ময়মনসিংহের ত্রিশাল সদর ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাগানে ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার কমিটি বাতিলের জন্য মহামান্য হাইকোর্টের রুল,ত্রিশাল সহকারি জজ আদালতের কারণ দর্শানোর নোটিশ,নিয়োগযোগ্য পদের বিপরীতে মামলা থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন পদে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে মাদ্রাসা কমিটি ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ।নিয়োগ কমিটিতে মহাপরিচালক,মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রতিনিধির চিঠির ৮ নং শর্তে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে যে নিয়োগ যোগ্য পদ ও কমিটি নিয়ে মামলা থাকলে সংশ্লিষ্ট পদে নিয়োগের সুপারিশ করা যাবে না।ডিজির প্রতিনিধি মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক(প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ আবু নঈম কে মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে অবগত করা হলে তিনি কোন কিছু তোয়াক্কা না করে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করেন।এ ছাড়াও ১১ নং শর্তে উল্লেখ আছে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিবসে নিয়োগ দেয়া যাবে না। ১ লা বৈশাখ বাংলা নববর্ষের জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিবসে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে নিয়োগ পরীক্ষা নেয়ায় এ নিয়ে এলাকায় তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে।এলাকায় জনরোষের মধ্যে পুলিশ পাহারায় এবং বহিরাগত ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সূত্র জানায়,বাগান ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার কমিটি বাতিলের জন্য মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করলেও মাদ্রাসার বর্তমান কমিটি তড়িগড়ি করে রমজানের বন্ধের সময় নিয়োগ দিতে পায়তারা করেন।একই সাথে এই নিয়োগের জন্য ইতিমধ্যে একাধিক প্রার্থীর কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নেয়ারও অভিযোগ উঠেছে কমিটির বিরুদ্ধে।এ ব্যাপারে মাদ্রাসার একজন দাতা সদস্য মঞ্জুরুল হক সরকার ত্রিশাল সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।আদালতের এসব আদেশ সত্ত্বেও নিয়োগ সম্পন্ন করতে সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে মাদ্রাসা কমিটি ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ।
মাদ্রাসা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,বাগান ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসায় ১।১২।২২ তারিখে মাসুম বিল্লাহকে সভাপতি করে ১২ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড।এই কমিটিকে চ্যালেঞ্জ করে কমিটি বাতিলের জন্য মহামান্য হাইকোর্টে রিটপিটশন করেন সাবেক অভিভাবক সদস্য শাহীন আলম গং।২৮৭৫/২৩ রিট পিটিশনে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহা পরিচালক সহ নয় জনের বিরুদ্ধে ৪ সপ্তাহের রুল জারি হয়।দাতা সদস্য মঞ্জুরুল হক সরকারের ২৪/২/২৩ ইং তারিখে ত্রিশাল সহকারি জজ আদালতে অন্য প্রকার মোকাদ্দমা ৮৫/২৩ এ বিজ্ঞ আদালত ২১ দিনের কারণ দর্শনের নোটিশ জারি করেন।
৭।১২।২২ তারিখে দৈনিক আজকের বাংলাদেশ পত্রিকায় উপাধ্যক্ষ,অফিস সহকারী,নিরাপত্তা কর্মী, পরিচ্ছন্ন কর্মী,আয়া পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হলে অত্র প্রতিষ্ঠানে বৈধভাবে নিয়োগ প্রাপ্ত নন এমপিওভুক্ত অফিস সহকারী আজারুল ইসলাম, পিয়ন জিয়াউর রহমান ত্রিশাল সহকারি জজ আদালত ৬/২/২৩ ইং তারিখ ৫৩/২৩ অন্য প্রকার মামলা দায়ের করেন।মামলার আরজিতে তারা উল্লেখ করেন,আমরা বৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হলেও আমাদের এমপিও না করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করায় আমরা বিজ্ঞ আদালতের শরণাপন্ন হয়েছি।
আদালতে মামলা হলেও সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রমজান মাসের ছুটির মধ্যেই নিয়োগ সম্পন্ন করতে পায়তারা করছেন।এসব নিয়োগে সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ লক্ষ লক্ষ টাকা উৎকোচ নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরে মামলার তথ্য গোপন করে মহাপরিচালকের প্রতিনিধি মনোনয়ন ও নিয়োগ পরীক্ষা নিতে আবেদন করেছেন সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ।
উল্লেখ্য,মাদ্রাসার অধ্যক্ষ পদ নিয়েও মহামান্য হাইকোর্টে ১৬৩৬৭/১৭ এবং ত্রিশাল সহকারি জজ আদালতে ৩০৩/১৬ মোকদ্দমা চলমান।