পটুয়াখালীর কলাপাড়ার সড়ক গুলো যেন অভিভাবকহীন। ২০-৫০ মিটার পর পর ড্রেজার ব্যবসায়ীরা সড়কের উপর বালুর পাইপ ফেলে দু’পাশে বালুর বস্তা দিয়ে দয়া করে যেন যান চলাচলের সুযোগ দিচ্ছে। এতে ব্যক্তিমালিকানাধীন নীচু জায়গা ভরাটে বালু বিক্রি করে ড্রেজার ব্যবসায়ীরা লাভবান হলেও দূর্ভোগে পড়ছে পথচারী সহ যান চালকরা। এমন চিত্র যত্র তত্র দেখা যাচ্ছে পটুয়াখালীর কলাপাড়া প্রথম শ্রেনীর পৌর শহরে। দীর্ঘদিন ধরে সড়ক আটকে বালু ব্যবসায়ীদের এমন দৌরাত্ম্য চললেও পৌর প্রশাসন রহস্যজনক কারনে নিশ্চুপ। এনিয়ে তাদের দায়সারা গোছের বক্তব্য কেউ অভিযোগ করেনি। পৌরসভার অনুমতি ছাড়া সড়কের উপর পাইপ ফেলে সড়ক আটকে তারা এটা পারে না। শহরের ৩নং ওয়ার্ডের রহমতপুর এলাকা, সমাজকল্যান-রহমতপুর-বাসষ্ট্যান্ড চৌরাস্তা সড়কে এমন অবস্থার যেন অবসান নেই। একটি প্রভাবশালী মহল মাসের পর মাস ধরে স্থাপনা তৈরীতে তাদের ব্যক্তি মালিকানাধীন নিচু জায়গা ভরাট করছে। আর ড্রেজার ব্যবসায়ীরা শহর সংলগ্ন আন্ধারমানিক ও দোন নদীতে বালু বোঝাই জাহাজ রেখে সড়কে পাইপ ফেলে পাইপের মাধ্যমে বালু ফেলছে ১-২ কি.মি. দূরত্বের স্থানে। এক মালিকের জায়গা ভরাট হলে সড়ক থেকে পাইপ না সরিয়ে অপর মালিকের জায়গা ভরাটে যোগাযোগ করছে তারা। ১৫ দিন, ১ মাস বালু সরবরাহ বন্ধ থাকলেও লেবার খরচ সাশ্রয়ে সড়ক থেকে অপসারন করা হচ্ছে না বড় বড় সাইজের এ পাইপ গুলো। যান চলাচল, পথচারীদের দুর্ভোগ তারা আমলেই নিচ্ছেন না। ফলশ্রুতিতে এসব পাইপে ধাক্কা লেগে প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনার কবলে পড়ছে বাই সাইকেল, মোটর সাইকেল, রিকশা, অটো, প্রাইভেট, মাইক্রো চালকরা। মাঝে মধ্যে দু’এক পথচারী হোঁচট খেয়ে আহত হচ্ছে। বেশী দুর্ভোগে পড়ছে প্রসূতি নারী, বৃদ্ধ ও শিশুরা। পৌরশহরের অটো চালক সেন্টু মিয়া বলেন, বালুর পাইপের কারনে রহমতপুর এলাকায় ঠিকমত গাড়ী চালাতে পারছিনা। প্রায়শ:ই যাত্রীরা আহত হচ্ছে। সেদিন এক সন্তান সম্ভবা মহিলা হাসপাতালে যাওয়ার পথে অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। পাইপের উপর দিয়ে গাড়ী ওঠা নামায় তার পেটের বাচ্চা উল্টে যাওয়ায় ভীষন ব্যথায় মহিলা কান্না কাটি শুরু করে। পরে জেনেছি তার জরুরী সিজার করতে হয়েছে। বালু ব্যবসায়ী তৈয়বুর রহমান বলেন, ’যেখানে পাইপ ফেলা আছে সেখানে আর ১ জাহাজ বালু লাগবে। ১০-১২ দিনের মধ্যে জাহাজ এলে বালু ফেলে পাইপ সরানো হবে।’ কলাপাড়া পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা মো: হুমায়ুন কবির বলেন, ’কেউ তো এ বিষয়ে অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ কলাপাড়া পৌর মেয়র বিপুল চন্দ্র হাওলাদার বলেন, ’পৌরসভার অনুমতি ছাড়া সড়ক আটকে বালু ব্যবসায়ীরা এটা করতে পারে না। সড়ক থেকে বালুর পাইপ অপসারন করলে প্রভাবশালীরা এসে তদ্বির শুরু করে।’ কলাপাড়া ইউএনও মো: জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ’বালুর পাইপ ফেলে সড়কে স্বভাবিক চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির এ বিষয়টি এখনও আমার চোখে পড়েনি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।৷