১৯৭১ সালে বাংলাদেশে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছিল পাকিস্তান। এই কৃতকর্মের জন্য ওই দেশ ক্ষমা প্রার্থনা করলে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ সহজ হবে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশগ্রহণ নিয়ে মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তৌহিদ হোসেন বলেন, জাপান দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে তাদের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চেয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমি মনে করি পাকিস্তানের কোনও সরকার যদি এই সাহসটুকু দেখাতে পারে, এ কথা বলতে পারে, তাহলে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ অনেক সহজ হয়ে যাবে।
পাকিস্তানের নেতৃত্বের কাছ থেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বক্তব্য এসেছে জানিয়ে তিনি বলেন, কিন্তু আমরা যে সুস্পষ্ট বক্তব্য চাই সেটি আসেনি। আমরা মনে করি পাকিস্তানের কোনও সরকার যদি এই সাহসটুকু দেখায়, আসলে এখানে যে ঘটনাটি ঘটেছিল সেটি উদ্ধৃত করে তারা বলে যে আমরা আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী– এর মধ্যে দোষের কিছু নেই।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের মধ্যে নিউ ইয়র্কে বৈঠক হয়েছে। কিন্তু সেখানে ৭১ প্রসঙ্গে আলোচনা হয়নি। তবে আনুষ্ঠানিক আলোচনার টেবিলে বিষয়টি তোলা হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
মুহাম্মদ ইউনূস ও শাহবাজ শরিফের বৈঠকের বিষয়ে তিনি বলেন, এটি একদম সৌজন্য সাক্ষাৎ ছিল। সৌজন্য সাক্ষাতে আমরা কঠিন বিষয় তুলি না। যখন আলোচনার টেবিলে বসবো তখন আমরা তুলবো। তবে আমরা তাদের এমন ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করিনি যে ৭১-কে বাদ দিয়ে আমরা ভালো সম্পর্ক রাখার চেষ্টা করবো। ভালো সম্পর্ক আমরা রাখার চেষ্টা করবো, তবে ৭১-ও থাকবে।
৫২ বছর ধরে যে বিষয়টি আছে– সেটি কালই সমাধান হবে এটি আমি মনে করি না। কিন্তু আমরা যখন আলোচনার টেবিলে বসবো, তখন এটি থাকতে হবে, বলেন তিনি।
উপদেষ্টা আরও যুক্ত করেন, তবে আমি মনে করি যে এ কারণে সম্পর্ক একদম আটকে রাখা– সেটারও প্রয়োজন নেই। পাকিস্তানের সঙ্গে আমরা সম্পর্ক বজায় রেখে এসেছি। হঠাৎ করে কিছুটা ইচ্ছাকৃতভাবে অনেকটা আমাদেরও স্বার্থের বিরুদ্ধে যায়– এমন ক্ষেত্র তৈরি করা হয়েছিল। যেখানে স্বার্থ আছে, সেখানে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়া উচিত, এটিকে পাশে রেখে। আমাদের যেখানে স্বার্থ আছে সেখানে আমরা সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাবো।