সিলেটে চোরাচলানের চিনি (বুঙ্গার চিনি) ব্যবসা থামছেই না। সারাবছর ধরেই সিলেট সীমান্তে চলছে চিনি, গরুসহ বিভিন্ন পণ্যের চোরাচালান। গত রোববার মধ্যরাতে চোরাচালানের চিনি নিয়ে ঢাকাগামী একটি ট্রাক ছিনতাই করতে গিয়ে বিএনপির দুই নেতা ধরা পড়েছেন। তাদেরকে দল থেকে বহিষ্কারও করা হয়েছে। এ ঘটনায় মোট ৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ। ছিনতাইয়ের ঘটনায় আটককৃত বিএনপির দুই নেতা হলেন, মহানগরীর ২৫ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও দক্ষিণ সুরমার বারখলা রূপালি আবাসিক এলাকার সোলেমান হোসেন (৪২) এবং ২৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ভার্থখলার সোনালী আবাসিক এলাকার আবদুল মান্নান (৪৩)। ওসমানীনগরের সীমান্তবর্তী সাদিপুর সেতুসংলগ্ন এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। এদিকে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে সোমবার রাতেই সোলেমান হোসেন ও আবদুল মান্নানকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মিফতাহ সিদ্দিকী ও সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরীর স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। চোরাচালানে জড়িত থাকার অভিযোগে আটককৃতরা হলেন, সিলেট সদর উপজেলার বটেশ্বরের মলাইটিলার মনির আহমদ (৩২), জৈন্তাপুরের বাঘেরখালার তোফায়েল আহমদ (২৬), একই এলাকার শাহীন আহমদ (২৫) ও গোয়াইনঘাটের ফতেহপুরের নজরুল ইসলাম (৪২)। ওসমানীনগর থানার ওসি (তদন্ত) আরাফাত জাহান চৌধুরী জানান, সাদিপুর সেতুর সামনে থেকে ছয়জনকে আটক করা হয়। এ সময় জব্দ করা হয়েছে ভারতীয় চিনিভর্তি একটি ট্রাক, দুটি মাইক্রোবাস ও দু’টি মোটরসাইকেল। এদের মধ্যে চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত চারজন এবং চিনির চালান ছিনতাইয়ের চেষ্টার দায়ে দুইজনকে আটক করা হয়। সূত্র জানায়, সিলেটের জৈন্তাপুর থেকে একটি ট্রাকে করে চোরাচালানের ভারতীয় চিনি ওসমানীনগরের দিকে নেওয়া হচ্ছিল। ট্রাকটির পেছনে একটি মাইক্রোবাসে ছিলেন এসব অবৈধ চিনির মালিক। পথে দক্ষিণ সুরমা এলাকা থেকে আরও একটি মাইক্রোবাস ও দুটি মোটরসাইকেল ট্রাকটির পিছু নেয়। রাত আড়াইটার দিকে ওসমানীনগরের সাদিপুর সেতুসংলগ্ন এলাকায় ট্রাকটির গতিরোধ করে ছিনতাইয়ের চেষ্টা করা হয়। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে হট্টগোল হয়। একপর্যায়ে স্থানীয় লোকজন উভয় পক্ষের কয়েকজনকে আটক করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে চিনি, মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেল জব্দ করে এবং ওই ছয় ব্যক্তিকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পুলিশ জানায়, সিলেট সীমান্ত থেকে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনা ভারতীয় চোরাই চিনির ট্রাকটি সিলেট থেকে পিছু ধাওয়া করেন আটক বিএনপির দুই নেতাসহ কয়েকজন। তারা শেরপুর এলাকায় পৌছার পর ট্রাকটি ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেন। জনতা বুঝতে পেরে তাদের আটক করে পুলিশকে খবর দেন। তখন আটক দু’জন নিজেদের বিএনপি নেতা হিসেবে পরিচয় দেন।