যশোরের মণিরামপুরে বোরো ধানে ব্লাস্ট দেখা দিয়েছে। গিট ব্লাস্টের আক্রমণে ভাল আবাদের স্বপ্ন ফিকে হয়েছে উপজেলার মামুদকাটি মাঠের তিন চাষির। বার বার চেষ্টা করে ব্লাস্টের হাত থেকে ধান রক্ষায় কৃষক হিমসিম খেলেও এ বিষয়ে কিছুই জানেন না উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা। সরেজমিন দেখা গেয়ে, মামুদকাটি উত্তরপাড়া মাঠের কৃষক তোফায়েল আহমদের ২৫ কাঠা, ইমান আলীর ৮-১০ কাঠা ও ইসহাক আলীর এক বিঘা জমির ধানের বেশ অংশ ব্লাস্টের আক্রমণে শুকিয়ে চিটে হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের অভিযোগ, বোরো আবাদের সময় ধানে বিভিন্ন পোকার আক্রমণ দেখা দেয়। এসময় কীটনাশক বিক্রেতাদের পরামর্শে ধানের যত্ন নিতে হয়। কৃষি অফিস কোন খোঁজ নেন না। এমনকি কে উপ সহকারী কর্মকর্তা তাঁকেও আমরা চিনি না। উপজেলা কৃষি দপ্তর বলছে, এবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষিপ্তভাবে ব্লাস্টের আক্রমণ দেখা দিয়েছে। আক্রান্ত জমির পরিমান ৭ হেক্টর। যার একটি প্রতিবেদন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পাঠানো হয়েছে। তবে এ তালিকায় মামুদকাটি মাঠের ক্ষতিগ্রস্তদের হিসেব নেই বলে জানা গেছে। উপজেলার কদমবাড়িয়া গ্রামের কৃষক তোফায়েল আহমদ বলেন, তিন বিঘা বোরো আবাদ করেছি। সবটুকুতে ব্লাস্টে আক্রান্ত হয়েছে। তারমধ্যে মামুদকাটি মাঠে দু বিঘা ব্রি-২৮ জাতের ধানে ১০-১২ দিন আগে ব্লাস্ট দেখা দিয়েছে। স্থানীয় কীটনাশকের দোকানে যোগাযোগ করে তিন বার বালাইনাশক ছিটিয়েছি। কোন কাজ হয়নি। খেতের অন্তত ২৫ কাঠার ধান শুকিয়ে চিটা হয়ে গেছে। রঘুনাথপুর মাঠে এক বিঘায় ব্লাসের বালাইনাশক দিয়েছি। সেখানে ধানের কি অবস্থা হয় বলা যাচ্ছে না। তোফায়েল আহমদ বলেন, ব্লক সুপারভাইজার আমাদের খবর রাখে না। এ অঞ্চলের ব্লক সুপারভাইজারকে কোনদিন দেখিনি। একই অভিযোগ রঘুনাথপুর গ্রামের কৃষক আবুল কাশেমের। তিনি বলেন, আমার ধানে কারেন্ট পোকা আক্রমণ করেছে। মাঠের কিছু খেতে গোড়া পঁচা রোগ দেখা দিয়েছে। ধানের রোগ দমনে কোন সময় কৃষি অফিসের কাউকে পাইনে। আমরা নিজেদের মত বালাইনাশক চিটাই। এদিকে ব্লাস্টের আক্রমণের বিষয়ে জানতে চাইলে খেদাপাড়া ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন শুরুতে তাঁর ব্লকে ব্লাস্ট নেই বলে দাবি করেন। পরে এ প্রতিবেদকের মাধ্যমে জানতে পেরে তিনি রোববার সরেজমিন মামুদকাটি মাঠের আক্রান্ত খেত তিনটি দেখতে আসেন। বেল্লাল হোসেন বলেন, কিছুদিন আগে ঘন কুয়াশা পড়েছে। যা আঠাল। কুয়াশা ধানের শীষের নিচে গিটে এসে জমে থাকে। দিনের বেলায় রোদ পড়ার পর জমে থাকা কুয়াশা গিটের গোড়ায় শুকিয়ে শীষ সাদা হয়ে ধান চিটা করে ফেলে। এ ক্ষেত্রে কৃষককে বালাইনাশক ‘ট্রুপার’ স্প্রে করতে হয়। মণিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঋতুরাজ সরকার বলেন, উপজেলায় বোরো আবাদে বিক্ষিপ্তভাবে ব্লাস্ট দেখা দিয়েছে। তার একটি প্রতিবেদন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পাঠানো হয়েছে। মামুদকাটি মাঠের আক্রান্ত খেত দেখতে লোক পাঠাচ্ছি।