দীর্ঘ দাবদাহের পর সিলেট বৃষ্টিস্নাত হয়েছে। জনজীবনে স্বস্তিও এসছে। তবে বিভাগীয় নগরী সিলেটে ভয়াবহ জলবদ্ধতায় নগর জীবনে চরম বিড়ম্বনা দেখা দেয়। সড়ক উপচে ময়লা ড্রেনের পানি ঢুকেছে মানুষের বাসাবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে। মৌসুমের একদিনের ভারী বৃষ্টিতেই চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী। আষাঢ় মাস শুরুর আগেই এমন অবস্থায় নগরবাসীকে দুর্ভাবনায় ফেলেছে। সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তরা বলেছেন, অনেক স্থানে উন্নয়ন কাজ চলছে। তাই পানি আটকে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবে নগরের অনেকেই বলছেন, উন্নয়ন কাজ হচ্ছে, ভালো কথা। কিন্তু ভরা বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানি দ্রুত নামার ব্যবস্থা না রাখাটাই অদূরদর্শীতা। এর ফলে নগরবাসী চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান জানান, বেশি পরিমাণ বৃষ্টির কারণে ড্রেন দিয়ে পানি নামতে সময় লাগছে।সিটি করপোরেশনের টিম কাজ করছে। কোথাও ময়লা ও আবর্জনার জন্য পানি আটকে গেলে তা পরিষ্কার করে দেয়া হচ্ছে। সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মোহাম্মদ সজিব হোসেন বলেন, বুধবার (১৪ জুন) মধ্যরাতে ও সকালে সিলেটে বৃষ্টি হয়। সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ৪৬ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এটা স্বাভাবিত বৃষ্টিপাত। বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) সারাদিন থেমে থেমে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে বুধবার ভোররাতের টানা কয়েক ঘণ্টার ভারী বর্ষণে জলমগ্ন হয় নগরীর বিভিন্ন এলাকা। সিলেট সিটি করপোরেশনের বর্ধিত এলাকা সিলেট-বাদাঘাট সড়কসংলগ্ন মইয়ারচর, জালালাবাদসহ বিভিন্ন এলাকায় ভয়াবহ জলাব্ধতার দরুণ সেই এলাকার মানুষ দুপুরে মানববন্ধন করেছে। এলাকাবাসী জানান, সড়ক ও জনপথের (সওজ) এই সিলেট ও বাদাঘাট সড়কটি বিমানবন্দর বাইপাস সড়ক। সড়কের দুপাশের খাল ভরাট। সেখানে সড়ক বর্ধিত করার কাজ চলছে। ফলে ওই এলাকার পানি নামতে পারছে না। ফলে বিভিন্ন এলাকায় ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। স্থানে স্থানে জলজটে যানবাহন আটকা পড়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। সিলেট সুনামগঞ্জ সড়কের পাঠানটুলা সড়কে এক পাশ পাকা করার কাজ চলছে। অন্য পাশের নিচু সড়কে পানি জমেছে হাটু পরিমাণ। সেই পানিতেই যাওয়া আসা করছে যানবাহনগুলো। এমন ভোগান্তির দৃশ্য চোখে পড়ে বিকেল সাড় ৩টা পর্যন্ত। নগরীর হাওয়াপাড়া মসজিদে পানি ঢুকে পড়ায় জোহরের নামাজ অনুষ্ঠিত হয় দোতলায়। এদিকে নগরের ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই, মদিনামার্কেট, আখালিয়া, সুবিদবাজার, জালালাবাদ, হযরত শাহজালাল (র.) মাজার এলাকার পায়রা আবসিক এলাকা, রাজারগল্লি, বারুতখানা, হাওয়াপাড়া, যতরপুর, ছড়ারপাড়, তালতলাসহ বেশ কিছু এলাকার সড়ক তলিয়ে যায়। এসব এলাকায় সড়কে হাঁটুপানি থাকে বিকেল পর্যন্ত। সড়ক উপচে ড্রেনের ময়লা পানি ঢুকে পড়ে বাসাবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। নগরের জালালাবাদ এলাকার একজন বাসিন্দা বলেন, সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি বাসার সামনে পানি আর পানি। ঘরের কিছু অংশেও পানি ঢুকেছে। জিনিসপত্র নিয়ে টানাটানি করতে হয়। সকালে শিক্ষার্থী, কর্মজীবী ও পেশাজীবী মানুষের কর্মস্থলে যেতে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।