমি এখানে আসলাম। এভাবে আর কত দিন ঘুরব আমার সংশোধন নিয়ে। আমার শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদসহ সকল প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্রও আছে। এরপরও আমার সংশোধনটি হচ্ছেনা এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সিলেটের সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান কোন মন্তব্য না করেই অফিস থেকে বের হয়ে যান। সিলেট জেলা প্রশাসক (ডিসি) শেখ রাসেল হাসান বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ৃঅভিযোগের বিষয়টি নিয়ে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আব্দুল হালিম খানের কাছে জানতে চাইলে তিনি একটি পত্রিকার সাংবাদিকের ক্ষেপে গিয়ে অপদস্ত করে কক্ষ থেকে বের করে দেন।