বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র, এখানে স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার অধিকার প্রতিটি নাগরিকের আছে। আমি ও আমার সন্তানরা সকল নাগরিকের মত সুষ্ঠুভাবে বেঁচে থাকতে চাই। কথাগুলো বলছিলেন জামালপুর সদর উপজেলার ৯ নং রানাগাছা ইউনিয়নের খড়খড়িয়া গ্রামের অসহায় বিধবা চন্দ্র ভানু। বৃহস্পতিবার রাতে জামালপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে চন্দ্র ভানু ছাড়াও তার দুই সন্তান আল আমিন খলিফা সিয়াম ও নূরে আলম খলিফা সাব্বির উপস্থিত ছিলেন। চন্দ্র ভানু আরও বলেন, সবকিছু হারিয়ে দুই সন্তান মো. আল আমিন খলিফা সিয়াম (২৭) ও আরেক শিশু সন্তান নূরে আলম খলিফা সাব্বির (১৪) কে নিয়ে নান্দিনায় ভাড়া বাসায় চরম মানবেতর জীবন-যাপন করছিলেন তিনি। তিনি তার ভাইদের কাছে পিতার ওয়ারিশের সম্পত্তি দাবি করলে তার বড় ভাই আবু তালেব ও তাজিনুর ইসলাম বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে তাকে নির্যাতন শুরু করে। দুই ভাইয়ের যোগসাজশে বড় ভাইয়ের স্ত্রী নুরুন্নাহার বেগম বাদী হয়ে চন্দ্র ভানু ও তার দুই সন্তানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে। তদন্ত ছাড়াই মামলাটি গ্রহনের পর পুলিশ শিশু সাব্বিরসহ দুই সন্তানকে গত ৩০ জুন ঘুমন্তবস্থায় গ্রেপ্তার এবং আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে। চলতি মাসের ২ তারিখ (রোববার) তার বড় ছেলে মো. আল আমিন খলিফা সিয়াম কে জামিন দেয় আদালত এবং পরের দিন ৩ জুলাই (সোমবার) জামিন হয় শিশু পুত্র নূরে আলম খলিফা সাব্বিরের। কিন্তু এর আগেই নূরে আলম খলিফা সাব্বিরকে শিশু সংশোধনাগারে পাঠানো হয়। চন্দ্র ভানু বলেন, তার ছোট ছেলের জামিন হলেও, শিশু সংশোধনাগার থেকে ছেলেকে ফেরত নিয়ে আসার সামান্য অর্থও তার কাছে ছিল না, পরে উন্নয়ন সংঘের সহযোগিতায় তিনি তার ছেলেকে ফেরত আনেন। তিনি তার বড় ভাইদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, তারা বড় ভাইয়েরা তার উপর মিথ্যা মামলা দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, তাকে এবং তার দুই সন্তানকে ভাড়া বাসা থেকে বের করে দিয়ে বাসাটি তালাবদ্ধ করে রেখেছে। একমাত্র উপার্জেন একটি অটোরিকশা ও একটি সেলাই মেশিনও তার কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। এখন তিনি দুই সন্তানকে নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন। বন্ধ হয়েছে ছোট ছেলের লেখাপড়া। এ ঘটনায় রানাগাছা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল জানান, চন্দ্র ভানু ও তার সন্তানদের উপর চন্দ্র ভানুর বড় ভাইয়েরা একটি সাজানো মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। চন্দ্র ভানুকে তার পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে তার ভাইয়েরা বঞ্চিত করার জন্য এ মামলা করেছে। চন্দ্র ভানুর উপর রীতিমত অবিচার করেছে তার ভাইয়েরা। এ ঘটনার বিষয়ে জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহনেওয়াজ জানান, বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়েছি, অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।