জাতীয় দলের খেলা রেখে সাকিব আল হাসান আইপিএল খেলতে চাওয়ায় হতভম্ব বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। তার মনও খারাপ। তবে সাকিবের এই সিদ্ধান্তে মোটেও বিব্রত নন তিনি।
দলের অবস্থা খারাপ, কারও পারফরম্যান্স সন্তোষজনক নয়, ঘরের মাঠেও হারছে দল- এমন যখন অবস্থা তখন সাকিবের মতো একজন অলরাউন্ডার বাংলাদেশের পরের টেস্ট সিরিজে থাকবেন না, তা মোটেও মানতে পারছেন না নাজমুল। তবে পেশাদারিত্বের জায়গা থেকে অনুযোগ নেই তার।
নাজমুল বলেছেন, ‘এখানে বিব্রত বলাটা ইস্যু না। বিব্রত ঠিক না, মন খারাপ। আমার ব্যক্তিগতভাবে মন খারাপ। মনটা খারাপ কেন? দেখেন একটা খেলোয়াড়ের পেছনে কম বিনিয়োগ করি না। বোর্ড ১০-১৫ বছর ধরে যে বিনিয়োগ করে, এটার সবকিছু আপনাদের জানা আছে কি না তাও জানি না।’
বোর্ড প্রধান যোগ করেছেন, ‘আমরা টেস্ট ম্যাচ হেরেছি আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও ভারতের সঙ্গে। আমরা ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে নিজেদের মাটিতে পর পর দুই টেস্টে হারলাম । এরপরে কেউ যদি বলে আমি পরবর্তী টেস্টটা না খেলি! আমার ধারণা ছিল সবাই উঠে-পড়ে লাগবে যে টেস্টটা আমাদের জিততেই হবে। সেই জায়গায় কেউ যদি মনে করে এটা খেলবে না, অন্য একটা ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলবে… এরপর আর কিছু বলার থাকে না। এটা মন খারাপ করার মতোই ব্যাপার। এখন আমাদের মন খুব পরিষ্কার, কাউকে আমরা আর জোর করে রাখবো না।’
নাজমুল হাসানের ভাবনা, যে কোনও ক্রিকেটারের নিজেদের সেরা সময়ে দেশের জন্য কিছু করার তাড়না থাকতে হবে। খারাপ সময়ে বোর্ড যেভাবে তাদের আগলে রেখেছিল, ভালো সময়ে বোর্ড তাদের থেকে একই প্রতিদান প্রত্যাশা করে। বোর্ড সভাপতির ভাষ্য, ‘আমার কাছে খারাপ লেগেছে এই সময়টায়, যে সময়টায় সমস্ত খেলোয়াড়দের কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি আশা করেছিলাম, দলকে সহযোগিতা করবে, আমাদের আশ্বস্ত করবে, এসে বলবে কোনও অসুবিধা নেই পাপন ভাই, আমরা সামনের ম্যাচগুলো জিতবো। এটা তো একটু কষ্ট লেগেছে। হতভম্ব হয়েছি, না হওয়ার কিছু নেই। ঠিক আছে, এটা হতেই পারে। আমি এটা নিয়ে এত হুলস্থুল করতে চাই না।’
উদাহরণ দিতে গিয়ে নাজমুল হাসান আরও যোগ করেন, ‘একটা জিনিস খেয়াল করেন, আজ আমাদের যে সব খেলোয়াড় বিশ্বের নামকরা, দেশের সেরা খেলোয়াড়; ওদের প্রথম ১০ বছর গড় কী ছিল? ওদের ১০ বছরের গড়টা দেখে নেই। আমরা তো তখন তাদের বাদ দেইনি। প্রথম ৬ বছরে ১২-১৫ গড়, আমরা কি তখন তাদের বাদ দিয়ে দিয়েছি? এরপরেই তো ওদের সুযোগ দিয়েছি। ওই সুযোগগুলো দেওয়ার কারণে আজ তারা এ জায়গায় এসেছে। যে সময়টায় তারা দেশের জন্য কিছু করবে সে সময়টায় যদি… মানে এটা তাদের ইচ্ছে। আমরা এখন তাদের জন্য সময় নষ্ট করতে চাই না। একটা জিনিস দেখেছি জোর করে খেলিয়ে লাভ হয় না। বিশেষ করে টেস্টে, এটা মানসিক খেলা। শুধু নামেমাত্র খেলা, তা হবে না।’