সিলেটে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে হলফনামায় জন্মতারিখ ও শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ নিয়ে অসত্য তথ্য উপস্থাপনের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি এন্টি আওয়ামীলীগ শিবীরে খুব বেশি চর্চিত হচ্ছে। নির্বাচনের শেষ দিকে এসে এ দাবি করেছেন সিলেট মহানগরের নরসিংটিলা এলাকার বাসিন্দা এ কে এম আবু হুরায়রা সাজু নামের এক যুবলীগ কর্মী । এ বিষয়ে তিনি গত ১২ জুন সিলেট সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। এই অভিযোগপত্রে আনোয়ারুজ্জামানরে প্রার্থিতা বাতিলেরও আবেদন করেছন সাজু। জানা গেছে, সোমবার বিকেলে সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়সল কাদেরের কাছে সাজু এ অভিযোগ জমা দেন। মঙ্গলবার দুপুরের পর বিষয়টি জানাজানি হয়। সাজু তার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী তাঁর হলফনামায় জন্মতারিখ ১৯৭০ সালের ১ জুলাই এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ (সম্মান) উল্লেখ করেছেন। কিন্তু তিনি ১৯৮৮ সালে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড কুমিল্লা থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন, যার রেজিস্ট্রেশন নম্বর ৮৪২০৮ এবং শিক্ষাবর্ষ ১৯৮৬-১৯৮৭। রেজিস্ট্রেশন, প্রবেশপত্র ও সনদপত্র অনুযায়ী জন্মতারিখ ১৯৭২ সালের ১ জুলাই। অভিযোগে আরও বলা হয়, পরবর্তী সময়ে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী তাঁর জন্মতারিখ পরিবর্তন করার জন্য কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড বরাবর আবেদন করেছিলেন, যা বোর্ড কর্তৃপক্ষ নামঞ্জুর করে। এ ছাড়া তিনি কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড থেকে ১৯৮৮ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ১৯৯০ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করেই বাংলাদেশ ইয়ুথ প্রোগ্রামের আওতায় যুক্তরাজ্যে যান এবং সেখানে পরিবার নিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি বাংলাদেশে কোনো প্রকার পড়াশোনা কিংবা পরীক্ষায় অংশ নেননি।এছাড়া আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর পাসপোর্টের জন্ম তারিখের সঙ্গে এসএসসির সনদে উল্লেখিত জন্মতারিখে গরমিল আছে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। এ কে এম আবু হুরায়রা সাজু লিখিত অভিযোগে দাবি করেন, আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী হলফনামায় ভুল জন্মতারিখ উল্লেখ করে এবং সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতার জাল সনদ দাখিল করে নির্বাচন বিধিমালা ২০১০-এর বিধি ১৪-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন করেছেন। তিনি দণ্ডবিধি ১৮৬০-এর ধারা ১৮১ অনুযায়ী ফৌজদারি আইনে অপরাধ করেছেন, যার সর্বোচ্চ শাস্তি ৩ বছরের কারাদণ্ডসহ জরিমানা। লিখিত অভিযোগে হলফনামায় অসত্য তথ্য দেওয়া এবং জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়ায় মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর প্রার্থিতা বাতিলের পাশাপাশি ফৌজদারি আইনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়। অভিযোগের বিষয়ে মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন এটি ভুয়া ও মিথ্যা একটি অভিযোগ। এটি উদ্দেশ্যমূলকভাবে করা হয়েছে। হলফনামায় সঠিক তথ্যই দিয়েছি। এ প্রসঙ্গে রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়সল কাদের দৈনিক নবচেতনাকে বলেন, ‘মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের আগে অভিযোগ পেলে তথ্য যাচাই-বাছাই করা যেত। এখন আমাদের আর কিছুই করার নেই।এরকম অভিযোগ করার এখতিয়ার তিনি রাখেন না এটা কেবল কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী সংক্ষুব্ধ প্রার্থীর এখতিয়ার রয়েছে অভিযোগকারীতো কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নন। এ ব্যাপারে একজন আইনজ্ঞকে জিজ্ঞাসা করলে দৈনিক নবচেতনাকে বলেন অভিযোগকারী নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়েরের চেয়ে তিনি আদালতে যেতে পারতেন বা এখনো যেতে পারেন।