ব্রাহ্মনবাড়িয়া কসবা উপজেলার কায়েমপুর এলাকার জাজিসার গ্রামের বাসিন্দা কসবা রেলস্টেশন সংলগ্ন চা বিক্রি করেন চল্লিশ বছর বয়সী কালু মিয়া । যিনি কালু ভাই হিসেবে পরিচিত। তাঁর চায়ের সুনাম এতটাই ছড়িয়ে গেছে যে অন্য জেলা উপজেলা থেকেও চা পান করতে আসেন চা-প্রেমিকেরা।
৮ বছর বয়স থাকতে কসবা রেলস্টেশনে তাঁর ওস্তাদ সঙ্গে চা বিক্রি শুরু করেন কালু ভাই। সেই বয়সে বই-খাতা নিয়ে বিদ্যালয়ে যাওয়ার কথা। বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলা করার কথা। কিন্তু দারিদ্র্যের কশাঘাতে সেটি তার বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বেঁচে থাকার চেষ্টায় চা নিয়ে ঘুরতে হচ্ছে কসবা রেলস্টেশনে। অবশেষে চায়ের দোকান দিয়ে চা বিক্রি করে সংসারের হাল ধরতে হয়েছে কিশোর কালু কে।
তিনি জানান, ৩০ বছর ধরে চা বিক্রি করছেন। মাত্র ২০০ টাকা আর কয়েকটি চায়ের কাপ পুঁজি নিয়ে তিনি শুরু করেছিলেন চায়ের ব্যবসা। প্রথমে এক কাপ চা বিক্রি করতেন ১ টাকা । এরপর ২ টাকা , তিন টাকা, পাচ টাকা, এভাবে বাড়তে বাড়তে এখন বিক্রি করেন ১০ টাকায়। তিনি এখন প্রতিদিন ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা করে চা বিক্রি করেন। খরচ বাদে প্রতি মাসে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা আয় হয়।
কালু ভাই বলেন, সকালে দোকান করেন না তিনি। প্রতিদিন দোকান চলে বেলা ২টা থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত। । বড় সসপ্যানে করে মাটির চুলায় একাধারে ৩ ঘণ্টা প্রতিদিন গরম করা হয় আধা মণ গরুর দুধ। চায়ের পুরো কাপে থাকে গরুর দুধ, অল্প পরিমাণে দেওয়া হয় চায়ের লিকার ও চিনি।
কালু তাঁর দুই ছেলে কে চা বিক্রি করেই বড় করেছেন। তবে জীবনের শেষ পর্যন্ত তিনি চা বিক্রি করে যাবেন বলে জানান।