গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে দুর্গা পূজা উপলক্ষে প্রতিমা তৈরীতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। দুর্গোৎসবকে ঘিরে প্রতিমা শিল্পীদের ব্যস্ততা বাড়লেও এবার প্রতিমার সঠিক দাম পাওয়ায় খুশি এই সম্প্রদায়ের কারিগররা। শনিবার সকালে গোবিন্দগঞ্জ শহরের বেশ কয়েকটি মন্দিরে গিয়ে দেখা যায়, এবারের দূর্গোৎসবকে ঘিরে প্রতিমা কারিগররা পার করছেন ব্যস্ত সময়। একেক জন কারিগর ১৫-২০ টি করে প্রতিমার কাজ নিলেও সবগুলোই প্রায় শেষের পথে। তবে লাভ কম বেশি যাই হোক উৎসব কমিটির পছন্দের চাহিদা মত তারা প্রতিমা গড়ছেন আপন হাতের ছোঁয়ায়। পাশাপাশি পূজোর মাটির সরঞ্জাম হাড়ি, কলস, ঘট, সরা, প্রদীপ, ধূপাতি ইত্যাদিও গড়ছেন কারিগররা। উপজেলার পুরাতন বন্দর, বামন কুড়ি, সরকারবাড়ী, কুঠিবাড়ী সার্বজনীন মন্দির, বাসুদেব বাড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় তৈরী হ”েছ এসব মাটির সরঞ্জাম ও দুর্গা প্রতিমা। প্রতিমা তৈরীতে স্বনামখ্যাত গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ফুলবাড়ি ইউনিয়নের মালাকার পাড়া প্রতিমা কারিগর রতন চন্দ্র মালাকার বলেন, ‘বাপ-দাদার পেশা আকড়ে ধরে আছি। মৃৎশিল্পীদের কেউ খোঁজ রাখে না। তবে এবার করোনা না থাকায় কাজের চাপ খুব বেশি এবং দাম পাচ্ছি গত দু বছরের তুলনায় বেশি। প্রতি বছর দুর্গা উৎসব আসলে কয়টা টাকার মূখ দেখি। সঠিক সময়ে প্রতিমা ডেলিভারী দিতে স্ত্রী-সন্তান ও দুই-তিন জন স্থানীয় শ্রমিক নিয়ে প্রতিমা তৈরীতে ব্যস্ত সময় যাচ্ছে।’ প্রতিমার লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, ময়ূর, পেঁচা সবকিছু তৈরী শেষ হয়েছে, তবে মূল প্রতিমা দেবী দুর্গার কাজ এখনও কিছুটা বাকি রয়েছে। এসব প্রতিমাগুলোতে এখনো মাটির প্রলেপ দেয়া শেষ। রং তুলির আচর পরবে রবিবার ২৫ সেপ্টেম্বর মহালয়ার পর। ৫ দিনের এই শারদ উৎসব শুরু হবে আগামী ১লা অক্টোবর শনিবার থেকে। গোবিন্দগঞ্জ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার প্যানেল মেয়র-২ রিমন কুমার তালুকদার জানান, উপজেলায় এবার ১২৬টি পূজা মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হবে শারদীয়া দুর্গোৎসব। ১২৬ মণ্ডপের মধ্যে রয়েছে- গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভা ১৭টি, কামদিয়া ইউনিয়নে ১০টি, কাটাবাড়ি ইউপি ০৪টি, শাখাহার ইউপি ০৬টি,রাজাহার ইউপি ০৪টি, সাপমারা ইউপি ০৭টি,নাকাইহাট ইউপি ০৬টি, দরবস্ত ইউপি ১১টি, তালুককানুপুর ইউপি ১০টি,হরিরামপুর ইউপি ১৫টি, ফুলবাড়ি ইউপি ০৪টি, রাখালবুরুজ ইউপি ০৬টি, গুমানীগঞ্জ ইউপি ০৩টি, কামারদহ ইউনিয়নে ০৪টি, কোচাশহর ইউপি ০৩টি, শিবপুর ইউপি ০৪টি, মহিমাগঞ্জ ইউপি ১১টি, শালমারা ইউনিয়নে ০১টি পূজা হবে। উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি তনয় কুমার বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজা আনন্দঘন পরিবেশে ও শান্তিপূর্ণভাবে স্বা¯’্যবিধি মেনে উদযাপনের লক্ষ্যে সকল প্রকার সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি অধিকতর নিরাপত্তা জোরদারের জন্য প্রত্যেক মণ্ডপে মন্ডপ কমিটির উদ্যোগে অধিক সংখ্যক স্বে”ছাসেবক রাখা হবে। প্রসঙ্গত, এবছর দেবী দুর্গা মর্তে আসছেন গজে অর্থাৎ হাতিতে চড়ে; আর কৈলাশে ফিরবেন নৌকায়। তাই বিশ্ব হবে শান্তিময়, অশুভ শক্তিকে বিনাশ করে উদয় হবে শুভ শক্তির।