ঝালকাঠির রাজাপুরে স্বামীকে জবাই করে হত্যার পর নিজেই ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে পুলিশের কাছে জানালো ঘাতক প্রথম স্ত্রী। রবিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে উপজেলার গালুয়া ইউনিয়নের পুটিয়াখালী সোনালী মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
হত্যার শিকার মোঃ রবিউল আউয়াল তালুকদার (৩৯) পুটিয়াখালী গ্রামের মৃত আব্দুর রহমান তালুকদারের ছেলে।রবিউলের হত্যাকারী প্রথম স্ত্রী সাফিয়া আক্তার শরিয়তপুর জেলার নৈলা থানার মাঝির হাট ইউনিয়নের নসাশন গ্রামের মৃত নজরুল ইসলামের মেয়ে।
পুলিশ জানায়, গোপনে দ্বিতীয় বিবাহ করা ও পারিবারিক কলহের কারণে রবিউল ও তার প্রথম স্ত্রী সাফিয়ার মধ্যে কিছু দিন দরে দাম্পত্য সম্পর্কের অবনতি হয়। এসব ঘটনার জেরে থরে রবিবার রাতের স্ত্রী সাফিয়া খাবারের সাথে স্বামী রবিউলকে ঘুমের ওষুধ খাওয়ায়। রাত দেড়টার দিকে সে ঘূমন্ত স্বামীর হাত-পা ও মুখ বেধে ফেলে। এরপর ধাড়ালো ছুরি দিয়ে ঘুমের মধ্যেই স্বামী রবিউলকে জবাই করে স্ত্রী সাফিয়া হত্যা নিশ্চিত।
এরপরে প্রথম স্ত্রী সাফিয়ার ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশকে নিজের স্বামীকে হত্যার ঘটনা অবহিত করে। খবর পেয়ে রাজাপুর থানা পুলিশ রাত ৩টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে স্বামী রবিউলের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধারসহ ঘাতক স্ত্রী সাফিয়াকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। থানায় পৌছার পর সাফিয়া হত্যার বর্ননা দিয়ে নিজে খুনের দায় স্বীকার করে।
নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা জানায়, ২০০৫ সালে রবিউল ও সাফিয়া প্রেমের সম্পর্কে ঢাকায় বসে বিবাহ করেন। তাদের দুইটি ছেলে সন্তান রয়েছে। বড় ছেলে রাফিন (১৬) নবম শ্রেনীতে পড়ে আর ছোট ছেলে সাকিব (১২) ৬ষ্ঠ শ্রেনীতে পড়ে। রবিউল ইজিবাইক চালিয়ে ছেলেদের লেখাপড়া ও সংসার চালাতো।
ঘটনার দিন রবিবার সন্ধ্যা থেকেই সাফিয়া তার স্বামীর প্রতি খুব ক্ষিপ্ত ছিল এবং বাড়ির সামনে স্বামীর জন্য দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে করতে হাতে থাকা দাও দিয়ে রাস্তার পাশের চারটি কলাগাছও কেটে ফেলে। পরে রাতে ৩টার দিকে এলাকায় পুলিশ এসে তাদের জানায় সাফিয়া তার স্বামী রবিউলকে জবাই করে হত্যা করেছে।
আটক প্রথম স্ত্রী সাফিয়া আক্তার সাংবাদিকদের জানায়, ১৮ বছর পূর্বে মোঃ রবিউল আউয়াল তালুকদারের সাথে তার বিবাহ হয়। হঠাৎ করে দুই মাস আগে কাউকে কিছু না জানিয়ে তার স্বামী রবিউল এক মেয়েকে বিয়ে করে বাড়ীতে নিয়ে আসে। এমন কি তাদের দুটি পুত্র সন্তান থাকা সত্বেও স্বামী রবিউল তার সহায়-সম্পত্তিও নতুন বিয়ে করা স্ত্রীর নামে লিখে দেয়। এ কাজের প্রতিবাদ করায় তুচ্ছ কারন ধরে স্বামী তাকে প্রতিনিয়ত মারধর ও নির্যাতন করায় অতিষ্ট হয়ে তিনি এঘটনা ঘটান।
সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (রাজাপুর সার্কেল) মোঃ মাসুদ রানা জানান, রাতেই নিহতের স্ত্রী সাফিয়াকে আটক করা হয়েছে। হত্যার কারন তদন্ত সাপেক্ষে জানা যাবে।